কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
মিলার কাছাকাছি যারা ছিলো তারা জানতে চাইলো এই সব অনৈসর্গিক রূপান্তরের তাৎপর্য। তিনি বললেন, ‘পৃথিবীতে যেমন তোমরা এসেছো, তেমনি সূক্ষ্ম রাজ্যের বহু অশরীর আত্মা অতীন্দ্রিয় রাজ্যের নৈবেদ্য নিয়ে আমার সম্বর্ধনার জন্য মহাশূন্যের স্তরে স্তরে সমবেত হয়েছেন। তাঁদের চারিদিকে যে স্বচ্ছ আনন্দলোক তারই প্রভাবে এখানকার আকাশ-বাতাস বর্ণসমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে: তোমাদের মনের আনন্দেও লেগেছে তারই স্পর্শ। এখন আর বলতে বাধা নেই যে উন্নততর সূক্ষ্মস্তরের দেবশক্তি ও মহাপুরুষেরা আমার এই ব্রহ্মবিদ্যার আলোচনা শোনাবার জন্য জ্যোতির্ময় সূক্ষ্ম দেহে সমবেত হয়েছেন। এই আনন্দ সেই অপ্রাকৃত জগতের পুষ্পবৃষ্টি।’
প্রশ্নকারীরা জানতে চাইলো, ‘তবে তাঁদের দেখতে পাই না কেন?’ মিলা বললেন, ‘পাও না কারণ অজ্ঞানের অন্ধকারে তোমাদের দৃষ্টি আবৃত হয়ে আছে। আগন্তুকদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যাঁরা অনাগামী স্তরের দেবতা, যাঁরা বহুজন্মের পুণ্যফলে আসা যাওয়ার পালা সাঙ্গ করেছেন; ওঁদের দর্শন লাভ করতে হলে মোহমুক্ত দৃষ্টি ও যথোপযুক্ত পবিত্রতা চাই, অনুচিত কর্মের বন্ধন ছিন্ন করে প্রজ্ঞার স্তরে অধিষ্ঠান হইয়া চাই, কারণ দেবতার দর্শনের জন্য দিব্যদৃষ্টি অবশ্যক। পূর্বজন্মের সংস্কার অনুসারে যাদের সৎকর্মে ও সদাচারে প্রবৃত্তি নেই—সেই মন্দমতিরা দেবলোকের মহিমা প্রত্যক্ষ করতে পারে না। বহুভাগ্যে সদিচ্ছা যখন জাগে, তখনই সমস্ত অপকর্মের সংস্কার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। যেসব বদ্ধজীব নিজের প্রকৃত অবস্থা না জেনে অপরকে পরিচালিত করতে চায়, তারা নিজেদেরও অনিষ্ট করে—অপরেরও অনিষ্ট করে। নিজেরা যদি দুঃখের হাত এড়াতে চাও, তা হলে অপরের অনিষ্টকর কর্ম থেকে প্রতিনিবৃত্ত হও। পুণ্যের পথে চলো; অনুতপ্ত চিত্তে গুরু ও দেবতার চরণে আত্মসমর্পণ করে তপশ্চর্যার পথে এগিয়ে যাও। তখন দেখবে দেবতামণ্ডলী তোমাদের দৃশ্যপথে জেগে উঠেছেন। এর পরে যখন নিজের ধর্মকায়া মহামনের রূপে প্রকাশিত হবে, তার পরে আর দেখার কিছু বাকি থাকবে না। তখনই হবে কর্মের পরিসমাপ্তি। গানের সুরে এই কথাগুলি বলার সঙ্গে সঙ্গে, যেসব লোকের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি ছিল তাঁদের মনের শেষ আবরণটুকু নিঃশেষে অন্তর্হিত হয়ে গেল। আধারের তারতম্য অনুসারে প্রত্যেকের মনোজগতে জেগে উঠলো আধ্যাত্মিক আলোড়ন—অনাস্বাদিতপূর্ব আনন্দের অনুভূতি জাগলো প্রত্যেকের প্রাণে। নিজের তপস্যার প্রভাবে মিলা যেন একসঙ্গে সকলেরই চিত্তে মহাভাবের হিল্লোল জাগিয়ে দিলেন। সমবেত শিষ্য ভক্ত ও দেবতামণ্ডলীকে সম্বোধন করে মিলা বললেন: ‘আমি এখন বৃদ্ধ হয়েছি, এ জীবনে আর কবে আমরা এমনি করে একসঙ্গে মিলিত হবো, তার কোন নিশ্চয়তা নেই।