উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য, ব্যবসায় গোলোযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
হাঁসখালি থানার মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল পেশায় বাসের খালাসি। বাড়িতে বৃদ্ধা মা ভানু মণ্ডলকে নিয়ে থাকত সে। বিধায়ক খুনের ঘটনায় শনিবার রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। মঙ্গলবার সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ সুজিতের বাড়িতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মানসিক রোগগ্রস্ত বলা হলেও সুজিত বিধায়ককে খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এরই প্রতিবাদে ধৃতের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সে সময় তার বাড়ি থেকে মেলে পাঁচটি সিম কার্ড, বিজেপির দলীয় কিছু বই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি, একটি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক ফোন নম্বর লেখা একটি ডায়েরি ও একটি ধারালো ভোজালি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সুজিত গোপনে বিধায়কে খুনের পরিকল্পনা অনেক আগের থেকেই করেছিল।
সুজিতের বাড়ি ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিস বাহিনী। রানাঘাটের এসডিপিও লাল্টু হালদারের উপস্থিতিতে ধৃতের বাড়ি থেকে পাওয়া ডায়েরি, সিম কার্ড, মোবাইল ফোন সহ যাবতীয় সামগ্রী হেফাজতে নেয় পুলিস। ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকায় নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
পুলিস জানিয়েছে, এদিন ধৃতের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযুক্তর বাড়িতে টিনের একটি ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাশে থাকা অন্য একটি পাকা ঘরে চলে ভাঙচুর। সেই সঙ্গে ওই বাড়ির উঠোনে থাকা একটি সিমেন্টের স্লাব দেখেও গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। ওই কংক্রিটের স্লাবের নীচেও কোনও আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারে সে এই আশঙ্কায় পরে গ্রামবাসীরা সেটিও ভাঙার চেষ্টা করে।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রীতম বিশ্বাস বলেন, আমরা বিধায়কের খুনের ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। সুজিত মণ্ডল বিধায়ককে খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সুজিতকে দেখে বোঝার উপায় নেই, সে এমন কাজ করতে পারে। ওকে আমরা মানসিক অসুস্থ বলেই জানতাম। কিন্তু আজ গ্রামবাসীরা এককাট্টা হয়ে যখন ওর বাড়ি ভাঙচুর করে, তখন ওর বাড়ি থেকে সমস্ত কিছু উদ্ধার হয়। সুজিত বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিল। তা এতদিন প্রকাশ্যে না এলেও আজ পরিষ্কার হল বিষয়টি।
যদিও এপ্রসঙ্গে ধৃত সুজিত মণ্ডলের মা ভানুদেবী ছেলের গ্রেপ্তারের পর জানিয়েছিলেন, সুজিত বিজেপির সমর্থক ছিল। বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিও রাখত। কিন্তু ছেলে খুনের সঙ্গে যুক্ত, তা মেনে নিতে চাইছেন না সুজিতের মা ভানুদেবী।
তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই অভিযোগ করা হয়, বিজেপি এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। মঙ্গলবার সকালে ধৃতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিজেপির দলীয় সংবিধান, ফোন নম্বরের ডায়েরি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি কার্যত খুনের ঘটনায় বিজেপির যোগের বিষয়টিকে আরও জোরালো করল বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি।
যদিও এপ্রসঙ্গে নদীয়া জেলা দক্ষিণ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অশোক চক্রবর্তী বলেন, সুজিত মণ্ডল আমাদের দলের সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। আমাদের দলে আসতে হলে কাগজে-কলমে আসতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর ছবি, বিজেপির কিছু বই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে, মানে এটা নয় যে, ধৃত আমাদের দলের কর্মী।