কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
প্রথমে যদিও সেই সম্বন্ধ অহংবুদ্ধি প্রণোদিত হওয়াতে নিতান্ত নিম্নস্তরের হয়, কিন্তু তার পরে আমরা তার উচ্চতর আধ্যাত্মিক সত্যে গিয়ে পৌঁছাতে পারি। তখন আর কি চাইছি তা নিয়ে কথা নয়, মানুষের জীবনের সঙ্গে ভগবানের চেতন সংস্পর্শ ও লেনদেন নিয়ে কথা। আধ্যাত্মিকের দিক থেকে এই চেতন সংস্পর্শের শক্তিমূল্য অনেক বেশি। জীবনে আমরা একান্ত আত্মনির্ভর হয়ে যে সংগ্রাম করি, প্রার্থনা তার মধ্যে একটা পূর্ণতর আধ্যাত্মিক অনুভূতি এনে আমাদের শক্তিসমৃদ্ধ করে। শেষ পর্যন্ত সেই প্রার্থনা তার চেয়ে বৃহত্তর সম্বন্ধে গিয়ে বিলীন হয়, অর্থাৎ তার ভিতরকার আস্পৃহা ও শ্রদ্ধাবিশ্বাসই আনন্দের বস্তু হয়ে বড় হয়ে ওঠে। তার অর্থ তখন আরো উচ্চস্তরে গিয়ে উদ্দেশ্যবিহীন ভক্তিতে উপনীত হয়, কোন দাবিদাওয়া ঘুচে গিয়ে তখন তা সহজ ও বিশুদ্ধ ভগবৎ প্রেমে পরিণতি লাভ করে।
মানুষের আত্মা ভগবানের কাছে চায় সাহায্য, চায় আশ্রয় এবং নির্দেশ, চায় সাফল্য—অথবা চায় জ্ঞান, চায় শিক্ষণ, চায় আলো, —কারণ তিনি জ্ঞানসূর্য, —অথবা সে চায় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি, ব্যক্তিগত ব্যথাবেদনা অথবা জগৎযন্ত্রণা থেকে মুক্তি, অথবা তার ভিতরকার হেতু থেকে মুক্তি।
মানব আত্মা তার সকল কামনা ও দুঃখের কথা জানায় ভগবতী মাতৃআত্মার কাছে, আর জগন্মাতাও তাই চান, যাতে তিনি তাঁর হৃদয়ের স্নেহ সেখানে ঢেলে দিতে পারেন। মায়ের ওই স্নেহ আপনা হতে আছে বলেই মানব আত্মা তাঁর দিকে ফেরে, কারণ সেখানেই আমাদের আপন গৃহ, জগতের পথে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে সেই মাতৃহৃদয়ে গিয়েই আমরা বিশ্রাম পেতে পারি। নিছক যুক্তিবাদী লোকেরা বলবে, ‘‘প্রার্থনা কেন করবে? আস্পৃহার কি দরকার? কিছু তুমি চাইবে কেন? ভগবান যা করতে চান তাই তিনি করবেন এবং তাই তিনি করছেন।’’ অবশ্য এ কথা বলাই বাহুল্য, কিন্তু তথাপি এই যে প্রার্থনা ‘‘ভগবান তুমি প্রকাশ হও’’ এতে তাঁর অভিব্যক্তির মধ্যে একটা স্পন্দন জাগে।