বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
কীর্তন-গ্রন্থ ‘শ্রীহরিকথা’ শ্রীগ্রন্থের অঙ্গীভূত দু-একটি উপদেশ বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
(১) আসন্ন প্রলয়ঙ্কর ধ্বংসের সংবাদ।
(২) ধ্বংসের করাল গ্রাস হইতে রক্ষাকল্পে হরিনাম গ্রহণের উপদেশ।
প্রলয়-বার্তাটি একটি ভবিষ্যদ্বাণী স্বরূপ। উহা জগতে বর্তমান দুরবস্থারই জ্ঞাপক মনে হয়। বাণীর মর্ম এই যে, জগদ্ব্যাপী ভীষণ ধ্বংসের যুগ আরম্ভ হইয়াছে। ঘোর কলির অবসান। যুগসন্ধিক্ষণ। এই সন্ধিক্ষণে মানবসভ্যতা ধ্বংসোন্মুখ হইবে। চারি দিকে ভয়, কলির তাণ্ডব-নৃত্য। মানবসৃষ্টির শ্রেষ্ঠ অবদানসকল পদদলিত হইবে। মানবসমাজে নর-নারীর ঘোরতর দুর্দিন দেখা দিবে।
এই মহাবিপদ্ হইতে রক্ষা পাইবার উপায়ও পরম দয়াল শ্রীশ্রীপ্রভু নির্দেশ করিয়াছেন। শ্রীশ্রীপ্রভুর সার্বজনীন উপদেশরাশির সার চুম্বক—চারটি কথায় প্রকাশ করা চলে— ১। ব্রহ্মচর্য পালন, ২। শরণাগতি গ্রহণ, ৩। হরিনাম সংকীর্তন ও ৪। ব্রজের ভজন। ব্রহ্মচর্যব্রত পালনের দ্বারা বীর্যশক্তি স্থির হইলে দেহমন সতেজ ও শক্তিমান হয়। ক্ষয়োন্মুখ জাতির ইহা ছাড়া প্রকৃত শক্তিসঞ্চয়ের আর কোন উপায় নাই।
ভগবচ্চরণে আত্মসমর্পণে মিথ্যা অহঙ্কার দূরীভূত হয়। আনন্দ-সমুদ্র উদ্বেলিত হইয়া উঠে। শরণাগতির পথে আত্মদানে আত্মস্বরূপের উপলব্ধি হয়। উচ্চ-নীচ ব্রাহ্মণ-শূদ্র নির্বিশেষে ভজনের এক সাম্যক্ষেত্রে মিলিত হইবার কীর্তন ছাড়া আর দ্বিতীয় পন্থা হিন্দুধর্মে দৃষ্ট হয় না। জাতি সংগঠনের ইহা অমোঘ অস্ত্র।
ব্রজের রাগাত্মিকা-রাজ্যের অনুগত ভজনে নন্দনন্দনের বিলাসমাধুরী আনন্দ-চিন্ময়-রস প্রেম-মধু আস্বাদিত হয়। সাধ্য বস্তুর ইহাই চরম। সাধন-রাজ্যের ইহাই পরম পরাকাষ্ঠা।