Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। মুখটা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। চেনা মানুষ হঠাৎ কেমন নেই হয়ে যায়। যাক, অনাবশ্যক কৌতূহল দেখিয়ে লিখছি। কিছু মনে কোরো না।
কথাগুলো লিখে ঈশ্বরী হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিল সুবর্ণাকে। তারপর আবার অফিসের কাজ করতে লাগল।
একটু পরই সুবর্ণা রিপ্লাই করল, আশ্চর্য! তোমার সঙ্গেও পরিচয় ছিল! আমি জানতামই না!
—ঠিক। আমিও তো জানতাম না এত বছর। অথচ আমরা একই অফিসে এত দিন কাজ করছি। ঈশ্বরী লিখল।
—আসলে অনিকেতের জন্য আমার কোনও ফিলিং অবশিষ্ট নেই। পনেরো বছর হয়ে গেছে আমরা আলাদা থাকি। দশ বছর খাতায় কলমে ডিভোর্সি। 
—আচ্ছা। 
—অনিকেত চলে যাওয়ায় আমার দুঃখ শোক কিছুই হচ্ছে না ঈশ্বরী। যেভাবে ওরা সমবেতভাবে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করত, তাতে যে প্রাণে বেঁচে আছি, তাই অনেক। বাই দ্য ওয়ে, তুমি কীভাবে চিনতে?
—আমার এক পরিচিত বন্ধু অনিকেতবাবুর কলিগ ছিলেন। ওঁর অফিসেই একবার পরিচয় হয়েছিল, তাও বছর পনেরো আগে। তখন উনি সম্ভবত পার্ক স্ট্রিট বা রবীন্দ্রসদনের কাছে একটি অফিসে বসতেন।
—হ্যাঁ, ও সেন্ট্রাল ভিজিলেন্সে ছিল।
—হবে হয়তো। অত জানা হয়নি। তবে আমার পরিচিত মানুষটির দৌলতে পরিচয় হয়েছিল।
—একজন অসৎ খারাপ মানুষের যা পরিণতি হওয়া দরকার তাই হয়েছে। নইলে কেউ এত অল্প বয়সে চাকরি থাকতে থাকতেই চলে যায়!
ঈশ্বরী এ প্রশ্নের কোনও উত্তর দিল না। কী-ই বা উত্তর দিতে পারে! সে আর কতটুকুই বা চিনত অনিকেতকে!
সুবর্ণা আবার লিখল, তোমাকে কখনও বলেনি ওর স্ত্রী কত খারাপ? ওকে অনেক কষ্ট দিয়েছে, মোটা টাকা আদায় করেছে, মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে... ইত্যাদি! 
—না। তুমি ভুল করছ সুবর্ণা। আমার সঙ্গে এত কাছের সম্পর্ক ছিল না যে, এত কিছু বলা বা শোনা যায়। তাছাড়া তুমি তো ভালো করেই জানো, আমি কারওর বিষয়েই কাজের সম্পর্কের বাইরে কিছু জানতে চাই না। প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা মত, জীবন পদ্ধতি। সংসার নিয়ে অনাবশ্যক আলোচনা আমার কোনওদিনই ভালো লাগে না। আমার মনে হয় এগুলো তাদের একেবারেই ব্যক্তিগত।
ঈশ্বরী লিখল।
—হ্যাঁ, তা ঠিক। কিন্তু কী বল তো, মানুষ মনে করে অপরের বিষয়ে  সব কিছু জানা তার মৌলিক অধিকার। এই দেখ না অনিকেতের বিষয়ে তুমি কেমন খোঁজ করলে!
—সরি, আমি অনিকেত চলে গেছেন বলে তোমাকে সহানুভূতি দেখানোর জন্য লিখিনি। আমার আশ্চর্য লাগে হঠাৎ করেই একজন কেমন জীবনের রঙ্গমঞ্চ থেকে নীরবে প্রস্থান করে। আমরা সবাই একদিন না একদিন এমনভাবেই যবনিকা টেনে বিদায় নেব। তোমার সঙ্গে ওঁর কী সম্পর্ক ছিল, তোমরা কেন আলাদা ছিলে, এ নিয়ে আমার কোনও কৌতূহল নেই। এগেইন সরি।
—ইটস ওকে।
....
অফিসে কাজের ফাঁকে ঈশ্বরীর বারবার অনিকেতের মুখটা মনে পড়ছিল। ঋষিনের দপ্তরে প্রথম দেখা হওয়া মাত্র অনিকেত বলেছিলেন, ‘আরে আপনি তো বিখ্যাত মানুষ। এই সেদিন অ্যাকাডেমিতে আপনার নাটক দেখে এলাম। যোজনগন্ধা। অসাধারণ অভিনয় আপনার।’ 
ঈশ্বরী হেসে বলেছিল, ‘ওটা আমি নই। আমার বোন। দেবী।’
—যমজ নাকি আপনারা? নাকি ওটা আপনার ছদ্মবেশ?
—না, না। ওটা বোনই। যমজ নই। ও ছোট। তবে অনেকেই এই ভুল করেন।
—আরেব্বাস। এত মিল! তা আপনি কী করেন?
অনিকেতকে থামিয়ে ঋষিন উত্তর দিয়েছিল, ‘ঈশ্বরী তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরে আছে। আমার বান্ধবী। অবশ্য বন্ধু কম, বোন বেশি।’ 
—নইলে আর উপায় কী! মেয়েরা বান্ধবী হলে বাড়ির কর্ত্রীটির মুখ যে ভার হয়ে যায়। বোন বানানো ছাড়া উপায় নেই। 
ঋষিন কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই ঈশ্বরী বলেছিল, ‘আপনারা বুঝি গৃহিণীকে খুব ভয় পান? খোঁজ নিলে তো দেখা যাবে প্রত্যেকেরই লুকানো বান্ধবী আছে। ধরা পড়লে তখন বউয়ের আঁচলের তলায় লুকিয়ে পড়েন।’
একটু ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে অনিকেত বলেছিল, ‘আচ্ছা চলি, আশা করি আবার কখনও দেখা হবে।’ 
‘নিশ্চয়ই,’  বলে কথার ইতি টেনেছিল ঈশ্বরী।
ঋষিন অনিকেতকে বলেছিল, ‘তুই রেগে গেলি মনে হচ্ছে। চা খাবি?’
—না রে। রাগ নয়। এই যে মেয়েরা যেভাবে ছোট করে, সম্পর্কগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখে এগুলো খুব বিরক্ত লাগে। অনেকটাই তো বয়স হল।
—বাদ দে। ও বেচারা পরিবার নিয়ে খুব ঘেঁটে। 
—এগুলো সবই কমন কথা। সংসার নামক উত্তাল সমুদ্রে সব নৌকোই টলমল করে রে।
একথা বলে উঠে পড়েছিল ঈশ্বরীও।

সেদিনের পর আরও দু’বার আচম্বিতেই দেখা হয়ে গিয়েছিল অনিকেতের সঙ্গে।  ওর চেহারাটাই এমন ছিল যে, একবার দেখলে সহজে ভোলা যেত না।
সচরাচর বাঙালি পুরুষের তুলনায় অনেকটাই লম্বা, লালাভ বর্ণ, একটু মোটার দিকে গড়ন, পোশাকের বৈচিত্র্য, কটা চোখ, সিল্কি চুল, মুখে চুইংগাম, আর দূর থেকেও পাওয়া যায় এমন পারফিউমের গন্ধ,  সবমিলিয়ে অন্যরকম। 
হস্তশিল্প মেলায় তাকে দেখেই এগিয়ে এসেছিলেন অনিকেত।
—দেবী না ঈশ্বরী? চিনতে পারছেন?
—ঈশ্বরী।
সেও হেসেছিল।
—আছেন কেমন?
—বিন্দাস।
ঈশ্বরী হাসে।
সেদিকে তাকিয়ে অনিকেত বলে, ‘হাসলে আপনার গালে টোল পড়ে। বেশ লাগে।’
—আমি জানি।
বলে হেসে ওঠে ঈশ্বরী।
—আপনি কি খুব রাগী? নাকি অহংকারী? 
—যা ইচ্ছে ভাবতে পারেন।
—বেশ, এক কাপ চা হতে পারে? তাহলে বোঝা যেত আমার অনুমান সত্যি কি না?
—হতে পারে। তবে এখন নয়। আমি সবে এলাম। একটু ঘুরে নিই।
—আপনি একা এসেছেন?
ঈশ্বরীর চারপাশে চোখ ঘোরালেন অনিকেত। তারপর বললেন, ‘আপনি চাইলে আপনার সঙ্গী হতে পারি। জিনিসপত্র যা কিনবেন না হয় বয়ে দেব।’ 
—ধন্যবাদ। তবে আমি একা ঘুরতেই পছন্দ করি।
ভ্রু-টা মুহূর্তের জন্য কুঁচকে কাঁধটা ঝাঁকিয়ে অনিকেত বলেছিলেন, ‘অ্যাজ ইওর উইশ। চা পানের সময় হলে ফোন করতে পারেন। আশা করি, তাতে আপনার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে না।’ বলে নিজের ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন। 
সেদিন অবশ্য ঈশ্বরীর আর তার সঙ্গে চা পানের অবকাশ হয়নি। ঘোরাঘুরি শেষ করে গাড়িতে উঠে মনে পড়েছিল অনিকেতের কথা। ফোন করে জানাবে কি না ভাবতে ভাবতেই ড্রাইভার মেলা প্রাঙ্গণের পার্কিং ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল।
অনিকেতের সঙ্গে এরপর প্রায় দু’বছর বাদে আবার দেখা হয়ে গেল  অ্যাকাডেমিতে। দেবীর সেদিন নতুন নাটক অনুষ্ঠিত হবে। হলে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে দেখা হয়ে গেল অনিকেতের সঙ্গে। তাঁর কোনও এক বন্ধু এই শো-তে দেবীর সঙ্গে কাজ করছেন। 
ঈশ্বরীকে দেখেই বলে উঠলেন, ‘সেদিন পাছে চা খাওয়াতে হয়, সেই ভয়ে আর ফোন করলেন না। আমি ভাবছিলাম, মহিলা মাত্রই কি এমন কিপটে হয়?’
ঈশ্বরী কিছু উত্তর দেবে না ভেবেও বলে ফেলল, ‘মেয়েরা কিপটে ও সঞ্চয়ী না হলে উড়নচণ্ডী পুরুষ যে উচ্ছন্নে যায়। চলুন আজ চায়ের দামটা আমিই দিই।’
—আরে না না, আমি মজা করলাম। আপনাকে সামান্য চা খাওয়ানোর ক্ষমতা এই বান্দার আছে। 
অ্যাকাডেমির পিছন দিকের ক্যান্টিনে চা খেয়ে ঈশ্বরী দু-একটা অপ্রয়োজনীয় কথার শেষে ‘ধন্যবাদ’ বলে হলে ঢুকে গিয়েছিল।
অনিকেতের সঙ্গে আর কি কখনও দেখা হয়েছিল! ভাবতে ভাবতে ঈশ্বরীর মনে পড়ল, ঋষিন বলেছিল, ‘তোর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলাম না আমার এক কলিগ অনিকেতের সঙ্গে...’
 —হ্যাঁ। 
—ওর খুব খারাপ অবস্থা রে। সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি। রিকোভার করলেও একটা সাইড প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
—দূর, এখন ফিজিওথেরাপি আর যোগ-ব্যায়াম নিয়মিত করলে প্যারালাইসিস ঠিক হয়ে যায়। তবে সময় লাগে। সুস্থ হবার ইচ্ছেশক্তিও দরকার। 
—অনির তো বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই চলে গেছে। ওর স্ত্রী তাদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছিল। সেসবেরই এফেক্ট। অসম্ভব অ্যালকোহল অ্যাডিকটেড হয়ে গেছিল। কোনও নিয়ম মানতেই চাইত না। কিছু বললেই বলত, কার জন্য বাঁচব? কী আছে আমার!
—এটা কোনও কথা হল? মানুষকে বাঁচতে হয় নিজের জন্য। যাক এখন এসব নিয়ে ভেবে মন খারাপ করিস না। যা হবার তা হবেই। ভবিতব্য কেউ আটকাতে পারে না।
—তোরা মেয়েরা এত নিষ্ঠুর কী করে হোস? এই অবস্থাতেও ওর মেয়ে- বউ ওকে একবারও দেখতে আসেনি। 
—খবর দিয়েছিলি?
—হ্যাঁ। প্রথম দিনই। অফিসেই তো ঘটেছে। ফলে প্রথমেই ওর স্ত্রীকেই জানানো হয়েছিল। তিনি শুনে বলেন কি না ‘আমার এখানে কিছু করার নেই। আমি ডাক্তার নই যে চিকিৎসা করব। হাসপাতালে নিয়ে যান।’ এরপর আর কী বলার থাকতে পারে!
ঈশ্বরী বলেছিল, ‘কোন যন্ত্রণায় লাঞ্ছনায় একজন স্ত্রী এই কথা বলতে বাধ্য হন, তা তো আমরা জানি না। এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে আরেকজনকে দোষী না ভাবাই ভালো। এখন ওসব নিয়ে না ভেবে ডাক্তার আর ঈশ্বরের ওপর আস্থা রাখাই যুক্তিযুক্ত।’
সে যাত্রায় অনিকেত শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে অফিসে যোগ দিয়েছিলেন। নিজেই ফোন করে সে খবর দিয়েছিলেন ঈশ্বরীকে।
—ঈশ্বরী আপনাকে দেখে মনে হয়েছিল আপনি খুব ভালো মনের মানুষ। কিন্তু দেখলাম আপনি খুব নিষ্ঠুর।
—আপনি কেমন আছেন এখন?
অনিকেতের করা অভিযোগ গায়ে না মেখে বলে উঠেছিল ঈশ্বরী।
—আপনি তার মানে জানতেন আমি মৃত্যুশয্যায়। তবুও দেখতে আসেননি!
ঈশ্বরী বলেছিল, ‘আমার হাসপাতালের গন্ধ ভালো লাগে না। আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি ওখানে গেলে। ঋষিনের থেকে জেনেছিলাম আপনি ছুটি পেয়েছেন।’
—ঈশ্বরী, আপনাকে যেন কখনও হাসপাতালে না যেতে হয়। তবে মানুষের জীবন তো, কখন কী হয় কে জানে!
—আপনি সাবধানে থাকবেন, নিয়ম মেনে চলবেন।
এই বলে কথার ইতি টেনেছিল ঈশ্বরী।

ঋষিন জানিয়েছিল অনিকেতের চলে যাওয়ার কথা।
—ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক। এবার আর কিছু করা গেল না। আসলে বাঁচার আকুতিটাই একেবারে জিরো হয়ে গেছিল। মরে বেঁচে গেল। নইলে আর কী কী হতো কে জানে!
—কেন কী হতো?
—শরীরের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে গেছিল। দীর্ঘদিন না খাওয়া, না ঘুমনো, ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। বিছানায় পড়ে থাকলে দেখার কেউ ছিল না। তার থেকে এই ভালো হল।
ঋষিনের কথা শুনে এক মুহূর্তের জন্য ঈশ্বরীর মনে হয়েছিল, ইস কেন একবার দেখা করতে গেলাম না। আমি কি স্বার্থপর হয়ে গেছি? পরমুহূর্তেই ভেবেছিল, অনিকেতের সঙ্গে এমন কোনও সম্পর্কই ছিল না, যাতে তার মৃত্যুতে দেখা না হবার আপশোস হতে পারে। প্রতি মুহূর্তে অজস্র মানুষের চলে যাওয়ার খবর কানে আসে। যে জন্মেছে সে মরবেই। আগে অথবা পরে। মৃত্যুর জন্য শোক নয়, বরং এই লোভ, লালসা, হিংসা, দ্বেষ, অভাব, বেকারত্ব নানান সমস্যায় জর্জরিত মানুষ নরকতুল্য পৃথিবী থেকে যত তাড়াতাড়ি চলে যায় তত মঙ্গল।
তার চোখের সামনে শ্মশানে বসে থাকা অজস্র মানুষের মুখ ভেসে উঠছিল। তারাও তাদের প্রিয় মানুষকে ছেড়ে দেবার যন্ত্রণায় আকুল হয়ে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতেও হিসেবি জীবনের কথা ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। জীবন চলমান। শ্মশানের সামনে বয়ে যাওয়া গঙ্গার মতোই প্রবাহমান। থেমে থাকা মানে মৃত্যু।   মৃত্যুর জন্য শোক করা বন্ধ করে দিয়েছে ঈশ্বরী। সে জানে এক আকাশের তলায় থেকেও বহু মানুষের সঙ্গে জীবনে আর দেখা হয় না, তীব্র ইচ্ছে থাকলেও। যারা চলে যায়, তারা আর ফিরে আসে না। এই না আসাটাই তার কাছে মৃত্যুর সমতুল্য। ঋষিন আর কী কী বলেছিল তা তার কানে ঢুকছিল না। কথার মাঝেই ফোন রেখে দিয়েছিল সে। তার ক’দিন পর সুবর্ণার সঙ্গে চ্যাট করার পর ঈশ্বরীর মনে হল, অনিকেত আর সুবর্ণা পরস্পরকে বহু বছর আগেই মন থেকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছিল। যেটুকু পড়েছিল তা ওই মালসায় করে কয়েক টুকরো অস্থি আর নাভিকুণ্ড জলে ভাসাবার মতোই। থাকা-না থাকার মাঝখানে শুধু একটা সুতোই ঝুলছিল। এখন সেটাও ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো আকাশে ভেসে চলেছে। 
31st  March, 2024
প্রেশার
মহুয়া সমাদ্দার

বাসে বসে প্রথমেই শিপ্রাদিকে ফোন করল মিত্রা। গতকাল থেকে ভীষণ ব্যস্ততায় আর ফোন করা হয়ে ওঠেনি তার। শিপ্রাদি ফোন ধরতেই মিত্রা বলল, ‘দিদি, আমি বাসে আছি। বাসস্ট্যান্ডে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। আর মিনিট পনেরো-কুড়ি লাগবে।’ একটু ভয়ে ভয়েই বলল। বিশদ

গুপ্ত রাজধানী: মখদম সাহিবের তাবিজ রহস্য
সমৃদ্ধ দত্ত

সেই তাবিজটা কোথায়? ওই তাবিজ যদি ইব্রাহিম লোধি পরে থাকতেন, তাহলে কি এত সহজে সমরখন্দ, ফরঘনা, তৈমুর লং আর চেঙ্গিজ খানের সম্মিলিত এক শক্তিশালী পেডিগ্রি থাকলেও জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবরের হাজার দশেক সেনার কাছে লোধি পরাস্ত হতেন? বিশদ

অতীতের আয়না: তপ্ত দিনে তৃপ্তির স্নান
অমিতাভ পুরকায়স্থ

চৈত্রের শেষ থেকেই  ট্রেনে-বাসে, হাটে-বাজারে বা সমাজ মাধ্যমের দেওয়ালে উঠে আসে প্রতিদিন গরমের রেকর্ড ভাঙার আলোচনা। চল্লিশ ডিগ্রি পেরিয়েও আরও একটু উচ্চতা ছোঁয়ার জন্য যেন সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেন সূয্যি মামা। বিশদ

মহাপাপ
প্রদীপ আচার্য

 

দরদর করে ঘামছিলেন বিজন। প্রায় অন্ধকার ঘরে একা বসে আছেন তিনি। তাঁর মাথাটা নুইয়ে আছে। চিবুক ঠেকে আছে বুকে। চেয়ারে ওভাবে ভেঙেচুরে বসে বসেই একটা ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন তিনি। অপমানিত, লাঞ্ছিত আর কলঙ্কিত বিজনের সামনে এখন এই একটাই মুক্তির পথ খোলা। বিশদ

19th  May, 2024
আজও রহস্য আকাশবাণীর অশরীরী
সমুদ্র বসু

রহস্য, ভৌতিক-অলৌকিক চিরকালই মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সত্যি-মিথ্যার দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও এর কৌতূহল অনস্বীকার্য। আজকে আমরা জানব খাস কলকাতায় অবস্থিত তেমনই এক জায়গার কথা, অতীত  হয়েও যা বর্তমান। বিশদ

12th  May, 2024
অসমাপ্ত
সায়ন্তনী বসু চৌধুরী

মাতৃসঙ্ঘ ক্লাবের সামনে পৌঁছে মার্জিত ও অভ্যস্ত কণ্ঠে ক্যাব ড্রাইভার বলল, ‘লোকেশন এসে গিয়েছে ম্যাডাম।’  বিশদ

12th  May, 2024
গুপ্ত রাজধানী রহস্যময় লৌহস্তম্ভ
সমৃদ্ধ দত্ত

একটি লৌহস্তম্ভ কতটা পথ অতিক্রম করেছে? একটি লৌহস্তম্ভ কীভাবে একটি শহরের জন্মবৃত্তান্তকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? একটি লৌহস্তম্ভ মরচে লেগে কেন পুরনো হয় না? একটি লৌহস্তম্ভ কবে প্রথম প্রোথিত হল? কোথায় তার জন্মস্থান? বিশদ

12th  May, 2024
জীবন যখন অনলাইন
অনিন্দিতা বসু সান্যাল

বেণী-সমেত লম্বা চুলের ডগাটা কাটতে কাটতেই ফোনটা এল। সকাল সাতটা। খবরের কাগজ অনেকক্ষণ আগেই ফেলে গিয়েছে চারতলার ফ্ল্যাটের বারান্দার সামনে। ভোরেই ওঠার অভ্যেস মন্দিরার। বিশদ

28th  April, 2024
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
একনজরে
আইপিএল ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সকেই এগিয়ে রাখছেন ম্যাথু হেডেন ও কেভিন পিটারসেন। রবিবার চিপকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের চেয়ে কেকেআরের জেতার সম্ভাবনা বেশি বলেই মনে করছেন তাঁরা। ...

ফের হাসপাতাল চত্বরে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে খাইয়ে রোগীর আত্মীয়দের সর্বস্ব লুট করা হল। ঘটনাস্থল সেই চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল। শুক্রবার রাতে দুই রোগী পরিবারের ...

মাস ছ’য়েকের জন্য ‘সংসার’ পাততে হবে।  তার আগে আস্তানা দেখতে হাজির গুটিকয়েক ওপেন বিল স্টর্ক। কুলিক পক্ষীনিবাসে খাবারের ব্যবস্থা, পরিবেশ, আবহাওয়া কেমন, সবটা ‘খতিয়ে দেখে’ ...

পুনের গাড়ি দুর্ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে শুক্রবার রাতে বড়সড় গাড়ি দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল মহারাষ্ট্র। এবারের ঘটনাস্থল নাগপুর। বেপরোয়া গতিতে থাকা গাড়িটির ধাক্কায় তিন মাসের শিশু সহ সাতজন জখম হয়েছেন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭৩৯: মোগল সম্রাট মহম্মদ শাহ ও ইরানের নাদির শাহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের ফলে আফগানিস্তান ভারত থেকে পৃথক হয়ে যায়
১৮০৫: নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইতালির রাজা হিসাবে রাজ্যাভিষিক্ত হন
১৮৯৭: ব্রাম স্টোকারের উপন্যাস ড্রাকুলা প্রকাশিত হয়
১৯১৩: এমিলি ডানকান ব্রিটেনের প্রথম মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত
১৯১৮: জার্জিয়া ও আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা
১৯৪৫: মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের জন্ম
১৯৪৯: মার্কিন কম্পিউটার প্রোগামিং বিশেষজ্ঞ ওয়ার্ড কানিংহামের জন্ম, তিনিই উইকিপিডিয়ার প্রথম সংস্করণ বের করেছিলেন
১৯৬৯: অ্যাপোলো-১০ নভোযানটি আট দিনের সফল ভ্রমণ শেষ করে পৃথিবীতে অবতরণ করে
১৯৭১: মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের কিংবদন্তি ফুটবলার বিমল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৭২ - অভিনেত্রী রাজলক্ষ্মী দেবীর মৃত্যু
১৯৭৭: ইতালির ফুটবলার লুকা তোনির জন্ম
১৯৯৯: কাশ্মীরের কারগিল সেক্টরে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ শুরু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৩ টাকা ৮৪.১৭ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৯৮ টাকা ১০৭.৪৫ টাকা
ইউরো ৮৮.৪৭ টাকা ৯১.৬১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
25th  May, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৪০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭২,৮০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,২০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,৬৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,৭৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১২ ‌জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১, রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪। তৃতীয়া ৩২/৫৫ অপরাহ্ন ৬/৭। মূলা নক্ষত্র ১৪/৮ দিবা ১০/৩৬। সূর্যোদয় ৪/৫৬/৪২, সূর্যাস্ত ৬/১০/৩৫। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৪২ গতে ৯/২১ মধ্যে পুনঃ ১২/০ গতে ২/৩৮ মধ্যে রাত্রি ৭/৩৬ মধ্যে পুনঃ ১০/৮ গতে ১২/৩৮ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৪/২৪ গতে ৫/১৭ মধ্যে। বারবেলা ৯/৫৪ গতে ১/১৩ মধ্যে। 
১২ ‌জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১, রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪। তৃতীয়া সন্ধ্যা ৫/৫৫। মূলা নক্ষত্র দিবা ১০/৪৩। সূর্যোদয় ৪/৫৬, সূর্যাস্ত ৬/১৩। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪২ গতে ৯/২২ মধ্যে ও ১২/৪ গতে ২/৪৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৪৪ মধ্যে ও ১০/৩৪ গতে ১২/৪০ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৪/৩২ গতে ৫/২৪ মধ্যে। বারবেলা ৯/৫৫ গতে ১/১৪ মধ্যে। কালরাত্রি ১২/৫৫ গতে ২/১৫ মধ্যে। 
১৭ জেল্কদ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আগামী ১ জুন বৈঠক ডাকল ইন্ডিয়া জোট

10:55:22 PM

আইপিএল ফাইনাল: হায়দরাবাদকে ৮ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কেকেআর

10:38:11 PM

আগামী চার ঘণ্টা ধরে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া চলবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের

10:36:39 PM

আইপিএল ফাইনাল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি বেঙ্কটেশ আয়ারের, কেকেআর ১১১/২ (১০ ওভার) টার্গেট ১১৪

10:35:44 PM

আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কেকেআর, এক্স হ্যান্ডলে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

10:34:00 PM

আইপিএল ফাইনাল: ৩৯ রানে আউট গুরবাজ, কেকেআর ১০২/২ (৮.৫ ওভার) টার্গেট ১১৪

10:31:15 PM