বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
গুরুর্ব্রহ্মা গুরুবিষ্ণু গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ
গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ
ভগবদ্বুদ্ধিতে গুরুর পূজা, গুরুর ধ্যান ও চিন্তা করতে করতে দেহ মন যখন শুদ্ধ হয়ে যায়, তখন গুরু শিষ্যকে ইষ্টদর্শন করিয়ে দিয়ে সরে যান। শুদ্ধ আধার, শুদ্ধ মন না হলে তাঁর দর্শন পাওয়া যায় না।
ঠাকুর বলতেন—‘‘সদগুরু হলে জীবের অহঙ্কার তিন ডাকে ঘুচে যায়।’’ গুরু কাঁচা হলে গুরুরও যন্ত্রণা, শিষ্যেরও যন্ত্রণা। কাঁচা গুরুর হাতে পড়লে শিষ্যের অহঙ্কার যায় না, সংসার-বন্ধন ঘোচে না। যারা ঈশ্বরলাভ করেনি, তাঁর আদেশ পায়নি, তাঁর শক্তিতে শক্তিমান হয়নি, তাদের সাধ্য কি যে অপরের সংসার-বন্ধন মোচন করে। কানা কানাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলে হিতে বিপরীত হয়। নিজে মুক্ত হলেই তবে অপরকে মুক্ত করা যায়—সে সম্বন্ধে উপদেশ দেওয়া যায়। যদি কারও ঠিক ঠিক অনুরাগ আসে, সাধনভজন করবার ইচ্ছে নয়, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি সদ্গুরু জুটিয়ে দেন। গুরুর জন্য সাধকের চিন্তা করবার কোন দরকার নেই। যাদের সদগুরু লাভ হয়েছে তাদের আর ভাবনা কি। রাস্তা তো তারা পেয়েছে। সে রাস্তা ধরে এখন তারা চলুক। ‘‘সংসার কেমন?—যেমন আমড়া। শস্যের সঙ্গে খোঁজ নেই কেবল আঁটি আর চামড়া—খেলে হয় অম্লশূল।’’ তোরা ছেলেমানুষ। তোদের মন এখন নিজের কাছে আছে, এখন থেকে যদি চেষ্টা করিস তো সহজে তাঁকে লাভ করতে পারবি। ছেলেবেলায় মন অল্পতে স্থির হয়। একটু বয়স হলে তখন কিছু করা শক্ত হবে। বৈষ্ণবদের বেশ একটি কথা আছে—
‘‘গুরু, কৃষ্ণ বৈষ্ণবের তিনের দয়া হল
একের দয়া বিনে জীব ছারেখারে গেল ’’
গুরু তো যথেষ্ট কৃপা করেছেন, ভগবানের কৃপায় সদিচ্ছাও জেগেছে, সাধুসঙ্গও মিলেছে, এখন একের দয়া কিনা মনের দয়া হলেই হয়। মনকে বশে আনতে পারলে তবে এঁদের দয়া বুঝতে ও ধারণা করতে পারা যায়। যে কোন উপায়ে মনকে বশে আনতে হবে।
স্বামী ব্রহ্মানন্দের ‘ধর্মপ্রসঙ্গ’ গ্রন্থ থেকে