যে কোনও ব্যবসায়িক কর্মে অতিরিক্ত অর্থলাভের প্রবল সম্ভাবনা। শিল্পীদের পক্ষে শুভদিন। ... বিশদ
প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে সারা বাংলা একমত। সেখানে শাসক এবং বিরোধীতে বস্তুত কোনও ফারাক নেই। সিবিআই তদন্ত দ্রুত শেষ করে দোষী বা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অন্যভাবে সক্ষম ভাই-বোনেরাও। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের শাসক দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা গিয়েছে রাজপথের মিছিলে। দ্রুত বিচারের দাবিতে সবচেয়ে বেশি সরব তো তাঁরাই। ‘ধর্ষকের সাজা ফাঁসি’—এই মর্মে দ্রুত আইন প্রণয়নে বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তৃণমূল এমপি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একই কারণে মজবুত কেন্দ্রীয় আইনও চান। এই উদ্দেশ্যে লোকসভায় একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল পেশের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে রাজ্যের শাসকের তরফে সদিচ্ছার কোনও ঘাটতি সচেতন সমাজ দেখছে না। তবুও রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ আন্দোলন জারি রয়েছে। তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যের শাসক দলের কোনও আপত্তি নেই। কোনও আন্দোলনে তারা বাধা দেয়নি, বরং সব জায়গাতেই প্রতিবাদীদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করতে সক্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিস।
আর এই গণতান্ত্রিক আবহের তাল কেটে দেওয়ারই ফন্দি এঁটে চলেছে একাধিক বিরোধী দল। দল মত নির্বিশেষে সকলের যে দাবি, তার গায়ে রাজনৈতিক রং লাগাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। ঘোলা জলে মাছ শিকারিদের শীর্ষে আপাতত বিজেপি। ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামধারী একটি নবীন সংগঠন আচমকা ‘নবান্ন দখল’ কর্মসূচি নিল। মঙ্গলবার এই কর্মসূচি গ্রহণের আগে তারা দাবি করেছিল যে, তাদের এই আন্দোলন ‘অরাজনৈতিক’। কেবলমাত্র আর জি কর কাণ্ডের সুবিচার চাইতেই তারা ‘শান্তিপূর্ণ’ মিছিল নিয়ে নবান্ন অভিমুখে যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালেই তাদের মারমুখী, হিংসাত্মক চেহারাতেই প্রকট হয়ে পড়ে রাজনৈতিক রং ও অভীপ্সা। বস্তুত যমজনগরী কলকাতা এবং হাওড়া জুড়ে দফায় দফায় চলে তাদের গুন্ডামি। বহু টাকার সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের পাশাপাশি ৩৬ জন কর্তব্যরত পুলিস কর্মীকেও জখম করে ওই ভুয়ো ছাত্রদল। তাদের নৃশংস আক্রমণে কলকাতা পুলিসের এক সার্জেন্ট দৃষ্টি পর্যন্ত হারাতে বসেছেন! এই অপরাধও কি ক্ষমার অযোগ্য নয়? এরপরও ‘পুলিসি অত্যাচার’-এর অন্যায্য অভিযোগ নিয়ে ‘লালবাজার অভিযান’-এর এক্সট্রা ইনিংস খেলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। অস্থিরতা সৃষ্টির নষ্টামিতে পূর্ণযতি পড়েনি তাতেও। বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধ এরও ডাক দেয় বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু সচেতন রাজ্যবাসী তাতে বিন্দুমাত্র সাড়া দেননি। কিছু জায়গায় জবরদস্তি বন্ধ করাতে গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি ‘সশস্ত্র’ গেরুয়া বাহিনী। দিকে দিকে তারা প্রত্যাখ্যাতই হয়েছে। কেননা, রাজ্যবাসী আর যাই হোক, বন্ধ, ধর্মঘটের মতো কর্মনাশা কারবারে আর ফিরে যেতে চান না। জগদ্দল লাল জমানার সঙ্গে, এক যুগ আগেই বাংলার মানুষ এই সংস্কৃতিকে বিসর্জন দিয়েছেন। বাংলার মানুষ চিরকালই প্রতিবাদী। কিন্তু এখন অন্যায়ের প্রতিকারের দাবি তাঁরা অন্যসকল শান্তিপূর্ণ উপায়েই করতে পছন্দ করেন। নিজের পায়ে কুড়ুল মারার ভুল তাঁরা আর করতে চান না। তাঁরা জানেন, শিল্পবান্ধব ও উন্নয়নমুখী পরিবেশ ফেরাতে এই পদক্ষেপের বিকল্প নেই। বাংলার মানুষের এই ইতিবাচক ভূমিকা প্রশংসনীয়।