শুক্রের আহ্নিক গতি অন্য গ্রহগুলির মতো নয়। সৌর জগতে কেন ব্যতিক্রমী এই গ্রহ জানালেন স্বরূপ কুলভী
বাংলা নববর্ষের দিন জানব বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসার কথা। সেই ইংরেজ আমলে রবীন্দ্রনাথের পরিবারের সদস্যরা কীভাবে এই ভাষার জন্য লড়াই করেছিলেন, তুলে ধরা হল তারই টুকরো কিছু স্মৃতি।
ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে হাতের কাজ করা শেখাচ্ছেন ডিজাইনার বিদিশা বসু। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন কমলিনী চক্রবর্তী।
ঘুম! পড়তে বসলেই ঘুম পেয়ে যায়। এর জন্য বাবা-মায়ের কাছে কম বকুনি খেতে হয় না। বকুনি খেয়েও কিন্তু অভ্যেসটা পাল্টায় না। আসলে ঘুমের অভ্যেসটা আমাদের জন্মাবার সঙ্গেই তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হল, আমরা কেন ঘুমোই? জীবনে কি ঘুম অত্যন্ত জরুরি?
আমরা গ্রামের বাড়ি যাব। ঝুকুর জন্মের পর এই প্রথম আমাদের সকলের একসঙ্গে গ্রামের বাড়ি যাওয়া। ও তাই খুব আনন্দে আছে। কতবার আমাকে বলছে, ‘দাদা তুই আর আমি ধানগাছে চড়ে দোল খাব।’ আমি ওকে বলিনি যে, ধানগাছে চড়ে দোল খাওয়া যায় না।
মহাকাশ বড়ই রহস্যময় স্থান। এই রহস্যের উদ্ঘাটন করার জন্য মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষ সশরীরে সেখানে হাজির হয়েছে। এই অকুতোভয় সাহসী মহাকাশযাত্রীরা জীবন বাজি রেখে অসীম ধৈর্য নিয়ে মহাকাশযানে তাঁদের গবেষণা করছেন।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের প্রথম উচ্চতা মেপেছিলেন রাধানাথ শিকদার। এই বাঙালি গণিতবিদের সাফল্যের গল্প শোনালেন সোমনাথ সরকার
১৯২৫ সালে দোল উপলক্ষ্যে সেজে ওঠে আম্রকুঞ্জ। কিন্তু বিকেলের ঝড়বৃষ্টিতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। বৃষ্টি থামতে রবীন্দ্রনাথ সকলকে নিয়ে চলে যান এখনকার পাঠভবনে। সেখানে অভিনীত হয় ‘সুন্দর’ নাটকটি।
পড়াশোনায় ফাঁক পেলেই চলছে চুটিয়ে খেলা। ব্যাট-উইকেট, ফুটবল নিয়ে সকলে নেমে পড়ছে। খেলার আনন্দের বিকল্প নেই। নিজেদের প্রিয় খেলার বিষয়ে জানাল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর হাই স্কুলের পড়ুয়ারা।
বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মানুষের সভ্যতার সবচেয়ে জীবন্ত অংশ হল মানুষের মন, আর এই মনেরই ভাবপ্রকাশের বাহন হল ভাষা। যুগ যুগ ধরে মানুষ চেয়েছে তার মনের কথা পাশের মনটিতে এমনকী পরবর্তী প্রজন্মের পর প্রজন্মে পৌঁছে দিতে, সেই প্রয়োজনেই সে সৃষ্টি করেছে এই ভাষা মাধ্যম। আলতামিরা/ভীমবেটকার গুহাচিত্র থেকে বর্তমানে কম্পিউটারের ডিজিটাল অক্ষরে মানুষের সেই নিরন্তর ইচ্ছেই প্রতিফলিত।তাই আজ অতিমারীর ঘরবন্দিযাপনের দিনে আমরা মানবসভ্যতার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি, এই প্রথম এবং প্রধান যোগাযোগের মাধ্যমটি নিয়ে একটু ভেবে দেখব, কেমন?
আমাদের বিদ্যালয় শিক্ষার সপ্তম ও নবম শ্রেণিতে এই শব্দ ভাণ্ডারের কথা পাঠ্য আছে। তাহলে চলো, আমাদের মাতৃভাষা বাংলার ভাঁড়ারে কী কী মণিরতন আছে জেনে নিই চট করে।
একটা কথা মনে রাখি, যেকোনও ভাণ্ডারের বা কোষাগারের মান কিন্তু নির্ভর করে তার বিপুলতা এবং বৈচিত্র্য এই দুইয়ের মিশ্রণে। ভাষার ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম খাটে। যে ভাষার শব্দভাণ্ডারে তার নিজস্ব শব্দসম্পদের সঙ্গে যত অপরাপর ভাষার শব্দাবলির মিলমিশ ও নিপুণ প্রয়োগ দক্ষতা থাকে, সেই ভাষা তত সমৃদ্ধ। তবে কি ধার নেওয়া শব্দ বেশি হলেই ভাষা সমৃদ্ধ হয়?
আসলে, ভাষার মান বাড়ে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অন্য ভাষার শব্দরাজিকে সে যখন নিজের চলনের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে নতুনতর ভাষা-শরীর গড়ে তোলে, তখনই।
এবারে দেখি, কোনও ভাষার সমৃদ্ধির তিনটি মূল উপায়কে:
১. উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া শব্দের সাহায্যে (মৌলিক শব্দ)।
২. অন্য ভাষার ‘কৃতঋণ’ শব্দের সাহায্যে।
৩. নব গঠিত শব্দের সাহায্যে।
বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারও এই তিনটি উপায়ে সমৃদ্ধ হয়েছে।
১. মৌলিক শব্দ:
যেসব শব্দ প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা [বৈদিক ও সংস্কৃত] থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে বাংলায় এসেছে।
প্রথমেই একটু হোঁচট খেতে হয় এই প্রশ্নে যে, সংস্কৃত ভাষা থেকেই তো বাংলা ভাষার সৃষ্টি, তাই না?
এর উত্তরে একটা ছক দেখি—
অতএব বুঝতেই পারছ, সংস্কৃত ভাষার থেকে আমরা বহুতর শব্দে পুষ্ট ও সমৃদ্ধ হলেও তাকে বাংলা ভাষার ‘মা’ বলা চলে না। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে ছান্দস ভাষার আদর্শে পাণিনি নামে এক পণ্ডিত ব্যক্তি সমসময়ের প্রচলিত ভাষার সংস্কার করলে সংস্কৃত ভাষার সৃষ্টি হয়। কিন্তু সাহিত্যের প্রয়োজনে একটি তৈরি করা ভাষা থেকে নয়, বাংলা ভাষার সৃষ্টি মূলত প্রাকৃতজনের মুখের ভাষা থেকেই।
তবে, সংস্কৃত ভাষা থেকেই বাংলার মৌলিক শব্দগুলি গৃহীত। এদের আবার চার রকম ভাগ আছে-
ক. তৎসম শব্দ, খ. অর্ধতৎসম শব্দ গ. তদ্ভব শব্দ এবং ঘ. দেশি শব্দ।
ক. তৎসম শব্দ:
যেসব শব্দ সংস্কৃত থেকে অপরিবর্তিতভাবে বাংলায় এসেছে সেগুলোকে তৎসম শব্দ বলা হয়
তৎ = সংস্কৃত, সম=সমান, অর্থাৎ তৎসম কথাটির অর্থ সংস্কৃতের সমান।
যেমন: সূর্য, মিত্র, জীবন, মৃত্যু, বৃক্ষ, লতা, নারী, পুরুষ ইত্যাদি।
খ. অর্ধতৎসম শব্দ :
যেসব সংস্কৃত শব্দ বাংলায় এসে বাঙালির উচ্চারণে পরিবর্তিত,
যেমন: কৃষ্ণ > কেষ্ট, নিমন্ত্রণ> নেমন্তন্ন
গ. তদ্ভব শব্দ:
যেসব শব্দ সংস্কৃত থেকে সোজাসুজি বাংলায় আসেনি, প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় এসেছে,
তৎ = সংস্কৃত, ভব=উৎপন্ন অর্থাৎ সংস্কৃত থেকে উৎপন্ন।
যেমন: সংস্কৃত ইন্দ্রাগার > প্রাকৃত ইন্দাআর > বাংলা ইন্দারা, কৃষ্ণ > কন্হ > কানু ধর্ম > ধম্ম > ধাম।
ঘ. দেশি শব্দ:
কোল, ভিল প্রভৃতি অনার্য জাতির ভাষা থেকে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় এসেছে। যেমন: কুলো, কুকুর, খোকা, চিংড়ি, ঝাঁটা, ঝিঙে, ডাগর, ডাব, ডিঙি, ঢোল, তেঁতুল, মুড়ি।
২. আগন্তুক বা কৃতঋণ শব্দ: অন্য ভাষা থেকে সরাসরি বাংলায় এসেছে যেসব শব্দ।
এদের দুটি ভাগ: ক. ভারতীয় এবং খ. বিদেশি।
ক. ভারতীয় শব্দ:
যেসব শব্দ এদেশেরই অন্য ভাষা থেকে সরাসরি বাংলায় এসেছে। যেমন : হিন্দি: লগাতার, বাতাবরণ, সেলাম। গুজরাতি: হরতাল, খাদি।
খ. বিদেশি:
যেসব শব্দ এদেশের বাইরের কোনও ভাষা থেকে এসেছে।
যেমন: ইংরেজি: স্কুল, কলেজ, টেবিল...
জার্মান: জার, নাৎসি।
পর্তুগিসজ: আনারস, আলপিন, আলকাতরা, আলমারি, পেয়ারা, পাউরুটি, জানালা, বালতি।
স্পেনীয়: কমরেড, ডেঙ্গু
ইতালীয়: কোম্পানি, গেজেট।
ওলন্দাজ: ইসকাবন, হরতন।
চিনা: চা, চিনি, লুচি, লিচু।
বর্মী: ঘুগনি, লুঙ্গি।
ফারসি: সরকার,আমীর, উজীর,
আরবি: আক্কেল, কেতাব, ফসল।
৩. নবগঠিত শব্দ:
নতুন করে গড়ে-ওঠা শব্দ। এরা—
ক. মিশ্র শব্দ:
বিভিন্ন শ্রেণির শব্দের পারস্পরিক সংযোগে যেসব নতুন শব্দ,
যেমন : হেড [ ইং ] + পণ্ডিত [ বাং ] = হেডপণ্ডিত।
ফি [ফারসি ] + বছর [ বাংলা ] ফি-বছর।
খ. অনূদিত শব্দ:
অনুবাদের মাধ্যমে পাওয়া শব্দ, যেমন: দূরদর্শন (Television ), শ্বেতপত্র (White paper), কালোবাজার (Black market)
গ. খণ্ডিত শব্দ:
শব্দের অংশ বাদ দিয়ে উচ্চারণ করলেও যদি অর্থের পরিবর্তন না হয়। যেমন: প্লেন <এরোপ্লেন, মাইক < মাইক্রোফোন, ফ্রিজ < রেফ্রিজারেটর।
ঘ. ‘জোড়কলম শব্দ’: দুটি আলাদা শব্দ জোড়া দিয়ে তৈরি করা, যেমন: ‘হাঁসজারু’ (হাঁস + সজারু)
ধোঁয়াশা (ধোঁয়া + কুয়াশা)।
ঙ. মুণ্ডমাল শব্দ: বাক্যের আদি ধ্বনি দিয়ে তৈরি শব্দ,যেমন— পিপুফিশু (পিঠ পুড়ছে ফিরে শুই)।
আশাকরি, বাংলা ভাষার শব্দের ঐশ্বর্যের কিছুটা বোঝা গেল!
