উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
হে করুণানিধান! তোমার নির্দ্দেশ অবহেলা ক’রে, অহংকার অভিমানে মত্ত হ’য়ে যখন বিপথে ছুটে গিয়েছি, তখন তুমিই তো ব্যস্ত হ’য়ে ত্রস্ত পদে এগিয়ে গিয়ে আমায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছ। আবিলতা, পঙ্কিলতা যখন আমায় চারিদিক থেকে ঘিরে ধরেছে, স্তূপীকৃত পাপতাপ, পুজ্ঞীভূত জজ্ঞাল-জাল যখন জীবনকে দুর্ব্বহ ক’রে তুলেছে, তখন হে আমার প্রিয়তম! তুমিই তো তোমার সুকোমল স্নেহশীল কর সঞ্চালনে সমস্ত জ্বালামালা জুড়িয়ে আমায় শান্তি ও সান্ত্বনা দিয়েছ।
কত আর বলবো, হে আমার দয়িত! কত শত বার বৃথা মোহে মুগ্ধ হ’য়ে তোমাকে হৃদয়াসন থেকে নির্ব্বাসন কোরে অন্যের জন্য সাগ্রহে আসন পেতে দিয়েছি, কত সহস্রবার প্রেম-প্রীতি-স্নেহ-করুণা বিস্মৃত হয়ে মায়া-মরীচিকার পিছনে ছুটে গিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। কিন্তু, তবুও তো তুমি আমায় কখনও ভুলোনি, বিশ্বাসঘাতক বলে অবিশ্বাস ক’রে ঘৃণাভরে (আমায়) দূরে তাড়িয়ে দাও নি। হে আমার প্রিয়তম! চিরকালই তুমি আমায় সমস্ত প্রবঞ্চনা, প্রতারণা সমস্ত অনাদর অশ্রদ্ধা উপেক্ষা ক’রে সাদরে কোলে টেনে নিয়েছ, চিরকালই তুমি আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা ক’রে, সমস্ত দোষত্রুটি ভুলে গিয়ে এই ‘‘চির অপরাধী পাতকীর বোঝা’’ হাসিমুখে ব’য়ে চলেছ! কিন্তু হায়! তবুও আমি তোমায় বুঝলাম কই? বুঝেও সমস্ত প্রাণমন দিয়ে দরদ করলাম; ভালবাসলাম কই? ‘‘তুমি যে আমার, আমি যে তোমার, সকলের চেয়ে বেশী আপনার’’—একথা সমস্ত হৃদয় দিয়ে নিবিড়ভাবে অনুভব করতে পারলাম কোথায়? বুঝে না বুঝে অনভীপ্সিত পথে চলে প্রতিনিয়ত তোমার ঐ স্নেহকোমল হৃদয়ে কত না আঘাত করেছি, ইচ্ছায় অনিচ্ছায়, স্বেচ্ছায় পরেচ্ছায় কত শত বারই না তোমার ঐ দরদভরা বুকে মর্ম্মান্তিক শেল হেনেছি। কিন্তু, তবুও তুমি অকৃতজ্ঞ আমায় স্নেহালিঙ্গন দানে কুণ্ঠিত হওনি।
স্বামী আত্মানন্দের ‘জীবন সাধনার পথে’ থেকে