বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আবার সব অবতারেরা নিজের নিজের মত প্রকাশ্যে প্রচার করে গিয়েছেন। ইনি নিজের কথা কখনও প্রচার করেন নাই। যারা ভালবাসে শুন্তে তাদের কাছে বলতেন। কেশব বাবু কাগজে তাঁর কথা লেখায়, তাকে তাঁর নিকটে আসতে মানা করেছিলেন। একদিন রাত দুপুরে উঠে দেখি পায়চারী কচ্চেন, আর থু থু করে শব্দ করচেন, আর বলচেন, ‘‘লোক মান্যি দিসনে মা, লোক মান্যি দিসনে মা’’ তখন অর্দ্ধবাহ্য দশা। আমার বোধ হ’ল যেন মা আনন্দময়ী মান-যশের ধামা নিয়ে তাঁর পেছনে পেছনে ঘুরচেন, আর বলচেন, এই নে বাবা তোর জন্য মান যশ এনেছি।’’ আর তিনি আরও উচ্চস্বরে থু থু কচ্চেন, আর ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মুখে ঘোর বিরক্তির চিহ্ন। কখনও মানযশের দিকে যেওনা। মানযশ হজম করা কি সোজা ব্যাপার? যাঁরা নামরূপের পারে চলে গেছেন, তাঁদের নামে কিছু কর্ত্তে পারে না। ঠাকুর বলতেন, ‘‘ফুল ফোটাও, মৌমাছি আপনি আসবে। চরিত্র গঠন কর, সুন্দর চরিত্র দেখে জগৎ মুগ্ধ হয়ে যাবে।’’
‘‘যেনাশ্রুতং শ্রুতং ভবত্যমতং মতমবিজ্ঞাতং বিজ্ঞাতমিতি কথং নু ভগবঃ স আদেশো ভবতীতি।’’
ঈশ্বর দর্শনে, আত্মার দর্শনে অনন্ত জ্ঞানপুস্তক খুলে যাবে। কারণ, যিনি জ্ঞানস্বরূপ তিনিই আবার তোমারই ভিতরে বর্ত্তমান। মহাপুরুষদের লিখিত কোটী পুস্তক পড়লেও ভগবানের ঠিক ঠিক ধারণা হবে না। মহাপুরুষেরা যাঁকে জেনেছিলেন তাঁকে তোমাদেরও জান্তে হবে! তবে সবর্ব রহস্য-কপাট উদ্ঘাটিত হবে।
‘‘জ্ঞেয়ং যত্তৎ প্রবক্ষ্যামি যজ্জ্ঞাত্বামৃতমশ্নুতে।
অনাদিমৎ পরং ব্রহ্ম ন সত্তন্নাসদুচ্যতে।।
চাবি-কাটি তাঁর হাতে। তাঁর কৃপা ভিক্ষা করতে হবে, ‘‘আত্মা-কে বরণ কর্ত্তে হবে।’’ ঈশ্বর কোন নিয়মের অধীন নন যে শতবার নাক টিপেছি কিম্বা লক্ষবার কর গুণেছি, আর তিনি উড়ে আসবেন। চাই হৃদয়, চাই ব্যাকুলতা, আন্তরিকতা।
ব্রহ্মচারী জ্ঞান মহারাজের ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেব’ থেকে