উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য, ব্যবসায় গোলোযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
দিল্লির মসনদ দখলের যারা স্বপ্ন দেখে তাদের কাছে উত্তরপ্রদেশ দখল করাটা একটা বড় টার্গেট। এই উত্তরপ্রদেশের ভোটের জন্য কংগ্রেস এমন দু’জনকে দায়িত্ব দিয়েছে যাঁরা দু’জনই যুব সম্প্রদায়ের প্রতিভূ। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত হয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে প্রিয়াঙ্কা। জাতীয় রাজনীতিতে ৪৯ বছরের রাহুল গান্ধী তিন রাজ্যে গত নির্বাচনে দলকে জিতিয়ে এনে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছেন। দুর্নীতির ইস্যুতে বোফর্স বা রাফাল নিয়ে আকচাআকছি চললেও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর যোগদান কংগ্রেসের অন্দরে যে রীতিমতো সাড়া ফেলেছে তা বেশ বোঝা গেল ওই রোড শোতে। ভিড় এতটাই ছিল যে স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের কম্যান্ডোরা প্রিয়াঙ্কা ও রাহুলকে এয়ারপোর্টের ভিতরে নিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং লখনউ পুলিসের ফোর্স আরও বাড়ানোর পরই ভাই-বোন ট্রাকের ছাদে ওঠেন। ততক্ষণে এসেছে সিআইএসএফ-ও। হজরতগঞ্জ থেকে লালবাগ গার্লস কলেজ, ডিএসপি চৌরাস্তা থেকে লালবাহাদুর শাস্ত্রী মার্গে কংগ্রেসের কোনও রোড শোয়ের জন্য গোটা শহরে ট্রাফিক স্তব্ধ হয়ে যাওয়া বা নবাবনগরীতে কংগ্রেসের পতাকা এমন লার্জ স্কেলে কবে উড়েছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। রাহুল তাঁর প্রচারে বারবার প্রধানমন্ত্রীর চৌকিদারের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করে জনমানসে ইতিমধ্যেই কিছুটা সাড়া ফেলেছেন। এবার রাস্তায় নতুন স্লোগান তোলা হল—‘বদলাও কি আন্ধি হ্যায় ... বহেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী হ্যায়’। প্রচারে এমন বক্তব্য তুলে ধরে বার্তা দেওয়া হল, রাজনীতির ময়দানে অপেক্ষাকৃত কমবয়সিরা দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।
সাধারণভাবে মানুষের মনে ফ্রেশ যুব মুখের একটা আলাদা আবেদন আছে। অনেকে মনেও করে, যুবদের মধ্যে দুর্নীতির মানসিকতা তুলনামূলকভাবে হয়তো-বা কম। সংগঠনকে চাঙ্গা করতে দলের প্রতি যুবক-যুবতীদের আকর্ষণ বাড়াতে প্রিয়াঙ্কার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে কংগ্রেস। সাধারণ ডেডিকেট কংগ্রেস ভোটের পাশাপাশি তাদের মূল লক্ষ্য এবার যুব সম্প্রদায় বা নয়া প্রজন্ম। সেদিক থেকে দেখলে প্রিয়াঙ্কা পথে নামতেই চমক সৃষ্টি হয়েছে। এর থেকে কতটা ফায়দা তুলতে পারলো কংগ্রেস তা জানা যাবে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর। এটাও ঠিক, জনসভায় জনজোয়ার বা রোড শোয়ে জনসমুদ্র দেখেও বোঝা সম্ভব নয় মানুষের অন্তরের চাহিদাটি ঠিক কী। মানুষের চাহিদা বুঝে তাদের কাছে কে কতটা পৌঁছাতে পারছে সেটাই বড় কথা। সেই প্রতিযোগিতায় নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধী বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ফেডারেল ফ্রন্টের বিরোধী জোট—কে কতটা এগিয়ে থাকছে তা স্পষ্ট হবে ভোটের ফলে। তবে, প্রচারে নেমে প্রিয়াঙ্কার জমজমাট রোড শোটি অবশ্যই একটি রাজনৈতিক চমক যা বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে বহু কংগ্রেস কর্মীর মনে।