সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ার চাণ্ডুলি ও ঘোড়ানাশ গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ব্রাহ্মণী নদী। সারা বছর নদীতে খুব একটা জল থাকে না। তবে বর্ষা এলেই নদী তার স্বমূর্তি ধারণ করে। আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াত নদীর উপর তৈরি অস্থায়ী সেতু দিয়ে। চাণ্ডুলি গ্রামের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি, ব্রাহ্মণী নদীর উপর স্থায়ী একটি সেতু তৈরি করা হোক। এখনও স্থায়ী সেতু তৈরি না হওয়ায় বর্ষায় ঘুরপথে যেতে হয় বাসিন্দাদের। অস্থায়ী সেতুর রাস্তাও বেহাল। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। 
কাটোয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গৌতম ঘোষাল বলেন, সেতু নিয়ে প্রশাসনের সব বিভাগকেই জানিয়েছি। এখনই স্থায়ী সেতু করা যাচ্ছে না। আশা করছি একদিন বাসিন্দাদের দাবি পূরণ হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-২ ব্লকের শ্রীবাটি পঞ্চায়েতের চাণ্ডুলি গ্রামের শেষ প্রান্ত দিয়ে বয়ে গিয়েছে ব্রাহ্মণী নদী। নদীর অপর পাড়ে জগদানন্দপুর অঞ্চলের ঘোড়ানাশ, মুস্থলী, আমডাঙা সহ বহু গ্রাম অবস্থিত। চাণ্ডুলির অনেক পড়ুয়া ঘোড়ানাশের স্কুলে পড়াশুনা করতে যায় নদী পেরিয়ে। কয়েক বছর আগে নদীতে কয়েকটি হিউম পাইপ দিয়ে ছোট একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করে দেয় পঞ্চায়েত। কিন্তু বর্ষা এলে ওই ছোট সেতু জলের তলায় চলে যায়। বাসিন্দাদের তখন পানশি নৌকাই একমাত্র ভরসা। পড়ুয়াদের তখন স্কুলে যাওয়া শিকেয় ওঠে। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। শুধু তাই নয়, ঘোড়ানাশ, মুস্থলী,আমডাঙা এলাকার একটা বড় অংশ তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে। চাণ্ডুলি গ্রামেরও অনেকের তাঁত শিল্প রয়েছে। তাই ওই সেতুই ভরসা তাঁত শিল্পীদের। কিন্তু বর্ষায় খুবই অসুবিধা হয়। সেতু না হলে এইসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাটোয়া, মালডাঙা রোড ধরে দাঁইহাট মোড় দিয়ে আবার এসটিকেকে রোড ধরে প্রায় ১২ কিমি ঘুরপথে যেতে হয়। শুধু তাই নয়, চাণ্ডুলি গ্রামের বহু চাষিকে ব্রাহ্মণী নদী পেরিয়ে যেতে হয়। তাই নদীর উপর বাসিন্দারা চাইছেন, পাকাপাকিভাবে  প্রায় ৭৫ মিটারের একটি সেতু তৈরি করা হোক। 
চাণ্ডুলি গ্রামের বাসিন্দা মানস মণ্ডল, সীমন্ত শিকদার বলেন, আমরা দীর্ঘবছর ধরে চাইছি ব্রাহ্মণী নদীর উপর একটি সেতু তৈরি করা হোক। প্রশাসনের কাছে বহুবার আর্জি জানিয়েও কাজ হয়নি। বর্ষাকালে এলাকা ব্রাহ্মণী নদীর জলে প্লাবিত হয়। তখন এখানে ছোট হিউম পাইপ দিয়ে করা ছোট সেতুটিও ডুবে যায়। সেতু তৈরি হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থায়ী হবে। পাশাপাশি কৃষিপ্রধান এলাকায় আমাদের খুব উপকার হবে। তাঁত শিল্পীরাও তাঁদের তাঁতের শাড়ি নিয়ে গ্রামগুলিতে যেতে পারবেন। 
বর্তমানে নদীতে জল নেই। তার উপরেই আরও মাটি দিয়ে সেতুর রাস্তা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের আরও দাবি, বর্ষায় নদীর জল উপচে আশপাশের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়। এবারও বাঁধমুড়ো, গাঁফুলিয়া সহ বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। তাই অবিলম্বে নদীর নাব্যতাও বাড়ানো প্রয়োজন।  -নিজস্ব চিত্র