Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

কথা ও কাহিনিতে
বাংলার রথ
তরুণ চক্রবর্তী

এপার ওপার দু’দিকেই ঘন জঙ্গল আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি জনপদের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে পতিতোদ্ধারিণী গঙ্গা। সেই গঙ্গার নির্জন তীরে পাতায় ছাওয়া এক কুটিরে থাকতেন যে সন্ন্যাসী, হঠাৎই একদিন কোথায় যে উধাও হয়ে গেলেন! কবে কোথা থেকে এসে সেখানে তিনি ডেরা বেঁধেছিলেন, কী তাঁর নাম, তাও তো কেউ জানে না।তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। গাঁয়ের মানুষরা একদিন দেখতে পেল, আবার সেখানে ফিরে এসেছেন সেই সন্ন্যাসী ঠাকুর। এবারে জানা গেল, তিনি সিদ্ধপুরুষ ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী, গিয়েছিলেন পুরীধামে তীর্থ করতে। সেখানে জগন্নাথদেবকে দর্শন করে একেবারে মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বড়ই সাধ হয়েছিল, নিজের হাতে ভোগ রান্না করে নিবেদন করবেন জগন্নাথদেবকে। ধন্য হবে তাঁর জীবন।পরদিন ঘুরে ঘুরে যেটুকু যা সংগ্রহ করলেন, সমুদ্রতীরে দু’খানা ইট পেতে আগুন জ্বালিয়ে তাই দিয়ে ভোগ রান্না করলেন ধ্রুবানন্দ। তারপর সমুদ্রে অবগাহন করে, একটি মাটির পাত্রে সেই ভোগ নিয়ে গেলেন তিনি জগন্নাথদেবের মন্দিরে। কিন্তু হা হতোস্মি! চালচুলোহীন অজ্ঞাতপরিচয় ধ্রুবানন্দকে পাত্তা দেওয়া তো দূরের কথা, মন্দিরের দরজা থেকেই দুর দুর করে তাড়িয়ে দিল পাণ্ডারা।
কাঁদতে কাঁদতে সমুদ্রতীরেই আবার ফিরে গেলেন রিক্ত ধ্রুবানন্দ। এত দুঃখও তাহলে ছিল তাঁর কপালে! এক সময় জলে নেমে সমুদ্রের ঢেউয়ে ভাসিয়ে দিলেন নিজের হাতে রান্না করা অন্নভোগসমেত পাত্রটি। তারপর ফিরে এসে বসলেন তীর থেকে কিছুটা দূরে, নিভৃতে। কয়েকটি গাছপালা ছাড়া কিছু নেই সেখানে। 
ক্রমে সন্ধ্যা নামল, বাড়তে লাগল রাত। সাধক ধ্রুবানন্দ ক্ষোভে, দুঃখে, অভিমানে কিছুতেই যেন আর স্থির থাকতে পারছেন না। তাঁর সব অভিমান ভগবানের ওপরেই। তিনি যখন তাঁকে চান না, তখন আর এ জীবন রেখে লাভ কি? যে অনাহারে কেটে গেল আজ সারাটা দিন, সেই অনাহারেই তাহলে অবসান হোক তাঁর জীবনের।
একদিকে তীব্র অভিমান, অন্যদিকে অনাহার— এই অবস্থাতেই কেটে গেল তিন-তিনটে দিন। সেই দিনাবসানের পর, যখন গাঢ় অন্ধকার নেমে এসেছে, স্বপ্নাদিষ্ট হলেন ধ্রুবানন্দ। স্বয়ং জগন্নাথদেব তাঁকে দর্শন দিয়ে আদেশ দিয়েছেন, স্বস্থানে ফিরে যেতে। সেখানে গঙ্গায় ভেসে আসা নিম্ববৃক্ষের কাণ্ড দিয়ে নির্মাণ করতে হবে জগন্নাথদেবের মূর্তি। সেখানেই তিনি ধ্রুবানন্দের অন্নভোগ গ্রহণ করবেন। শুধু তাই নয়, ভগবান বিরাজও করবেন সেখানে।
গঙ্গাতীরের কুটিরে ফেরার পরদিনই ধ্রুবানন্দ দেখতে পেলেন, নিমগাছের একটি গুঁড়ি গঙ্গার জলে ভেসে এসে ঠেকেছে তাঁর আশ্রমের নীচের ঘাটেই। সেটি তুলে এনে, অনেক খুঁজে কাঠের মিস্ত্রি এনে, তাঁকে দিয়ে নির্মাণ করালেন জগন্নাথদেবের মূর্তি। তারপর শুভক্ষণে মাটির বেদিতে স্থাপন করে, মূর্তি পূজা আর ভোগ নিবেদন করলেন সাধক ব্রহ্মচারী ধ্রুবানন্দ। সার্থক হল তাঁর সাধনা। ভক্তের আকুতিতে সাড়া দিয়ে ভগবান অধিষ্ঠিত হলেন সেখানে। বাংলায় প্রথম জগন্নাথদেবের মূর্তির প্রতিষ্ঠাতা হলেন এই ধ্রুবানন্দ।
এ ঘটনা চতুর্দশ শতাব্দীর। সাধক ব্রহ্মানন্দের সেই পর্ণকুটির ছিল যেখানে, সেই স্থানটিই হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের মাহেশ। সেখানকার ঘাটটির নাম রাখা হয়েছে জগন্নাথ ঘাট। শ্রীচৈতন্যদেব নীলাচলে যাওয়ার পথে, ধ্রুবানন্দের আশ্রমে জগন্নাথদেবের মূর্তি দর্শন করে ধ্যানস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাঁর পরিচর্যা করে তৃপ্ত হন ধ্রুবানন্দ। তিনি তাঁকে তাঁর মন্দিরের দায়িত্ব অর্পণ করতে চাইলে, শ্রীচৈতন্যদেব তাঁর শিষ্য কমলাকর পিপ্পলাইকে সেই দায়িত্ব দিয়ে চলে যান শ্রীক্ষেত্রের উদ্দেশে। গুরুদেবের আদেশে কমলাকর, ধ্রুবানন্দ প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথদেবের মূর্তি নিয়েই মাহেশে রথযাত্রা উৎসবের প্রবর্তন করলেন, ১৫১০ থেকে ১৫১৫ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি কোনও এক সময়ে। সম্ভবত তারপরে কোনও এক সময়ে, জগন্নাথদেবের সঙ্গে বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি দু’টি সংযোজিত হয়।
এই মাহেশের রথযাত্রাই বাংলার প্রাচীনতম রথযাত্রা উৎসব বলে মনে করা হয়। মাহেশের রথের মেলার উল্লেখ বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসেও রয়েছে। রথটি প্রথম নির্মাণ করিয়ে দিয়েছিলেন হুগলি জেলার তড়া গ্রামের দয়ারাম বসুর পুত্র দেওয়ান কৃষ্ণরাম বসু। পরবর্তীকালে ১৭৫৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার নয়নচাঁদ মল্লিক মাহেশে জগন্নাথদেবের বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করে দেন।
প্রাচীনত্ব আর খ্যাতির দিক থেকে মাহেশের পরই উঠে আসে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথের কথা। সেখানেও পাওয়া যায় সুন্দর এক লোককাহিনি। রাজা আনন্দ লালের ধর্মপ্রাণাপত্নী জানকী, এক রাতে অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। সে স্বপ্ন কি আদৌ সত্যি হতে পারে? মনে এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও, সকাল হতেই তিনি গিয়ে দাঁড়ালেন নদীর ঘাটে। সেখানে যা দেখলেন, তাতে বিস্ময়ে আর মহানন্দে ভরে গেল তাঁর মন— এ যে দেখি সত্যিই জলে ভাসে শিলা। নদীতে অবগাহন করে, তখনই ভক্তিভরে সেই শিলাখণ্ড রাজপ্রাসাদে এনে তিনি স্থাপন করলেন পূজার বেদিতে। সেই শালগ্রাম শিলাই হলেন তাঁদের আরাধ্য দেবতা রাজরাজেশ্বর জিউ।
বড় সাধ ছিল রানির, মহিষাদলেও রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করবেন, আর সেই রথে বসাবেন তাঁর আরাধ্য দেবতাকে। তাঁরই পরিকল্পনা মতো রথের নির্মাণকাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হায়, সে সাধ বুঝি আনন্দ লালের জীবদ্দশায় আর পূরণ হল না। অকালেই প্রয়াত হলেন তিনি, আকস্মিকভাবেই। রাজা আনন্দ লালের প্রয়াণের পর তিনিই ছিলেন রাজ পরিবারের অধিশ্বরী। অপুত্রক ছিলেন তাঁরা। এরপর তাঁদের পালিত পুত্র মতিলাল উপাধ্যায় রাজা হয়েই, রানির অসম্পূর্ণ রথনির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে মহিষাদলে রথযাত্রার প্রচলন করেন। রানির প্রতিষ্ঠিত সেই শালগ্রাম শিলা, রাজরাজেশ্বর জিউকেই শোভাযাত্রা সহকারে আজও রথের সর্বোচ্চ স্থলে স্থাপন করা হয়ে থাকে। আর থাকেন রাজবংশের আর এক দেবতা, গোপাল জিউ জগন্নাথদেব।
দারুশিল্প ও ভাস্কর্যের দিক থেকে মহিষাদলের এই রথ অসাধারণ। অশ্বারোহী সৈন্য, সাধু, সান্ত্রী, ঘোড়া ও অন্যান্য জন্তু জানোয়ারের মূর্তি আর লতা-পাতার অলঙ্করণ, রথটির অপরূপ সৌন্দর্য। প্রথমে রথের সতেরোটি চূড়া থাকলেও ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে রাজা লছমন প্রসাদ গর্গের ফরাসি বন্ধু মঁসিয়ে পেরুর পরামর্শে ওপরের চারটি চূড়া বাদ দেওয়া হয়। লছমন প্রসাদ রথের পাঁচটি তলার প্রত্যেকটির চারপাশে ঘুরবারান্দা আর চারকোণে চারটি করে ঋষিমূর্তি বসিয়েছিলেন।
কথায় বলে, মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার। এ কাহিনি গণ্ডার মারার নয় বটে, তবে ভাণ্ডার লুঠেরই। কিন্তু কোনও রাজা তাঁর নিজেরই ভাণ্ডার লুঠ করতে বলছেন, এমন কথা শুনলে তো কৌতূহল জাগেই। সে কাহিনিটি এরকম— হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ার রাজা বৃন্দাবনচন্দ্রের ধনসম্পত্তি বিপুল। এসব রক্ষা করতে যথেষ্ট প্রহরীও রাখতে হয় তাঁকে। এই পাহারাদার বাছাইয়ের জন্যে এক অদ্ভুত নিয়ম চালু করলেন তিনি। প্রতি বছর উল্টোরথের আগের দিন, জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার মাসির বাড়ির মন্দিরের তিনটি কক্ষে, মাটির মালসায় সাজানো থাকবে হরেক রকমের খাদ্য সম্ভার। মন্দিরের তিনটি দরজা একসঙ্গে খোলা হলে যারা সব চেয়ে বেশি ভাঁড়ার লুঠ করে আনতে পারবে, রাজা তাদেরই প্রহরী হিসেবে নিয়োগ করবেন।
আমাদের দেশের আর কোনও রথযাত্রা উৎসবে এমন ভাণ্ডার লুঠ হয় বলে জানা নেই। প্রহরী নিযুক্তির ব্যাপারটি কবে একদিন উঠে গেলেও ভাণ্ডার লুঠের প্রাচীন সেই রীতিটি আজও চালু আছে। প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন গুপ্তিপাড়ায়। সবাই পেতে চান লুঠ করা ভাঁড়ারের একটু প্রসাদ, কণামাত্র হলেও। বাংলার অন্যতম বিখ্যাত এই বৃন্দাবনচন্দ্রের রথযাত্রা উৎসব চলে আসছে প্রায় তিনশো বছর ধরে।
রথের টানে যাওয়া যাক একবার মণিপুর রাজবাড়িতে। এ রাজবাড়ি মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্রেরই বটে, তবে নদিয়া জেলার নবদ্বীপে। এ কাহিনি কয়েকশো বছর প্রাচীন। পরম বৈষ্ণব মহারাজ ভাগ্যচন্দ্র, রাজকুমারী বিম্বাবতী মঞ্জরী দেবীকে সঙ্গে নিয়ে নবদ্বীপে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অনুমহাপ্রভুর বিগ্রহ। দেবতাই যেন টেনে এনেছিলেন রাজকুমারীকে। নবদ্বীপে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবকে দর্শনের জন্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন তিনি। শ্রীচৈতন্যদেবের নীলাচলে যাত্রার কথাও তাঁর অজানা ছিল না। নবদ্বীপের মণিপুরী রাজবাড়িতে রাস-নৃত্যানুষ্ঠান প্রচলন ছাড়াও তাঁর আর একটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি রথযাত্রার সূচনা। মণিপুরী শৈলীতে কাঁঠাল কাঠের তৈরি জগন্নাথদেবের একটি মূর্তি এনেছিলেন রাজা ভাগ্যচন্দ্র। বিম্বাবতীর আরাধ্যও ছিলেন তিনি। রথযাত্রা উৎসবকালে আজও সেই মূর্তিটিই বসানো হয় রথে। তাঁর পাশে কিন্তু আর কেউ থাকেন না। কেন? যুক্তি ছিল, দ্বারকা থেকে শ্রীকৃষ্ণ যে একাই এসে রাধারানি সহ অন্য গোপিনীদের কৃপা করেছিলেন!
মণিপুরী রাজবাড়ির রথের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। রাজবাড়ির চারটি মন্দির ঘুরে রথ ফিরে আসে রাজবাড়িতে। যাত্রাপথে যেসব ভক্তের বাড়ির সামনে রথ থামে, তাদের পক্ষ থেকে আরতি করে জগন্নাথদেবের উদ্দেশে ভোগ নিবেদন করা হয়। এ রথের কিন্তু মাসির বাড়ি যাওয়া বলে কিছু নেই। তবে উল্টোরথ পর্যন্ত প্রতি সন্ধ্যায় জগন্নাথদেবের সামনে জয়দেবের দশাবতার স্তোত্র গীত হয়। ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে একই রীতি চলে আসছে। মণিপুরী নৃত্য সহযোগে জয়দেবের পদগান গেয়ে, জগন্নাথদেবের সন্ধ্যারতি, নদিয়ার অন্যতম প্রাচীন এই রথযাত্রা উৎসবের স্বতন্ত্র এক ঐতিহ্য। প্রকৃতপক্ষে মণিপুরের প্রথা প্রকরণ মেনেই এই রথযাত্রা উৎসব সম্পন্ন হয়।
নদিয়ার শান্তিপুর শহরে বড় গোস্বামী পরিবারের রথে আবার জগন্নাথদেবের সঙ্গে বসেন শ্রীরামচন্দ্রও। তিনশো বছরের পুরনো এই রথযাত্রা শেষ করতে হয় আবার দিনের আলো থাকতে থাকতেই।
কালে কালে বিচিত্র জীবনপথ ধরেই রথের চাকা গড়িয়েছে বাংলার মাটিতে। পুরুলিয়ার সুপ্রাচীন পঞ্চকোট রাজবাড়ির খ্যাতি তখনও দেশজোড়া। কেবল বিত্তেই নয়, চিত্তেও পঞ্চকোট রাজাদের সমৃদ্ধি ছিল আলোচনার বিষয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি, সঙ্গীত, দেশাত্মবোধ—এ সবই ছিল তাঁদের পরিবারের ভূষণ। রাজবাড়িতে সঙ্গীতানুষ্ঠানের জন্য দেশের নানা স্থান থেকে বিখ্যাত সঙ্গীত ও নৃত্যশিল্পীদের আনা হতো। রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ সিং দেও ছিলেন সঙ্গীত বিশারদ। তবলা ও পাখোয়াজ বাদনে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি। তাঁর অধস্তন রাজা নীলমণি সিং দেও-ও ছিলেন সঙ্গীতপ্রেমী।
লখনউয়ের সঙ্গীত শিল্পী মণি বাইজির তখন খুবই নামডাক। যেমন তাঁর রূপের ছটা তেমনই তাঁর কণ্ঠসুধা। রাজা নীলমণি তাঁকে নিয়ে এলেন রাজবাড়ির সঙ্গীতানুষ্ঠানে। তাঁর কণ্ঠলাবণ্য আর রূপে মুগ্ধ হয়ে, তিনি তাঁকে রাজবাড়িতেই রেখে দিলেন স্থায়ী শিল্পী হিসেবে। মণি বাইজির আর ফেরা হল না লখনউতে।
কিন্তু ভাগ্য বিধাতা যে তাঁর জন্যে অন্য লিপি রচনা করে রেখেছেন! নানারকম অপবাদ রটতে থাকায়, কিছুদিন পরেই তাঁকে রাজবাড়ি ছাড়তে হল। রাজা তাঁকে বেশ কয়েকটি বাড়ি আর কিছু জমি দান করে চকবাজারে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করে দিলেন। ইতিমধ্যে কে যেন আবিষ্কার করলেন— আরে, ইনিই তো সেই গড়মান্দারণ থেকে চুরি হয়ে যাওয়া বামুন বাড়ির মেয়ে। তিনি নাকি তাঁর ছোটবেলার মুখের স্পষ্ট আদল খুঁজে পেয়েছেন। বালিকা বয়সেই চুরি হয়ে গিয়েছিল সেই মেয়ে, আর তার হদিশ মেলেনি এতদিন।
মণি বাইজির পূর্ব পরিচয় কিন্তু কুয়াশার আড়ালেই থেকে গেল। গান বাজনার মজলিশ আর কোলাহল মুখরিত খ্যাতির আঙিনা থেকে, ততদিনে তাঁর মন চলে গিয়েছে আধ্যাত্মিকতার পথে। বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হয়ে তাঁর নাম হয়েছে মনমোহিনী বৈষ্ণবী। দেব সেবাই এখন তাঁর জীবনের ব্রত।
একদিন তাঁরই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হল রাধাগোবিন্দ জিউয়ের মন্দির। এরপর পুরসভায় আবেদন করে তিনি পুরুলিয়া শহরে রথযাত্রা উৎসব আয়োজনের অনুমতি আদায় করে নিলেন। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে পুরুলিয়ার পথে নামল মণি বাইজির রথ। ন’টি চূড়ার পিতলের এই রথে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার সঙ্গে আসীন হলেন তাঁর আরাধ্য দেবতা রাধাগোবিন্দ জিউ। 
মণি বাইজি লোকান্তরিত হন নব্বই বছর বয়সে, পুরুলিয়ার চকবাজারের কাপড়গলির বাড়িতেই। তাঁর রথটি আজও পথে নামে, তাঁর নাম নিয়েই। রথের দৈর্ঘ্য অবশ্য কমাতে হয়েছে।
রথ তো পৌরাণিক যান আসলে, আর সে রথে অধিষ্ঠান দেবতারই। নানা রথে নানা দেবতা যেমন, রথযাত্রা উৎসবেও আছে ভিন্নতা। পুরাণে ভগবান বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার কূর্মও কিন্তু বাংলার অন্তত একটি রথযাত্রা উৎসবের প্রধান দেবতা। তাই কচ্ছপের একটি মূর্তিই সেই রথে বসানো হয়। সে আর একটি কাহিনি।
হুগলি জেলার গোঘাটে সমৃদ্ধশালী রায় পরিবারের ওপর সে যেন এক অভিশাপ। বংশানুক্রমে পরিবারের সব সদস্যই কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এ যেন ভবিতব্য বলেই মেনে নিয়েছেন তাঁরা। একদিন এক সাধুর আবির্ভাব হল সেই গ্রামে। নানাজনের নানা কষ্ট দূর করার অলৌকিক ক্ষমতা আছে নাকি তাঁর। রায় পরিবারের এক সদস্যও তাঁকে প্রণাম করে তাঁদের ভাগ্য বিড়ম্বনা থেকে মুক্তির উপায় জানতে চাইলেন। সাধু তাঁকে পরামর্শ দিলেন, কচ্ছপের তেল দেহে লেপন করলেই রায় বংশ থেকে দূর হবে কুষ্ঠ। শুনেই সেই মানুষটি ছুটলেন জেলের খোঁজে। জেলে পুকুর থেকে কচ্ছপ ধরে আনল। সে রাতে সেটিকে ঝুড়ি চাপা দিয়ে রাখা হল।
এদিকে সেই রাতেই মানুষটি স্বপ্নাদেশ পেলেন ওই কূর্মের মধ্যেই অধিষ্ঠান করছেন ভগবান স্বরূপ নারায়ণ জিউ অর্থাৎ শ্রীরামচন্দ্র। তাঁর পুজো করলেই রায় পরিবারে কুষ্ঠ রোগ আর হবে না।
রাত শেষ হলে কচ্ছপটিকে আবার জলে ছেড়ে দেওয়া হবে স্থির করে ঝুড়ি তুলতেই অবাক কাণ্ড। সেটির আকৃতি পরিবর্তন না হলেও পরিণত হয়েছে একটি কৃষ্ণশিলায়। সেই কূর্মাকৃতি শিলাই তখন থেকে পূজিত হতে থাকলেন রায় পরিবারে। সাতশো বছরেরও আগে তাঁকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় এই পরিবারের রথযাত্রা উৎসব। বিজয়া দশমীর দিন রাবণকে বধ করে রথে চড়েই শ্রীরামচন্দ্র ফিরেছিলেন অযোধ্যায়। গোঘাটে রায়বাড়ির রথযাত্রার আয়োজন করা হয় তাই দশমীর দিনেই। সাতদিন পরে অবশ্য উল্টোরথও হয়। অনেকে একে রাবণ কাটা রথও বলে থাকেন।
তবে আসল রাবণ কাটা রথ দেখতে হলে যেতে হবে বাঁকুড়া জেলায়। রামায়ণে বর্ণিত অকাল বোধন কাহিনির সূত্রানুসারে জেলার জয়পুর থানার চাতরা গ্রামে বিজয়া দশমীর দিন শুরু হয় এই রথযাত্রা উৎসব। শেষ হয় দ্বাদশীর রাতে। এ রথের পশ্চাদ্‌পটেও আছে এক কিংবদন্তি। মল্লভূম বিষ্ণুপুরের রাজবীর সিংহের মহিষী চূড়ামণিদেবী পুরীতে সাধু সীতারাম দাস মোহন্তর কাছে দীক্ষা নেন। পরে বাঁকুড়ার কৃষ্ণনগর গ্রামে তাঁকে    দিয়েই রামসীতার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন একটি মন্দির গড়ে দিয়ে। সেখানে একটি চত্বর বা যজ্ঞস্থানও দান করেছিলেন রানি। তা থেকেই জায়গাটির নাম হয়ে যায় চাতরা কৃষ্ণনগর। সেখানে এরপর প্রচলন হয় অকাল রথের।
ভারী মজার এই রথযাত্রা উৎসব। রথে চড়েন কাঠের মাথাওয়ালা টিনের তৈরি রাবণ। আগে মহাদণ্ড উপাধিধারী বাগদিরা ঢাক, ঢোল, করতাল বাজাতে বাজাতে টেনে নিয়ে যেত রথ। একসময় হিজলডিঙা গ্রামের বক্সীরা বাদ্য সহকারে লোকলস্কর নিয়ে এসে আদেশ দিত রাবণ বধের। কাটা পড়ত রাবণের মুণ্ডু, কলরোলে মুখরিত হতো বাতাস। এমন উৎসব হয় মির্জাপুরেও। সেখানে রথে রাম-সীতাকে বসিয়ে নৃত্যগীত সহকারে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলার বিষ্ণুপুরে লোকনৃত্যের আবহে অনুষ্ঠিত হয় সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ রাবণ কাটা রথের উৎসব। রাবণবধের পর জয়োল্লাসে হনুমান, জাম্বুবানরা যে নৃত্য করেছিল, এই রাবণ কাটা লোকনৃত্য তারই অনুষঙ্গে। রাম-সীতার বিগ্রহ নিয়ে রথ টানা হয় গোরুর গাড়িতে। নৃত্যানুষ্ঠান হয় সপ্তদশ শতকে তৈরি রঘুনাথ জিউয়ের মন্দিরের সামনে। নৃত্যশিল্পীরা সাদা, কালো, লাল, সবুজ রঙের আলখাল্লা পরে সাজেন জাম্বুবান, বিভীষণ, হনুমান আর সুগ্রীব। মুখে থাকে শনের চুল লাগানো গামা কাঠের মুখোশ বা ছাম। শোভাযাত্রার সামনেই থাকেন তাঁরা। দশমীর দিন সন্ধ্যায় কুম্ভকর্ণ, একাদশীতে ইন্দ্রজিৎ আর দ্বাদশীতে এক কোপে কেটে ফেলা হয় রাবণের মাথা।
আমাদের এই বাংলায় যত রথ, তত কথা, তত কাহিনি। তবে এসব কিছুকে ছাড়িয়ে প্রাণ ভরে দেয় রথের মেলা। এমন মেলা যে জাত-কুল-বর্ণ-ধর্ম সব ভাসিয়ে দিয়ে জাগিয়ে রাখে মানুষকে। সবার ওপরে যে মানুষ সত্য, যার পরে আর কিছু নেই।
ছবি: আনন্দ দাস ও চন্দ্রভানু বিজলি
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
11th  July, 2021
বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদী

মানব সভ্যতা নদীমাতৃক। অথচ, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বহু নদী। সভ্যতা বাঁচাতে নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই ‘বিশ্ব নদী দিবসে’ বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদীগুলির সন্ধান করা হল। বিশদ

26th  September, 2021
বাতাসে বিষ কমছে আয়ু
অরিন্দম রায়

ছোটবেলায় স্কুলের বইতে বায়ুদূষণ নিয়ে যা পড়েছিলাম সেই ধারণার একটা পরিবর্তন করা দরকার। আমাদের পাঠ্য বইতে বায়ুদূষণের বেশিরভাগ অংশটাই ছিল সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কেন্দ্রিক। আমরা পড়েছিলাম, এই দুই গ্যাস কলকারখানা এবং গাড়ির ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে অ্যাসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে। বিশদ

19th  September, 2021
অপু-দুর্গার খোঁজে
পুলক চট্টোপাধ্যায়

ছেলেবেলায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্কুল পালিয়ে লুকিয়ে তাঁর বাবার লেখা ‘পশ্চিমের ডায়েরি’ পড়তেন, তখন থেকেই তাঁর মনের মধ্যে একটা কল্পনার পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর বিভূতিভূষণ কর্মসূত্রে হাজির হলেন শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত ভাগলপুরের আদমপুরে উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বিশদ

12th  September, 2021
বাঙালির শিক্ষক
সমৃদ্ধ দত্ত

স্কটল্যান্ডের এবর্ডিন থেকে ২৫ বছর বয়সে বহু দূরের একটি শহর কলকাতায় যখন ডেভিড হেয়ার এলেন, তার কিছুকাল আগেই এই প্রদেশটিতে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ ঘটে গিয়েছিল। তাঁর বাবা ছিলেন ঘড়ি নির্মাতা। চার পুত্র জোশেফ, আলেকজান্ডার, জন ও ডেভিড কমবেশি ঘড়ি-বিশেষজ্ঞ। বিশদ

05th  September, 2021
পেগাসাস, রাজকন্যা
ও চুপকথা

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স— নিভ-সালেভ-ওমরির নামের আদ্যক্ষর মিলিয়ে তৈরি ইজরায়েলের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা এনএসও। কেবল উগ্রপন্থী বা পেডোফাইলস (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) পাকড়াতে বিভিন্ন দেশের সরকারকেই নাকি পেগাসাস বিক্রি করা হয়। আরবের রাজকুমারী লতিফা, খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি বা মরক্কোর ইতিহাসবিদ্‌ মাতি মনজিব—সকলেই তাহলে ছিলেন পেডোফাইলস বা উগ্রপন্থী? আরব-ইজরায়েল সম্পর্ক সাপে-নেউলে। অথচ, পেগাসাস কেনাবেচার সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মহম্মদ বিন রশিদ প্রাণের বন্ধু। গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাই আজ বিপন্ন। ‘জিরো ক্লিকে’ই পেগাসাস ঢুকে পড়েছে কুলীন আইফোনের বাসরঘরে। রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানানো পেগাসাসের কাণ্ডকারখানার তত্ত্বতালাশে কলম ধরলেন মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

29th  August, 2021
অবিস্মরণীয় চিত্রামৃত
শংকর

অনন্তকালের মহামানবদের বাণী প্রচারে অনেক সময় লেগে যায়। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় তার ব্যতিক্রম নন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পাঁচ টাকা মাইনের পূজারী তাঁর অবসর সময়ে ভক্তজনদের কিছু বললেন, একজন স্কুল মাস্টার তা শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনে বাড়ি ফিরে এসে নোটবইতে লিপিবদ্ধ করলেন। বিশদ

22nd  August, 2021
সারদা মায়ের 
স্বদেশি সন্তান
সমৃদ্ধ দত্ত

বরিশালের বানবীপাড়ার যোগেন্দ্রনাথ গুহঠাকুরতা ছিলেন স্বদেশপ্রেমী। সুতরাং নিজের কন্যাটিকেও সেভাবেই তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। অন্য বালিকাদের সঙ্গে বড় হওয়ার সময় শিশুদের গ্রাম্য খেলাধুলোয় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি, বাবার কাছে মেয়েটি দেশভক্তির আকুলতাও শিখেছিল। যা সেই ছোট থেকেই তার মনের মধ্যে গেঁথে যায়। মেয়ের নাম প্রফুল্লমুখী। বিশদ

15th  August, 2021
অস্তকালের রবি
পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়

বারান্দায় বসে সন্ধ্যার সময় সুনন্দা, সুধাকান্ত ও ক্ষিতিমোহনবাবুর স্ত্রীকে মুখে মুখে বানিয়ে একটা দীর্ঘ গল্প শুনিয়ে তারপরে বাদলা বাতাস ঠান্ডা বোধ হওয়াতে ঘরে গিয়ে কেদারাতে বসেছিলুম, শরীরে কোনো প্রকার কষ্ট বোধ করিনি, অন্তত মনে নেই; কখন মূর্চ্ছা এসে আক্রমণ করল কিছুই জানি নে। 
  বিশদ

08th  August, 2021
ঘড়ির দর্পণে কলকাতা

‘বৈঠকখানায় মেকাবি ক্লাকে টাং টাং টাং করে পাঁচটা বাজলো, সূর্যের উত্তাপের হ্রাস হয়ে আসতে লাগলো। সহরের বাবুরা ফেটিং, সেলফ ড্রাইভিং বগী ও ব্রাউহ্যামে করে অবস্থাগত ফ্রেণ্ড, ভদ্রলোক বা মোসাহেব সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে বেরুলেন; কেউ বাগানে চল্লেন।’— মহাত্মা হুতোম লিখেছেন। 
বিশদ

01st  August, 2021
লোককথায় গাঁথা মহাকাব্য

‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ কেবল বাঁশবাদির কাহারদের জীবন আখ্যান নয়, এ এক মহাসময়ের সম্পাদ্য। আখ্যানের প্রতিটা বাঁকে মহাকাব্যিক চলন। মানুষের ক্রমে সভ্যতার পথে পা বাড়ানোর ইতিহাসে আগুন আবিষ্কারের আগে থেকেই তার দৃষ্টিশক্তি অন্ধকারেও প্রখর ছিল।
বিশদ

25th  July, 2021
অচেনা তারাশঙ্কর

আমার জীবনে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব এমনই যে, তাঁর স্নেহধন্য হয়ে আজও নিজেকে আমি অতি সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। আমার তখন কতই বা বয়স, হাওড়া শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি।
বিশদ

25th  July, 2021
অশান্ত স্মৃতি
সোভিয়েত পতনের ৩০ বছর

দড়ি ধরে মারো টান, লেনিন হবে খানখান! এগারো ফুট উঁচু লাল গ্রানাইটের মূর্তিটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল জনতা। কেউ আনন্দে হাততালি দিয়েছেন, তো কেউ আবার প্রাণখুলে গেয়েছেন জাতীয় সঙ্গীত।
বিশদ

18th  July, 2021
অচেনা সীমান্তে
অজানা গল্প

সীমান্ত....! দু’দেশের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া। আর তার দু’দিকে বাস হাজার হাজার মানুষের। যেখানে কাঁটাতার নেই, সীমান্তের ‘উঠোন’ যেখানে উন্মুক্ত, সেখানে বাস করা যে কী কঠিন, কী যন্ত্রণাদায়ক, তা বোধহয় আমার-আপনার মতো বহু মানুষই জানেন না। বিশদ

04th  July, 2021
আদুর বাদুড়
চালতা বাদুড়

মাম্পস-র‌্যাবিস-নিফা-ইবোলা-হেন্ড্রা-সার্স-মার্স-কোভিড প্রভৃতি মারণ ভাইরাসের সূতিকাগার বাদুড়ের শরীর। অথচ বাদুড়ের টিকিটিও কস্মিনকালে তারা স্পর্শ করতে পারেনি। বাদুড় থেকে মানুষে সরাসরি সংক্রমণের নেই কোনও প্রাক-ইতিহাস। মধ্যবর্তী পোষক উট-ঘোড়া-শিম্পাঞ্জি-শুয়োর-পিপীলিকাভুক থেকেই সংক্রমিত হয়েছে মানুষ। নির্বিচারে অরণ্যনিধন, জীববৈচিত্র্যের সমূল বিনাশই প্রতিটা মহামারীর নেপথ্যের এক এবং অদ্বিতীয় কারণ। মানুষের কি সম্বিত ফিরবে না? সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

27th  June, 2021
একনজরে
দীর্ঘ ১২ বছর পর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড জার্সিতে ফিরেই জাল কাঁপিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। প্রথম তিনটি ম্যাচে চারটি গোল লেখা হয়েছিল তাঁর নামের পাশে। ...

২০১৬ সালে নবম ও দশম শ্রেণির জন্য ইতিহাসের শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। ওই বছরেই নেওয়া পরীক্ষার উত্তরপত্রে ভুল থাকার অভিযোগ ওঠে। মামলা ...

ফার্স্ট সেক্রেটারি স্নেহা দুবের পর রাষ্ট্রসঙ্ঘে কাশ্মীর ইস্যুতে ফের পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ শানাল ভারত। জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে — এই দাবিতে ইউএনএইচআরসির ৪৮তম সাধারণ বিতর্ক সভায় সরব হয় পাকিস্তান। ...

মালদহের চাঁচল থানার পুলিস অভিযান চালিয়ে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল  সামাদ আলি, মর্তুজা আলি ও সাহেব আলি। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

আন্তর্জাতিক কফি দিবস
বিশ্ব হার্ট দিবস
বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস

১৭২৫- ভারতের প্রথম ইংরেজ শাসক রবার্ট ক্লাইভের জন্ম
১৮৪১ - ভারতে প্রথম সর্বোচ্চ ফরাসি সম্মান - 'লেজিয়ঁ দনার' এ সম্মানিত বাঙালি উদ্যোগপতি দুর্গাচরণ রক্ষিতের জন্ম
১৮৯২: প্রথম রাতে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়
১৯২৯: বিবিসি প্রথম পরীক্ষামূলক টিভি সম্প্রচার শুরু করে
১৯৩২: অভিনেতা মেহমুদের জন্ম
১৯৩৫ - ছাপাখানায় প্রথম বাংলা লাইনোটাইপ ব্যবহৃত হয়
১৯৩৯ - ব্রিটেনে পরিচয়পত্র প্রথা চালু হয়
১৯৪২ - স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরা শহীদ হন
১৯৭১: ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গে ঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে অন্তত ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭২.৯৯ টাকা ৭৪.৭০ টাকা
পাউন্ড ৯৯.৪৫ টাকা ১০২.৯৪ টাকা
ইউরো ৮৪.৭৮ টাকা ৮৭.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৬,৮০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৪, ৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৫,০৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬০,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬০,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১২ আশ্বিন ১৪২৮, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১। অষ্টমী ৩৭/২৭ রাত্রি ৮/৩০। আর্দ্রা নক্ষত্র ৪৪/৪৬ রাত্রি ১১/২৬। সূর্যোদয় ৫/৩০/৫৮, সূর্যাস্ত ৫/২৩/১৪।  অমৃতযোগ দিবা ৬/১৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৬ গতে ৭/৫৩ মধ্যে পুনঃ ১০/১৫ গতে ১২/৩৯ মধ্যে। রাত্রি  ৬/১১ গতে ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৮/৩৭ গতে ৩/৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/১৮ গতে ৭/৬ মধ্যে পুনঃ ১/২৬ গতে ৩/৪৭ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৯ গতে ৯/৫৮ মধ্যে পুনঃ ১১/২৮ গতে ১২/৫৭ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৯ গতে ৪/০ মধ্যে। 
১২ আশ্বিন ১৪২৮, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১। অষ্টমী  অপরাহ্ন ৪/৩৭। আর্দ্রা নক্ষত্র রাত্রি ৯/১৮। সূর্যোদয় ৫/৩১, সূর্যাস্ত ৫/২৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/২১ মধ্যে ও ৭/৮ গতে ৭/৫৪ মধ্যে ও ১০/১৪ গতে ১২/৩৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১ গতে ৬/৫১ মধ্যে ও ৮/৩০ গতে ৩/৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ  দিবা ৬/২১ গতে ৭/৮ মধ্যে ও ১/১৯ গতে ৩/৩৯ মধ্যে। কালবেলা ৮/২৯ গতে ৯/৫৯ মধ্যে ও ১১/২৮ গতে ১২/৫৭ মধ্যে। কালরাত্রি  ২/২৯ গতে ৪/০ মধ্যে। 
২১ শফর।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ছে ভবানিপুরে
রাত পোহালেই ভবানিপুরে উপনির্বাচন। তার আগে কেন্দ্র বাহিনী বাড়ানো হচ্ছে ...বিশদ

05:54:46 PM

তৃণমূলে যোগ দিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
তৃণমূলে যোগ দিলেন লুইজিনহো। আজ, বুধবার গোয়ার এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ...বিশদ

04:49:35 PM

ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে চালু হোক বিমান পরিষেবা, আর্জি তালিবানের
ফের চালু করা হোক ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বিমান পরিষেবা। ...বিশদ

03:02:47 PM

রঘুনাথপুরে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ায় মৃত্যু গবাদি পশুর
গতকাল রাত থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার জের। যার ...বিশদ

02:33:00 PM

মালদহে ব্রাউন সুগার ও এক লক্ষ টাকার জাল নোট সহ গ্রেপ্তার ৩
৩৫১ গ্রাম ব্রাউন সুগার ও এক লক্ষ টাকার জাল নোট ...বিশদ

02:17:37 PM

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গাপুজোর মণ্ডপ
দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নিম্নচাপের জেরে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ...বিশদ

02:07:46 PM