উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
প্রজারা বুঝল আশুতোষ শিব শুধু নন, তাদের রাজাও আশু তুষ্ট হবেন এই দুগ্ধস্নানব্রতে অংশ নিলে। অতএব শ্রাবণের সোমবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে শিবমন্দিরের পথে মানুষের ঢল নামল। বালক-যুবা-বৃদ্ধ সকলেই চলল দুধের ঘড়া মাথায় নিয়ে। মা-বোনেরা ঘরের কাজ ভুলে দুধের কলসি-মাথায় পথে নামল। দুগ্ধপোষ্য শিশুর তৃষ্ণা, গোবৎসের ‘হাম্বা’-রব—কারও কানে গেল না, কোনও পাত্র একফোঁটা দুধও পড়ে রইল না তাদের জন্য। রাজা প্রসন্ন হবেন, অতএব ঢালো সব দুধ মহাদেবের মাথায়!
কিন্তু কী আশ্চর্য, এত দুগ্ধস্নানেও গর্ভমন্দিরতল তো ভরে উঠল না! প্লাবিত হল না দুধের বন্যায়! এ কী অলৌকিক কাণ্ড! রাজা ভাবেন, মন্ত্রী ভাবেন, রাজ্যের প্রজারা ভাবেন—তবে কি কোনও দুর্লক্ষ্য ছিদ্রপথে দুধ কোথাও নিমেষে উধাও!! তন্নতন্ন করে খোঁজা হল—কিন্তু কোনও ছিদ্র কারও চোখে পড়ল না। রাজার মন বিষাদে ছেয়ে গেল—নিশ্চয় এ দেবতার অভিপ্রায়। আমারই সেবায় কোনও প্রমাদ ঘটেছে, দেবতা তাই অপ্রসন্ন।
এদিকে প্রভাতের সূর্য মধ্যাহ্নগগনে পৌঁছল—প্রজারা মন্দির থেকে একে একে ঘরে ফিরছে। অনেক দূরে নগরীর আর এক প্রান্তে নাতিনাতনি, ছেলেপুলে নিয়ে বাস করতেন এক বৃদ্ধা। রাজার ইচ্ছার কথা তিনিও শুনেছেন, কিন্তু সকালে উঠেই যে মন্দিরে ছুটবেন, সে-অবকাশ তাঁর কোথায়? প্রতিদিন উদয়াস্ত তাঁর অজস্র কাজ। প্রত্যেকটি কাজ তিনি আজও নিজের হাতে করেন পরম নিষ্ঠায়। ঘরকন্নার সব কাজ সেরে, পরিবারের সকলকে খাইয়ে, শিশুসন্তানের জন্য পরিমিত দুধটুকু সযত্নে পাত্রে ধরে রেখে, পোষা পশুপাখিকে খেতে দিয়ে, গোয়ালঘরে গরুর খড়বিচালি আছে কি না দেখে, বাছুর যাতে দুধ পায় তার ব্যবস্থা করে—তবে তাঁর সুযোগ হল নদীতে স্নান করতে যাওয়ার।