কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
পুলিসের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৩ সালে চারটি জঙ্গি হামলায় ৯ জন, ২০১৪ সালে পাঁচটি ঘটনায় তিন জন, ২০১৫ সালে ২৩টি ঘটনায় ২৫ জন, ২০১৬ সালে ২৫টি ঘটনায় ৪৭ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজানে হামলার ঘটনাও রয়েছে। এই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ভেঙে যায় জঙ্গি নেটওয়ার্ক।
২০১৮ সালে হামলার সংখ্যা কম হলেও যেকয়েকটি চালানো হয় তা ছিল চাঞ্চল্যকর। ওই বছর মার্চে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। হামলাকারী ‘সেলফ রেডিক্যালাইজড’ বলে পুলিসের তদন্তে বের হয়। এছাড়া একই বছরের জুনে লেখক, প্রকাশক ও বিশাখা প্রকাশনীর মালিক শাহজাহান বাচ্চুকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত পুলিসের ওপর পাঁচটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পুলিস, পথচারী ও রিকশাচালক আহত হয়েছেন। পুলিসের উপর হামলাকারী সেলটিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, ২০১৩-২০১৬ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত জঙ্গি হামলার সংখ্যা বেশি ছিল। হোলি আর্টিজানে হামলার পর সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ পদক্ষেপ ও তৎপরতায় জঙ্গি হামলা দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। জঙ্গি মোকাবিলায় ঢাকা মহানগর পুলিস ‘কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)’ গঠনের পর জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক দ্রুত ভেঙে দিতে সক্ষম হয়। এছাড়াও র্যা বের অভিযানও জঙ্গি মোকাবিলায় ভূমিকা রেখেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও ছিল তৎপর। তাই দ্রুত জঙ্গিদের হামলা কমিয়ে আনা গিয়েছে বলে পুলিসও মনে করছে। এ বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৬ সালের তুলনায় জঙ্গি হামলা ৯০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু উগ্রবাদ বেড়েছে। জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্ব সঙ্কট থাকায় এসব উগ্রবাদীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারছে না। অনেক উগ্রবাদীর প্রতিক্রিয়া অনলাইনে দেখা যায়। তাদের অনুভূতিতে আঘাত লাগলেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। তবে তাদের সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্যারেশমেটিক লিডারের অভাব রয়েছে। পুলিসের তৎপরতা রয়েছে।’
সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘উগ্রবাদীদের ফিরিয়ে আনতে ৩২টি জেলায় কর্মসূচি চলছে। এসব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, পুলিস, কারারক্ষী, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তাদেরকে শেখানো হচ্ছে, কারা কীভাবে উগ্রবাদী হচ্ছে, পথ বন্ধ করার উপায় এবং কেউ উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে বুঝবে কীভাবে? জঙ্গি মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিল। জঙ্গি মোকাবিলায় সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লজিস্টিক সাপোর্টও বেড়েছে।’
২০০৪ ও ২০০৫ সালে যেসব জঙ্গি সাজা ভোগ করে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে তাদের পুনর্বাসনেও সরকার কাজ করছে। পুলিস তাদের কাউন্সিলিংয়ের মধ্যে রেখেছে। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৪২ জনের তালিকা সংগ্রহ করেছিলাম। এদের মধ্যে ২২ জনকে নির্বাচন করেছিলাম। পরে দেখা গেল, এদের মধ্যে মাত্র আট জনের আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন আছে। তাদের আর্থিক সহযোগিতা করেছি। বাকিদের অর্থের প্রয়োজন নেই। তবে তারা মূল সমাজে মিশতে পারছিল না। মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। তাদের সমাজে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। সব শ্রেণির মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’