অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
সঙ্ঘ ও বৈরাগ্যের সাধনা
অনুধ্যানের, অনুসন্ধানের ও বিশ্লেষণের বিষয় আরও আছে। কারণ, বৈরাগ্যের সাধনা যে কৃচিৎ দৃষ্ট হয়! একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জনৈক বিশিষ্ট কর্মীকে বলিতে শুনিয়াছি, সে জাতিস্মরের খোঁজে বাহির হইয়াছে। শুনিয়া হাসি পাইল। পূর্বজন্মের কথা জানার কত ঔৎসুক্য। আধ্যাত্মিকতার ভিত্তি যে বৈরাগ্য তা লাভের আগ্রহ কোথায়? ভারতীয় আর একটি যোগী পাশ্চাত্য জগতে নাম ফলাইবার মতলবে তৎপ্রবর্ত্তিত সাধনাপদ্ধতিতে বৈরাগ্যের প্রয়োজনীয়তা নাই, এই কথাই বলিয়া বেড়াইতেছেন। অপর একটি প্রতিষ্ঠান ‘বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি সে আমার নয়’—কথাটাই নানাভাবে বলিয়া উচ্চ আধ্যাত্মিকতার কথাই প্রচার করিতেছেন। অপর একটি সাধু আমেরিকায় দাঁড়াইয়া বৈরাগ্য সাধনার নাম মাত্র না করিয়া বিভিন্ন দেশে কতকগুলি আত্মজ্ঞানকেন্দ্র খুলিয়া বেড়াইতেছেন। Robin Kimmerlingনামে একটি ইংরেজ যুবক লন্ডনের একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য বলিতে গিয়া বলিল যে ইংরেজদের ভারতের উপর নির্ভর না করিয়া (অর্থাৎ বৈরাগ্যের সাধনাকে পাশ কাটাইয়া) ভিতর হইতেই আত্মদর্শী পুরুষ বাহির করিবার চেষ্টা চলিতেছে। ওকালতি পাশ করা আর একজন সাধু পাশ্চাত্য জগতে একটু একটু ‘নাম’ করিতেছিলেন মাত্র। তাঁহার ওকালতী বুদ্ধি ও বক্তৃত্বশক্তির উপর নির্ভর করিয়াই একটি ব্যবসায়ী কীর্ত্তনীয়া বৈরাগ্যের দিকে পা পর্য্যন্ত না বাড়াইয়া কেবল কীর্ত্তনের দ্বারাই ইংল্যাণ্ড, আমেরিকা, ওয়েষ্ট ইণ্ডিজ প্রভৃতি দেশে নির্বিচারে কেন্দ্র খুলিয়া ও শিষ্য করিয়া বেড়াইতেছেন। বক্তব্য এই যে, এই সব প্রতিষ্ঠানের এমন সাধনা নাই, বা সাধনা একটু আধটু থাকিলেও এই কথা মুক্ত কণ্ঠে বলিবার সাহস নাই যে ‘ভুবি বৈরাগ্যম্ অভয়ম্ কেবল্’।
স্বামী নির্ম্মলানন্দের ‘শ্রীশ্রীপ্রণবানন্দের-শত রূপে, শত মুখে’ থেকে