শিবাজী চক্রবর্তী, কলকাতা:

ইস্ট বেঙ্গল-২                   :                   কেরল ব্লাস্টার্স-১
(বিষ্ণু, হিজাজি)                                               (দানিশ)

‘মাছের রাজা ইলিশ আর খেলাতে ফুটবল...সেই খেলাতে সেরা আমার ইস্ট বেঙ্গল।’ শেষ বাঁশি বাজতেই গমগমিয়ে ইস্ট বেঙ্গলের গান বাজল যুবভারতীতে। হবে না-ই বা কেন? হারের অন্ধকার কাটিয়ে জয়ের সরণিতে লাল-হলুদ ব্রিগেড। শুক্রবার যুবভারতীতে কেরল ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে নতুন বছরে প্রথম জয় ছিনিয়ে নিল অস্কার বাহিনী। ১৭ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে একাদশ স্থানেই রইলেন ক্লেটনরা। অন্যদিকে ১৮ ম্যাচে কেরলের পয়েন্ট ২১।
হারের হ্যাটট্রিকের পর শুক্রবার ঘরের মাঠে প্রত্যাবর্তনে মরিয়া ছিল অস্কার-ব্রিগেড। শুরু থেকেই সেলিস, ক্লেটন আর দিয়ামানতাকোসকে মাঠে নামান স্প্যানিশ কোচ। প্রথমার্ধে কয়েকটা স্পেলে আক্রমণের ঝড় তুলল এই ত্রিফলা। ১৪ মিনিটে নাওরেম মহেশের পাস ধরে জোরালো শট নেন দিয়ামানতাকোস। দক্ষতার শীর্ষে উঠে তা সেভ করেন কেরলের গোলরক্ষক। পরের মিনিটেই লক্ষ্যভেদের সোনার সুযোগ পা ছাড়া করলেন গ্রিসের স্ট্রাইকার। এক্ষেত্রে ক্লেটনের ফ্রি-কিক শচীনের হাত থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসে। সেলিসের সাজিয়ে দেওয়া বল গোলে ঠেলতে ব্যর্থ দিয়ামানতাকোস। তবে ১৯ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত লিড পায় ইস্ট বেঙ্গল। মাঝমাঠ থেকে প্রায় ৪০ গজের লম্বা পাস বাড়ান ক্লেটন। জায়গায় ছিলেন না কেরলের ডিফেন্ডার ফ্রেডি। গতিতে তাঁকে পিছনে ফেলে আগুয়ান শচীনকে পরাস্ত করেন বিষ্ণু (১-০)। চলতি আইএসএলে এটি কেরালাইট ফুটবলারের চতুর্থ গোল। ক্রমশই ধারালো হচ্ছেন বিনো জর্জের খুঁজে আনা এই মুক্তো। এর সাত মিনিট পরেই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারান ক্লেটন। অরক্ষিত ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারকে পাসটি সাজিয়ে দেন দিয়ামানতাকোস। সবাইকে অবাক করে এবারও জাল কাঁপাতে পারলেন না ক্লেটন। ৩৭ মিনিটে ডান পায়ে কামান দাগেন সেলিস। প্রায় ২৫ গজের গোলার মতো শট পোস্টে প্রতিহত হয়। 
এক গোলের লিড কখনওই নিরাপদ নয়। বিরতির পর কেরল আক্রমণ বাড়াতেই চাপে পড়ল ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্স। ৫৭ মিনিটে নোয়ার বাঁক খাওয়ানো সেন্টার থেকে ফ্রেডির হেড বাইরে যায়। ক্লেটনদের শুরুর বাঁধুনি তখন উধাও। বরং ম্যাচের উপর জাঁকিয়ে বসল কেরল। ৭১ মিনিটে একার কৃতিত্বে বিপক্ষ গোলমুখে পৌঁছে যান বিষ্ণু। কিন্তু স্বার্থপরের মতো গোলের নেশায় শচীনের গায়ে মেরে বসলেন। যাই হোক, ৭২ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সন্ধান পায় লাল-হলুদ ব্রিগেড। নাওরেম মহেশের কর্নার থেকে ড্রপ হেডে জাল কাঁপালেন হিজাজি (২-০)। চলতি মরশুমে তাঁর বেশ কিছু ভুলে ডুবেছে ইস্ট বেঙ্গল। এদিন লক্ষ্যভেদ করে কিছুটা পাপস্খলন করলেন জর্ডনের ডিফেন্ডার। তবে দুর্ভোগ বাকি ছিল এরপরেও। ৮৩ মিনিটে কর্নার পায় কেরল ব্লাস্টার্স। লাল-হলুদ রক্ষণের ভুলে দুরন্ত শটে ব্যবধান কমান দানিশ ফারুখ (২-১)। এদিকে, কার্ড সমস্যায় পরের ম্যাচে নেই জিকসন। 
ইস্ট বেঙ্গল: গিল, জিকসন (সায়ন), লালচুংনুঙ্গা, হিজাজি, নিশু, শৌভিক, মহেশ, বিষ্ণু (মার্ক), ক্লেটন, সেলিস ও দিয়ামানতাকোস (হেক্টর)।