নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রাক বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচের শেষেই জাতীয় দলের কোচ স্টিম্যাচ একজন যোগ্য ও দক্ষ ভারতীয় স্ট্রাইকারের অভাবের কথা বলছেন। আসলে গত তিন বছর আই লিগ ও আইএসএলে ছয় জন বিদেশি খেলোয়াড় খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফেডারেশন। তাঁদের উপর এই নিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছিল ফেডারেশনের পার্টনার এফএসডিএলের প্রতিনিধিরা। তাই আইএসএল এবং আই লিগের অধিকাংশ দলই জোড়া বিদেশি স্ট্রাইকার খেলিয়ে থাকে। এতে দেশে নতুন স্বদেশি স্ট্রাইকার উঠে আসছে না। তাই স্টিম্যাচের অনুরোধে আগামী বছর আইএসএল এবং আই লিগে বিদেশির সংখ্যা কমছে। আইএফএ নার্সারি লিগের উদ্বোধন করতে কলকাতায় এসেছিলেন ফেডারেশন সচিব কুশল দাস। শনিবার তিনি বলেন, ‘আমরা এফএসডিএলের সঙ্গেও ইতিবাচক আলোচনা করেছি। দেশের ফুটবলের স্বার্থে আগামী বছর থেকে দুই লিগে বিদেশির সংখ্যা কমছে। সংখ্যাটা ছয় থেকে কমে পাঁচ তো হচ্ছেই। চারও হতে পারে। ফলে প্রথম একাদশেও বিদেশির সংখ্যা কমবে। ভারতীয় ফুটবলাররা, বিশেষত স্ট্রাইকাররা বেশি মাত্রায় সুযোগ পাবেন নিজেদের প্রমাণে। সত্যিই সুনীল ছেত্রীর পর সেইভাবে স্ট্রাইকার উঠে আসছে না। যা আমাদের ভাবাচ্ছে।’ সূত্রের খবর স্টিম্যাচ দুই লিগেই প্রথম একাদশে তিন জন করে বিদেশি খেলানোর পক্ষে। কুশল বলেন, ‘ওয়ান সিটি, ওয়ান টিম ফর্মুলা আর আইএসএলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই কলকাতা থেকে এটিকের পাশাপাশি মোহন বাগান, ইস্ট বেঙ্গল বিডের মাধ্যমে আসতেই পারে। আগামী বছর আইএসএলে কলকাতা থেকে তিন টিম খেললে কোনও টেকনিক্যাল জটিলতাই হবে না। এই নিয়ে এফএসডিএলের সঙ্গে আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। শুনছি, মোহন বাগান আইএসএলে খেলার মতো আর্থিক রশদ পেয়ে গিয়েছে।’ ফেডারেশন সচিব জানান, ‘চলতি মরশুমে সুপার কাপ হবে না। পরিকল্পনা আছে আগামী বছর সেপ্টেম্বরে সুপার কাপের ম্যাচ দিয়ে ২০২০-২১ মরশুমে সর্বভারতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করার। এপ্রিলে শিল্ডের স্লট দেওয়া হচ্ছে।’
ঘটনা হল, গত বছর সুপার কাপ না খেলার জন্য ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি মোটা জরিমানা করেছিল দুই প্রধান সহ পাঞ্জাব এফ সি, নেরোকা, আইজল এফ সি, গোকুলামকে। ক্লাবগুলি আপিল কমিটির কাছে জরিমানা মকুবের আবেদন জানিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সাত মাস পরও আপিল কমিটি কোনও সভা ডাকেনি। কবে ডাকবে তা নিয়ে শনিবার কুশল দাস সুস্পষ্ট করে কিছু বললেন না। আইএসএলে দুই প্রধানের পুনর্বাসনের আগে এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ এআইএফএফ নিতে চায় না। কুশলবাবু বলেন, ‘রিয়াল কাশ্মীর দলের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসন দারুণভাবে যুক্ত। রাজ্য প্রশাসন চেয়েছিল উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে, শ্রীনগরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে কাশ্মীরবাসীর ফুটবল প্রেমকে সামনে রাখা হবে। তাই শ্রীনগরের অবস্থা স্বাভাবিক নয় জেনেও আমরা আই লিগের ম্যাচ দিয়েছিলাম ভূস্বর্গে। ওখানে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক নয়। বরফ পড়ছে। এয়ারপোর্ট বন্ধ। তাই আগামী ৫ জানুয়ারি শ্রীনগরে রিয়াল কাশ্মীর-মোহন বাগান ম্যাচ হয়তো হবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রিয়াল কাশ্মীরের হোম ম্যাচ কোথায় হবে তা আগামী সপ্তাহে ঠিক করব আমরা।’ কুশল জানান, ‘ ভারত-কাতার ম্যাচ ভুবনেশ্বরেই হবে। ওড়িশা সরকার ফুটবলের প্রসারে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে তাতে কাতার ম্যাচ ভুবনেশ্বরেই আমরা করছি। আফগানিস্তান ম্যাচ হতে চলেছে কেরলে। আর ২৭ ডিসেম্বর থেকে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামেই খেলবে ওড়িশা এফ সি।’