কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
মঙ্গলবার গাড়ি শিল্পের উপর একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম)। ওই রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে তুলে ধরা হয়েছে দেশের গাড়িশিল্পের বর্তমান দুরাবস্থার কথা। বলা হয়েছে, ২০০০ সালে গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছিল গাড়িশিল্প। সেবারও বিক্রিতে ছিল ভাটার টান। ওই বছর ডিসেম্বর মাসে একধাক্কায় বিক্রি কমে গিয়েছিল ২১.৮১ শতাংশ। প্রাইভেট, যাত্রীবাহী কিংবা বাণিজ্যিক গাড়ি ক্রয়ের চাহিদা ছিল নিম্নমুখী। বাইকের থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন গ্রাহকরা। তার পর একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ালেও ২০১৯ সালের শুরুতেই জোর ধাক্কা। গাড়িশিল্পে বিক্রির বাজার কমে দাঁড়িয়েছে ১৮.৭১ শতাংশে। সিয়ামের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সব ধরনের গাড়ি ও বাইক মিলিয়ে বিক্রি হয়েছিল ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার ২২৩টি। চলতি বছর জুলাই মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ লক্ষ ২৫ হাজার ১৪৮টি। সবচেয়ে বেশি ধাক্কা লেগেছে যাত্রীবাহী গাড়ির উপর। বিক্রি কমেছে ৩৫.৯৫ শতাংশ। ভালো নেই দু’চাকার গাড়িশিল্পও। বিক্রি কমেছে ১৬.৮২ শতাংশ।
চাহিদার এই অধোগতিতে এখন বেসামাল অবস্থা গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলির। বহু সংস্থাই তাদের উৎপাদন ইউনিট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। শোরুম বন্ধ করছেন ডিলাররা। মন্দার প্রভাব পড়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণশিল্পেও। সেখানেও কর্মী ছাঁটাই চলছে। সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর এদিন বলেছেন, ‘ইতিমধ্যেই গাড়ির নির্মাণশিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৫ হাজার কর্মী কাজ হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ঠিকা শ্রমিক ও অস্থায়ী কর্মী। গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণ শিল্প থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি লোক কর্মচ্যুত হয়েছেন। এরই পাশাপাশি, গাড়ি কেনার চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যয় সংকোচনের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছেন ডিলাররা। তাঁরাও ঝাঁপ ফেলতে শুরু করেছেন শোরুমগুলিতে। মাথুর জানিয়েছেন, দেশজুড়ে প্রায় ৩০০জন ডিলার তাঁদের শোরুম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। তাতে কর্মহীন হয়েছেন দু’লক্ষেরও বেশি কর্মী। তিনি বলেছেন,‘২০০০ সালের পর ২০০৮-২০০৯ এবং ২০১৩-২০১৪ সালেও মন্দার মুখ দেখেছিল গাড়িশিল্প। তবে সেই ধাক্কা ছিল সাময়িক। ফলে দ্রুত সামলে ওঠা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এবার সার্বিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে গাড়িশিল্প। যার থেকে খুব সহজে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়।’
আর সম্ভব নয় বলেই মোদির সরকারের শরণ নিয়েছে সিয়াম। ক’দিন আগেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে দেখা করে গুচ্ছের দাবি জানিয়ে এসেছেন গাড়িশিল্পের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোগপতিরা। এদিন মাথুরও বলেছেন, ‘সরকারের সহযোগিতা ছাড়া গাড়িশিল্পকে বাঁচানোর কোনও উপায় নেই। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় তিন কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ জড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের রুটি-রুটি এখন বড় প্রশ্নের মুখে। শুধু তাই নয়, গাড়িশিল্পের এই সার্বিক মন্দা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও প্রভাব ফেলবে। তাই আশাকরি, সরকার সবদিক বিবেচনা করেই গাড়িশিল্পের পুনর্জ্জীবন প্রকল্প গ্রহণ করবে সরকার।