সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তা তৈরির জন্য জমি দান করতে প্রস্তুত নবদ্বীপ বাবলারি পঞ্চায়েতের নিতাইনগরের বাসিন্দারা। কম সময়ে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছনোর জন্যই তাঁদের এই ত্যাগ। ইতিমধ্যে দান করা জমিতে রাস্তা তৈরির জন্য পঞ্চায়েতে গণ স্বাক্ষরিত আবেদন করেছেন তাঁরা।
নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালটির একটি বড় অংশই নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। সেটি বাবলারি বাস স্ট্যান্ড হয়ে নিতাইনগরে যে ঢালাই রাস্তাটি গিয়েছে তার থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে। সেখান থেকে মিনিট তিনেকের মধ্যে হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে ঘুরপথে হাসপাতালে যেতে অনেকটাই বেশি সময় লাগছে। যানজটেও পড়তে হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবি, রাস্তাটি তৈরি হলে শুধুমাত্র বাবলারি নিতাইনগরের বাসিন্দারাই নন, বাবলারির বালির মাঠ, বিষ্ণুপুর এবং নবদ্বীপের দক্ষিণ অঞ্চলের বৃহৎ অংশের মানুষের সুবিধা হবে। বিশেষ করে কুটিরপাড়া, মালঞ্চপাড়া, ওলাদেবীতলা, সরকারপাড়া, স্টেশন রোড সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে সহজেই হাসপাতালে যেতে পারবেন। নদীয়ার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট, হেমায়েতপুর, উত্তর ও দক্ষিণ শ্রীরামপুর, বিদ্যানগর, পারুলিয়া, লক্ষ্মীপুর, বেলের হল্ট থেকে মাধাইপুর বাবলারি হয়ে নিতাইনগরের রাস্তা দিয়ে সহজে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পৌঁছে যাবেন অনেকেই। নিতাইনগরের বাসিন্দা গৃহবধূ, গৌরপ্রিয়া দেবনাথ, কুঞ্জলতা সরকার, হাসি সরকাররা বলেন, হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংটি পঞ্চায়েত এলাকার সীমানার কাছাকাছি চলে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি এখানে নতুন রাস্তা তৈরি হবে। রাস্তাটি হলে কম সময়ের মধ্যে সহজেই হাসপাতালে যেতে পারব। এমনকী এলাকার অর্থনৈতিক হাল ফিরবে।
নবদ্বীপ বাঁধ রোডের প্রবীণ বাসিন্দা ভক্ত সাহা বলেন, এখান থেকে হাসপাতালে যেতে হয় প্রায় দেড়-দু’ কিলোমিটার ঘুরপথে। কপালিপাড়া, প্রতাপনগর, পালবাজার হয়ে যেতে গিয়ে অনেক সময়ে যানজটে পড়তে হয়। কিন্তু নিতাইনগর থেকে যদি নতুন রাস্তাটি তৈরি হয়, তবে যানজট এড়িয়ে হাসপাতালে চটজলদি পৌঁছনো যাবে। যদি কোনও রোগীকে নবদ্বীপ হাসপাতাল থেকে কৃষ্ণনগর, কল্যাণী বা কালনা, বর্ধমান হাসপাতালে রেফার করা হয়, তবে এই রাস্তা দিয়ে সহজেই কালনা–কাটোয়া রোড বা নবদ্বীপ–কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক ধরা যাবে। বাবলারি পঞ্চায়েতের সদস্য কৃষ্ণরঞ্জন শর্মা বলেন, পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার পর থেকে আমাদের চিন্তাভাবনা ছিল প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা তৈরি করার। ইতিমধ্যে রাস্তা তৈরির জন্য জমিও দিতে চেয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। বিষয়টি নিয়ে আমরা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। কীভাবে এই রাস্তাটি করা যায় তা নিয়ে পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গেও কথা হয়েছে। প্রধানের মাধ্যমে বিডিওকেও জানানো হয়েছে।
বাবলারি পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ণ কর্মকার বলেন, আমরা বিডিও সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে ওই জায়গাটি অনেকটাই নিচু। সে কারণে মাটি ফেলে উচু করে তবে রাস্তাটি তৈরি করতে হবে। তা না হলে বর্ষার সময় জল জমে যাবে। উল্লেখ্য, নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে জরুরি বিভাগ, শিশু রোগ বিভাগ, পুরুষ ও মহিলা মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল বিভাগ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই নতুন বিল্ডিং একদম বাবলারির শেষ প্রান্তে। ফলে নতুন রাস্তা তৈরি হলে হাসপাতালে সহজে পৌঁছে যাওয়া যাবে। -নিজস্ব চিত্র