যে কোনও ব্যবসায়িক কর্মে অতিরিক্ত অর্থলাভের প্রবল সম্ভাবনা। শিল্পীদের পক্ষে শুভদিন। ... বিশদ
একটা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এই আন্দোলনে চিকিৎসা পরিষেবা নাকি তেমন ব্যাহত হচ্ছে না। জুনিয়র ডাক্তারদের ঘাটতি পুষিয়ে দিচ্ছেন সিনিয়র ডাক্তাররা, যাঁরা কর্মবিরতিতে শামিল নন। মূলত এঁদের নিরলস প্রচেষ্টাতেই আউটডোর ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক গতিতে চলছে। এর সঙ্গে রয়েছে ‘অভয়া ক্লিনিক’। যে সরকারি ডাক্তাররা এই দাবি করছেন সেই সরকারেরই শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, আন্দোলনের জেরে সরকারি হাসপাতালে আউটডোর পরিষেবা ও অস্ত্রোপচার কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। রোগী ভর্তির পরিমাণ কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, চিকিৎসা না পেয়ে বহু রোগী বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ভিড় করছেন, যার জেরে সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের দৈনিক খরচ এক ধাক্কায় ৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬ কোটি টাকা। ঘটনা হল, সরকারি ডাক্তাররা যে দাবিই করুন, বাস্তব সত্যটা হল একশো জনের কাজ কখনও তিরিশ জনকে দিয়ে করা যায় না। তাই সিনিয়র ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল সচল, স্বাভাবিক রাখার কথা তত্ত্বগতভাবে ঠিক হলেও তথ্যগতভাবে তার তেমন কোনও ভিত্তি নেই। সেই কারণেই জেলা থেকে শহরে প্রতিদিন চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাওয়া বা মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। কোনও কুযুক্তি দিয়ে একে অসত্য প্রমাণ করার চেষ্টা না করাই শ্রেয়। জুনিয়র ডাক্তার ও নাগরিক আন্দালনের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগী, নিত্যযাত্রী, পথ চলতি মানুষ থেকে শুরু করে প্রায় সব অংশের মানুষ যে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। অন্যান্য ক্ষেত্রে এই অসুবিধা মানিয়ে নেওয়া গেলেও একজন অসুস্থ মানুষ তাঁর রোগের সঙ্গে কীভাবে আপস করবেন? তেমনটা করতে বাধ্য করা তো অপরাধের শামিল।
চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। একই আর্জি জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও। তবু ডাক্তাররা অনড়! প্রশ্ন উঠেছে, আবেদনের আড়ালে আদালতের বক্তব্য অমান্য করা কি উচিত কাজ হচ্ছে? নাকি প্রতিবাদ আন্দোলনের পাশাপাশি স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিষেবা চালু করাটাই সঠিক দয়িত্ব পালন করা হবে? ওই ডাক্তার-পড়ুয়া তরুণীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। তারা এই তদন্তের কিনারা করতে আর কত সময় নেবে সেই উত্তর পেতে উদগ্রীব সমাজ। একইভাবে ডাক্তাররা আর কতদিন কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন সেই উত্তরও সমানভাবে জানতে আগ্রহী ভুক্তভোগী মানুষ। কারণ দুটোই সমাজের জন্য সমান জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলনকারী ডাক্তাররা তা অনুধাবন করে দ্রুত কাজে ফিরবেন, এটাই এখন সময়ের দাবি।