উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য, ব্যবসায় গোলোযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
‘নগরকীর্তন’ নিয়ে নাগরিক মনে ইতিমধ্যেই একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে...
যে কোনও ছবির ক্ষেত্রেই সেটা একটা অ্যাডভান্টেজ। মানুষ জানে ছবিটা চারটে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু কেন পেয়েছে সেটা নিয়ে মনে একটা সংশয় থেকেই যায়। আবার একটা আগ্রহও তৈরি হচ্ছে ছবিটা দর্শক কীভাবে নেবেন, সেটা দেখার জন্য। সেক্ষেত্রে যতই উত্তেজনা থাকুক না কেন, দেখার পর মানুষের রায়টাই আসল পুরস্কার। সেটার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। কেন পুরস্কারটা পেলেন বলে মনে হয়?
(হেসে) আমি এখনও ঠিক জানি না। সামগ্রিকভাবে ছবিটা যে সমাদর পেয়েছে তাতে বোঝা গিয়েছে ‘নগরকীর্তন’ শুধুমাত্র ভালো ছবি তা নয়, প্রয়োজনীয় একটা ছবি। যে মানুষগুলোকে নিয়ে ছবি, যাঁদের নিয়ে গল্প, তাঁদের জন্য এই পুরস্কার। কেন পেলাম, সেটা মানুষ আমার কাজের মাধ্যমে জানুক। দর্শকই বলুক আমি এই পুরস্কারের সত্যিই যোগ্য কি না।
তৃতীয় লিঙ্গদের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি?
‘নগরকীর্তন’ অনাবিল প্রেমের ছবি, ভালোবাসার ছবি। বলা হয়, খুব সাহসী একটা ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক। তা তো নয়। ভলোবাসা তো এরকমই হওয়ার কথা। তার কোনও ধর্ম হয় না, জাত হয় না, বিভেদ হয় না। সেই কারণে ছবিটা কোন লিঙ্গের ছবি সেটা বিচার্য নয়। বিভাজন তৈরি করিআমরা। কোনও একপ্রকার ভালোবাসাকে আমরা অবলীলায় অস্বাভাবিক বলে দাগিয়ে দিই।
আপনার অভিনীত চরিত্র পুঁটিকে নিয়ে নিজের কী বিশ্লেষণ?
অভিনয়ের প্রস্তুতিটা কেমন ছিল?
ছবিটা শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালে। নানা কারণে শ্যুটিং পিছিয়ে যায়। পরের বছর যখন শ্যুটিং শুরু হল তখন আমার বয়স সতেরো। জানতাম অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি হতে হবে। নানা জায়গায় গিয়ে রিয়েল ট্রান্সজেন্ডারদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁদের ভাবনা চিন্তা নিয়ে আমি অনেকদিন ধরে স্টাডি করেছি, মিশেছি। বাড়িতে আমার মা, বান্ধবী সুরঙ্গনাকে আমি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতাম। তাঁরা কীভাবে বসছে, উঠছে, চলছে, হাঁটছে, খাচ্ছে সব। কৌশিককাকু (গঙ্গোপাধ্যায়) যেভাবে চিত্রনাট্য লেখেন একজন অভিনেতার কাছে সেটাও প্রাপ্তি। আমার সহ অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। এমন দুজনের তত্ত্বাবধানে কাজ করাটাও খুব বড় পাওনা।
এ ব্যাপারে বাবার (কৌশিক সেন) কাছে কোনও পরামর্শ নিয়েছেন?
না। গোটা বিষয়টার মধ্যে বাবা একদমই নাক গলাননি। তবে খুব অধীর আগ্রহে শুনেছেন শ্যুটিংয়ের গল্প। আমার নিজের কখনও মনে হয়নি বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি। বাবাও অযথা কৌতূহল প্রকাশ করেননি।
আপনার পুরস্কার প্রাপ্তির খবরে বাবা-মায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
বাবা-মায়ের সেই খুশির মুহূর্তটা এখন বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়। তাঁদের মুখে অন্যরকম একটা আনন্দ দেখেছিলাম, যা আমার ব্যাপারে আগে কখনও দেখিনি। ওঁদের চেয়ে বেশি খুশি বোধহয় আর কেউ হননি।
আর কাজল? সেই সময়ে তো আপনি ওঁর সঙ্গে ‘হেলিকপ্টার ইলা’র শ্যুটিং করছিলেন।
উনি শুনে অসম্ভব খুশি হয়েছিলেন। পুরস্কার পাওয়ার সময় উনি আমার ফার্স্ট লুকটা দেখেন। চমকে গিয়েছিলেন।
যে বয়সে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেলেন, তাতে আপনার প্রতি ইন্ডাস্ট্রির, মানুষের প্রত্যাশা স্বাভাবিকভাবে বাড়তেই থাকবে। তার প্রস্তুতি কীভাবে শুরু করেছেন?
আমি শুধু এইটুকুই জানি আগামী দশ-পনেরো বছরে যদি আরও ভালো কাজ না করতে পারি, তাহলে আজকের এই পুরস্কারটার কথা মানুষ ভুলে যাবে। তাই প্রথমেই পুরস্কারের কথাটা মাথা থেকে দূর করতে হবে।
নতুন কাজের খবর?
এই কিছুদিন আগে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘দেরাজ’ নামে একটা ওয়েব সিরিজ করলাম। মুক্তি পাবে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি। এখানে সুরঙ্গনা, পায়েল, কাঞ্চন মল্লিক সহ অনেকে আছেন। এছাড়াও সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের একটা ছবি করছি।
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়