সংবাদদাতা, ঘাটাল: গ্রামপঞ্চায়েত এবং শাসক দলের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও গ্রামীণ রাস্তার উপর দিয়ে মাটি ভর্তি ট্রাক্টর জোর করে চালানো হচ্ছে। ফলে দাসপুর-২ ব্লকের খানজাপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার গ্রামীণ রাস্তা বেহাল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত রাস্তার উপর দিয়ে সারিসারি মাটি ভর্তি ট্রাক্টর যাতায়াতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষও। তৃণমূলের খানজাপুর অঞ্চল সভাপতি জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার গোপালপুরের (পশ্চিম) একটি পুকুর থেকে কয়েক দিন ধরে মাটি কেটে ট্রাক্টরে করে গ্রামীণ পিচ রাস্তাগুলির উপর দিয়ে বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা বার বার আপত্তি করেছি। কিন্তু মাটি ব্যবসায়ীরা আমাদের আপত্তিতে কর্ণপাত করছেন না। বিষয়টি আমরা প্রশাসনে জানিয়েছি। কিছুদিন আগে তৈরি হওয়া পিচ রাস্তার উপর দিয়ে ট্রাক্টরে করে মাটি বহনের তীব্র বিরোধী খানজাপুর গ্রামপঞ্চায়েত প্রশাসন। প্রধান অনিতা পাত্র বলেন, ‘মাটি বহন নিয়ে গ্রামপঞ্চায়েত কোনও অনুমতি দেয়নি। তবুও মাটি ব্যবসায়ীরা জোর করে ওই কাজ করছেন।’  
ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তার বেলিয়াঘাটা থেকে একটি পিচ রাস্তা খানজাপুর গ্রামপঞ্চায়েত পর্যন্ত গিয়েছে। ওই রাস্তাটি এক-দেড় বছর আগে মোরাম থেকে পিচে রূপান্তরিত হয়েছে। গ্রামপঞ্চায়েত থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই রাস্তার উপর দিয়ে মাটিবাহী কোনও গাড়িকে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। কারণ, পিচ বা ঢালাই রাস্তার উপর দিয়ে মাটিবাহী গাড়ি যাতায়াত করতে দিলে এক এক দিনে ১০-১২টি করে ট্রাক্টর বেশ কয়েক বার করে যাতায়াত করবে। তার ফলে রাস্তার অবস্থাও যেমন বেহাল হবে, সেই সঙ্গে রাস্তার উপর ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ে রাস্তায় প্রচুর ধুলো হয়। বৃষ্টি হলে তা কাদায় পরিণত হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
গত বছর এই মাটি বহনের কারণেই ঘাটাল মহকুমায় মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকটি রাস্তা কাদামাখা হয়ে যায়। সেই কাদায় পিছলে পড়ে বেশ কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জখম হন। জেলাশাসক তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশাসনকে দিয়ে মহকুমার সমস্ত রাস্তার উপর থেকে মাটি পরিষ্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মহকুমার সমস্ত রাস্তা দিয়ে মাটি বোঝাই গাড়ি যাতায়াত নিষিদ্ধ করেছিলেন। প্রধান বলেন, ওই সমস্ত কারণেই আমরা রাস্তার উপর দিয়ে মাটি বোঝাই গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিইনি।
তৃণমূলের দাসপুর-২ ব্লকের এক নেতা আক্ষেপের সঙ্গে জানান, গোপালপুর থেকে মাটি বহনের কাজটি করছেন দাসপুর-২ গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান ইসলাম আলি খান। তিনি মাটি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ইসলাম দলের কোনও নির্দেশ মানছেন না। এদিকে ইসলাম বলেন, খানজাপুরের প্রধানের এনওসি নিয়েই মাটি বহন করা হচ্ছে। অনিতাদেবী বলেন, মাটি বহনের জন্য আমরা কাউকে অনুমতি দিইনি।