প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
মেকআপ করেছেন। অথচ আপনাকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। ঠিক এমন নো মেকআপ লুক এখন পছন্দ করছেন নানা বয়সের মহিলা। এতে একদিকে যেমন কম মেকআপ ব্যবহারের ফলে ত্বক ভালো থাকবে, অন্যদিকে স্মার্ট লুকে অফিস থেকে বিয়েবাড়ি, সবেতেই হবে নজরকাড়া সাজ। পুজো আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। বছরে এই চারটে দিনের জন্য আলাদা করে সাজ রুটিন তৈরি করতে হবে। সেখানেও বাজিমাত করবে নো মেকআপ লুক। খুব সহজেই বাড়িতে কোনও পেশাদারের সাহায্য ছাড়াও এই লুক তৈরি করতে পারেন। এই বিষয়ে নৃত্যশিল্পী তথা অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের নানা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে। শ্রীনন্দার কথায়, ‘আমি আলাদা করে কোথাও মেকআপ শিখিনি। ছোট থেকে স্টেজ, নাচ, মেকআপ এগুলো দেখেছি। মাকে দেখেছি। ফলে আগ্রহ ছোট থেকে ছিল। ছোটবেলায় দিদিমার পেটের উপর বসে ওঁর মুখের উপর ভুরু, ঠোঁট এঁকে দিতাম। পরে মেকআপের ছোটখাট কোর্স করেছি। তারপর নিজের উপর অ্যাপ্লাই করতে শুরু করি। সেটার ভিডিওগুলোই জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে।’
নো মেকআপ লুক শ্রীনন্দার সবথেকে পছন্দের। এই লুক তৈরির সহজ গাইডলাইন দিলেন তিনি। শ্রীনন্দার কথায়, ‘নো মেকআপ লুকটাকে বলে সফট গ্ল্যাম লুক। নো মেকআপ লুকেও কিন্তু মেকআপ লাগে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ত্বককে মসৃণ দেখানো। বেশি উজ্জ্বল রং ব্যবহার না করে মুখের ফিচার হাইলাইট করাটাই নো মেকআপ লুক-এর উদ্দেশ্য।’ তিনি জানালেন, যদি কারও ত্বক পরিষ্কার থাকে, তাকে বেশি ফাউন্ডেশন দিতে হবে না। কারও মুখে যদি পিগমেন্টেশন কিংবা স্পট থাকে সেগুলো কভার করতে হবে। বেসটা পারফেক্ট হওয়া জরুরি। বেস মেকআপ এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম হবে। এরপর কনট্যুর করতে হয়। নাক, ঠোঁট, গালের মতো ফেসিয়াল ফিচারগুলো যাতে শার্পভাবে বেরিয়ে আসে সেটার জন্যই কনট্যুর গুরুত্বপূর্ণ। এরপর চোখের উপর হালকা আইশ্যাডো আর মাস্কারা দিলেই নো মেকআপ লুক বিষয়টা বেরিয়ে আসবে। এই ধরনের লুকে লিপস্টিকের ব্যবহারে বিশেষ যত্ন নিন। শ্রীনন্দা বলেন, ‘ভালো করে লিপ লাইন করে ন্যুড লিপস্টিক লাগানো যেতে পারে। কিন্তু ন্যুড লিপস্টিক সরাসরি লাগানো উচিত নয়। বেসে ন্যুড লিপস্টিক দিন। তারপর ডার্ক লিপস্টিক দিতে হবে। এরপর আবার বেসের ন্যুড লিপস্টিক দিয়ে ডার্ক শেডের লিপস্টিক ঢেকে দিলে ওয়াশড আউট লুকটা তৈরি হবে। ফ্যাকাশে ঠোঁটটাই এই লুকের বিশেষত্ব। সঙ্গে ভালো ব্লাশ অন লাগবে।’
পুজোয় বাঙালি কন্যেরা শাড়ি পরতেই ভালোবাসেন। সেক্ষেত্রে শ্রীনন্দার পরামর্শ অবশ্যই নো মেকআপ লুক ট্রাই করুন। কারণ ব্যাখ্যা করে বললেন, ‘আমি শাড়ির সঙ্গে বেশিরভাগ নো মেকআপ লুক করি। কারণ শাড়ি এমনিতেই ভারী হয়। তার সঙ্গে বেশি মেকআপ করলে পোশাক এবং সাজ সব মিলিয়ে বাড়াবাড়ি মনে হয়। কম মেকআপ বলব না। কিন্তু শাড়ির সঙ্গে নো মেকআপ বা ন্যাচারাল মেকআপ ব্যালেন্স করে। তার সঙ্গে একটা টিপ পরলেই ফ্রেশ লুক তৈরি হয়।’ দিনে নো মেকআপ লুক করে পুজোর কাজ করলেন। আর রাতে কাজল দিয়ে একটা ডার্ক শেডের লিপস্টিক লাগালেই প্যান্ডেল ঘুরে ঠাকুর দেখা বা রাতভর আড্ডার জন্য আপনি তৈরি।
যে কোনও বয়সেই নো মেকআপ লুক ভালো মানাবে। বয়সটা আসলে সাজের ক্ষেত্রে কোনও আলাদা বিষয় নয়। শ্রীনন্দার কথায়, ‘আসল বিষয় হল ব্যক্তিত্ব। কাকে কোনটা মানাবে, সেটা মাথায় রেখে মেকআপ করতে হবে। ৩৫-৪০ বছর বয়স হয়ে গেলে ফাউন্ডেশন কম ব্যবহার করলে ভালো। নাহলে মুখের বলিরেখা বেরিয়ে আসে। প্যাচ হয়ে যায়। কিন্তু এমনও হতে পারে বয়স হলেও কেউ ত্বককে সুন্দর রেখেছেন। আসলে কোনটা ক্যারি করতে পারছেন, এটা তার উপর নির্ভর করে। ফলে এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা।’
সারা বছর ত্বকের যত্ন কিন্তু সাজের গোড়ার কথা। যত্নে থাকলে তবেই ত্বকে মেকআপ ভালো বসবে। এটা একদিনের বিষয় নয়। তাই এখনও হাতে যতটা সময় আছে, ত্বকের যত্ন নিন। শ্রীনন্দার পরামর্শ, ‘ত্বকের ধরন আগে বুঝতে হবে। তারপর যে ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট কিনবেন, তারাই রুটিন গাইড করে দেবে। আমার শুষ্ক ত্বক। আমি সেই অনুযায়ী যত্ন নিই। চুল পড়ে যাওয়া, ব্রণর সমস্যা, মেচেতার দাগ এসব বেশি হলে আগেই ত্বকের উপর নানা রকম প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই না করে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে ডাক্তার দেখানো উচিত। কারণ অনেক সময় শরীরে নানা জিনিসের ঘাটতি থেকেও এগুলো হয়। আগেই আমরা মেকআপের প্রোডাক্ট কিনতে শুরু করে দিই। সেটা ঠিক নয়।’
দুর্গাপুজোর চারটে দিন কলকাতায় মা তনুশ্রী শঙ্করের কাছে সাধারণত থাকেন শ্রীনন্দা।
বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়। বছরভর জমিয়ে রাখা গল্প সেরে নেন পুজোর ছুটিতে। মুম্বইয়ের দৈনন্দিন জীবন থেকে এ যেন তাঁরও বাপের বাড়ি ফেরা। এবারের পরিকল্পনা কী? হেসে অভিনেত্রী বলেন, ‘এই বছর মুম্বইতেও আমরা নাচের স্কুল শুরু করেছি। ফলে দু’দিন মুম্বই, দু’দিন কলকাতা, এভাবে হয়তো থাকব। এখনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করিনি। যেখানেই থাকি, পুজোয় আনন্দ করবই।’