বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
তবে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের ব্যর্থতা থেকেই শিক্ষা নিয়েছেন বিরাট কোহলি। তাঁর ক্রিকেট জীবনের একটি কালো অধ্যায়। জেমস অ্যান্ডারসনের সামনে রীতিমতো আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কিছুতেই স্যুইং সামলাতে পারেননি। এমনকী ভালো মানের পেস বোলিং মোকাবিলার ক্ষেত্রে তাঁর যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। আর সেটাই তাতিয়ে দিয়েছিল কোহলিকে। এখন তিন ফরম্যাটেই বাইশ গজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ‘ভিকে’। অনেক পালক যোগ হয়েছে তাঁর মকুটে। তবু আজও তাঁকে ছ’বছর আগের ইংল্যান্ড সফরের ব্যর্থতা তাড়া করে বেড়ায়। সম্প্রতি বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিরাট বলেন, ‘২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর আমার ক্রিকেট জীবনের মাইল ফলক। এটা শুনে অনেকে হয়তো অবাক হবেন। কারণ ভালো সফরকেই সকলে মাইল ফলক হিসেবে দেখেন। কিন্তু আমার কাছে ছয় বছর আগের ইংল্যান্ড সফরটাই আসল মাইল ফলক। কারণ সেদিনের ব্যর্থতা আমার চোখ খুলে দিয়েছিল। তা নাহলে আজ হয়তো এই জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না। ইংল্যান্ডে ভালো খেলতে না পারায় অনেক কটাক্ষ হজম করতে হয়েছিল। গঠনমূলক সমালোচনাকে আমি সব সময়ই স্বাগত জানাই। সেবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গভীর ভাবে নিজের ব্যাটিংয়ের বিশ্লেষণ করেছিলাম। সামনেই ছিল অস্ট্রেলিয়া সফর। সেটা মাথায় রেখে নিজের ভুলত্রুটি দ্রুত শুধরে নিতে চেষ্টা করেছিলাম।’ ভারত অধিনায়ক সেই সঙ্গে যোগ করেন, ‘সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ছোট ছোট ভুল তেমন চোখে পড়ে না। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে সেগুলিই সমস্যা তৈরি করে। তাই লাল বলের ক্রিকটে সাফল্য পাওয়ার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, দৃঢ় মানসিকতা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা। ইংল্যান্ড সফরে ব্যর্থ না হলে আমি হয়তো একইভাবে খেলে যেতাম। তাতে একটা জায়গায় গিয়ে আটকে যেতে হত। এটা অস্বীকার করব না যে, ইংল্যান্ডের মাটিতে স্যুইং খেলতে খুব সমস্যা হয়েছিল। কখনও বল ভিতরের দিকে ঢুকে এলে বুঝে উঠতে পারতাম না কীভাবে সামলাব। আবার কোনও ডেলিভারি যখন যখন বাইরে বেরিয়ে যা যাচ্ছিল, তখনও খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছিলাম। পুরো ব্যাপারটাই ছিল গোলকধাঁধার মতো। কোনও কিছুই সঠিক হচ্ছিল না।’
প্রশ্নকর্তা মায়াঙ্কের কৌতূহলী জিজ্ঞাসা, কীভাবে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন? জবাবে কোহলি বলেন, ‘দেশে ফেরার পর আমি শচীন তেন্ডুলকরের সঙ্গে দেখা করি। আমার মনে হয়েছিল, তিনিই আমাকে ইংল্যান্ড সফরে ব্যর্থতার আসল কারণটা বলতে পারবেন। মুম্বইয়ে শচীন পাজির সঙ্গে একটা আলাদা সেশনও করেছিলাম। উনি হাতে ধরিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, জোরে বোলারদের খেলার সময় ফুটওয়ার্ক কেমন হওয়া দরকার। ওই টিপস খুব কাজে দিয়েছিল।’
২০১৪ সালে ভারতীয় দলের ডিরেক্টর ছিলেন রবি শাস্ত্রী। ইংল্যান্ড সফরে কোহলির ধারাবাহিক ব্যর্থতা তাঁকেও চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। একদিন তিনি বিরাটকে নিজের রুমে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তুমি কেন ক্রিজের বাইরে দাঁড়াচ্ছ না? তাতে আউট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।’ এভাবেই রবি শাস্ত্রীর খুব কাছে চলে আসেন কোহলি। পরবর্তীকালে এই জুটি (কোচ ও ক্যাপ্টেন) ভারতীয় দলকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। কোহলি জানালেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সফরেও রবি ভাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার ব্যাটিংয়ের উপর নজর রাখতেন। তাঁর মূল্যবান পরামর্শ মেনে অস্ট্রেলিয়া সফরে সাফল্য পাই। আজও কোথাও কোনও সমস্যা হলে ওঁর সঙ্গে আলোচনা করি।’