যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার দুপুরে মেচেদার বাড়বহলা গ্রামের বাসিন্দা সানোয়ারা খানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জেসমিনারা বিবি প্রসবযন্ত্রণা অনুভব করেন। ওই দিন দুপুর ৩টে নাগাদ পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষার পর জানিয়ে দেন, সিজার করার কোনও প্রয়োজন নেই। নর্মাল ডেলিভারিতে সন্তান জন্ম নেবে। রবিবার দুপুর থেকে গৃহবধূ প্রসবযন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন। ওই দিন রাতে যন্ত্রণা তীব্র হলে পরিবারের সদস্যরা নার্সদের বিষয়টি জানান। বারবার নার্সদের সমস্যার কথা জানানো হলেও তাঁরা কোনও গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। মাঝরাতে নার্সরা একবার ওই গৃহবধূকে অপারেশন থিয়েটারেও ঢোকান। এরপর পরিবারের লোকেদের জানানো হয়, এখন কোনও সমস্যা নেই। সকালে নর্মাল ডেলিভারি হয়ে যাবে। ওই রাতে সমস্যার বিষয়টি চিকিৎসককে নার্সরা জানাননি বলে অভিযোগ। ভোররাতে গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর নার্সরা চিকিৎসককে খবর দেন। ভোর ৫টা নাগাদ খবর পেয়েই চিকিৎসক এসে পরীক্ষার পর দ্রুত সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। সিজার করার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই সদ্যোজাত পুত্রসন্তানটি মারা যায়।
অভিযোগ, সকাল ৯টার পর রোগীর পরিবারকে সদ্যোজাতের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর সকাল ১১টা নাগাদ রোগীর পরিজনরা হাসপাতালে ভিড় জমান। নার্সদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। হাসপাতালের একটি দরজা, কাচের জানালা সহ অন্যান্য সামগ্রী ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার বড় পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। রোগী পরিবারের সদস্যরা থানায় অভিযোগ না জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
হাসপাতালের এক নার্স বলেন, নিয়ম মেনে সমস্ত রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতালের সমস্ত কর্মী মর্মাহত। তা সত্ত্বেও যেভাবে আমাদের হেনস্তা করা হয়েছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত।
সানোয়ারা খান বলেন, চিকিৎসক ১৮তারিখ ডেলিভারির ডেট দিয়েছিলেন। স্ত্রীর প্রসবযন্ত্রণা শুরু হওয়ায় ১৭তারিখ হাসপাতালে ভর্তি করি। ১৮তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রসব না হওয়ায় আমরা বারবার সিজার করার কথা বলি। কিন্তু, সবসময় নর্মাল ডেলিভারি হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। রবিবার রাতে সমস্যা বাড়লে বারবার নার্সদের সেকথা বলা হলেও কোনও লাভ হয়নি। মাঝরাতে একবার ওটিতে নিয়ে গিয়ে ফের বেডে ছেড়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, কোনও সমস্যা নেই। ওই সময় চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার গাফিলতি ও নার্সদের গাফিলতিতে আমার সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত গৃহবধূর বাবা ফজলে হক বলেন, নার্সদের বারবার সমস্যার কথা বলা হলেও তারা কেউই গুরুত্ব দেয়নি। মেয়ে যখন বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, তখন নার্সরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বারবার তাঁদের কাছে সমস্যার কথা জানালেও কোনও লাভ হয়নি। নার্সদের গাফিলতিতে আমার সদ্যোজাত নাতির মৃত্যু হয়েছে। আমি অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।
পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ রজক বলেন, আমরা এই সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।