উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য, ব্যবসায় গোলোযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
স্বভাবতই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত শিক্ষামন্ত্রী। এত মামলা জমে আছে থাকার ব্যাখ্যাও তিনি চান। তাঁর কটাক্ষ—‘‘এত মামলা যে একটা বই হয়ে যাবে! যা ভেবেছিলাম, পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ!’’ শিক্ষামন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, প্রশাসনিক স্তরে এই গাফিলতি তিনি বরদাস্ত করবেন না। তাঁর নির্দেশ—কোন জেলায় কত মামলা কী অবস্থায় ঝুলে রয়েছে তা সাতদিনের ভিতরে শিক্ষা দপ্তরকে জানাতে হবে। মামলাগুলি যেসব আইনজীবী দেখভাল করছেন তাঁদের নামও জানাতে হবে। আটদিনের মাথায় যদি দেখা যায়, কোনও জেলা সরকারকে অবহিত করেনি তবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সরিয়ে দেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। স্কুল পরিদর্শন এবং অর্থ ফেলে রাখা প্রসঙ্গেও শিক্ষামন্ত্রীর স্পষ্ট কথা—ঘরে বসে রিপোর্ট দিলে তা মানবেন না। স্কুলগুলি পরিদর্শন করে তবেই নিরপেক্ষ রিপোর্ট দিতে হবে। ফেলে রাখা অর্থ সময়ের মধ্যে স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচ করার উপরেও জোর দেন তিনি।
যে-ছবি উদ্ধার হল তা সত্যিই খারাপ। তবে, এই সত্য উদ্ঘাটনে মন্ত্রী মশায়ের ব্যক্তিগত তৎপরতাটি প্রশংসনীয়। তিনি ঠিক সময়েই চেপে ধরেছেন। এখন দায়িত্ব স্কুলগুলির এবং শিক্ষা বিভাগের। মন্ত্রীর নির্দেশমতো তাঁরা যেন অবিলম্বে কাজটি করেন। যেসব অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষকের ন্যায্য প্রাপ্য অর্থ আটকে রয়েছে, আইনি জটিলতার নিষ্পত্তিসহ সেসব অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া হোক। শিক্ষা উন্নয়নে মঞ্জুরিকৃত যাবতীয় অর্থ দ্রুত কাজে লাগাতে হবে। বিদ্যালয় পরিদর্শনের গুরুত্ব বাম আমলে বস্তুত নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল। এই জমানায় তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে। সেটা যদি কোনোরকম আমলাতান্ত্রিক মানসিকতায় কিংবা প্রশাসনিক জটিলতায় বাধাপ্রাপ্ত হয় তো খুবই দুর্ভাগ্যের। খেয়াল রাখতে হবে, সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি রাজ্যবাসীর একটি বড় অংশের মধ্যে তীব্র নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছে। এই অবদান বাম জমানার। আর এই রন্ধ্রপথেই রাজ্যজুড়ে জাঁকিয়ে বসেছে ক্রমবর্ধমান বেসরকারি স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থা। স্কুলশিক্ষার সরকারি ব্যবস্থা এরপর সামান্যও আহত হলে তা হবে এই ব্যবস্থাকে কবরে ঠেলে দেওয়ার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাকে আরও উজ্জীবিত করার শামিল। বিশেষত কয়েক কোটি গরিব মানুষের কথা মাথায় রেখে এই সর্বনাশ এখনই ঠেকাতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশিত পথে। গরিব মানুষ কিন্তু সেই আশাতেই বুক বেঁধে রয়েছে।