গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে। ... বিশদ
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে আগস্ট মাস থেকে হাতির হানায় ৪ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঝাড়গ্রামের তিনটি বনবিভাগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একাধিক কারণে বেশ কয়েকটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়গ্ৰামের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ এলাকায় সবচেয়ে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এই রেঞ্জ এলাকায় ঝাড়গ্ৰাম ব্লকের কিছুটা অংশ, সাঁকরাইল ব্লক ও পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্ৰামীণ এলাকা অন্তর্ভুক্ত। গত কয়েক বছরে এইসব এলাকায় হাতির হানা বেড়েছে। বনদপ্তর হাতির হানা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় যেমন ক্ষোভ বাড়ছে। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না মেলাতেও অসন্তোষ রয়েছে। সাড়ে সাত বিঘা ফসলের ক্ষতি হলে ১৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। বিঘা প্রতি ১৯৮০ টাকা ক্ষতিপূরণ চাষিরা পান। ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ এই এলাকায় ২০২২-২৩ আর্থিক বর্ষে ১১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। পরের ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বেড়ে হয় ৩৯ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৫০ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আগস্ট মাস পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪ লক্ষ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। যদিও সাঁকরাইল ব্লকের একাধিক চাষির অভিযোগ, আবেদনের পরেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। যা পেয়েছেন, তাতে চাষের খরচের টাকাও ওঠেনি।
শালবনি পঞ্চায়েতের শিরশি গ্ৰামের চাষি দেবাশিস সিংহ, গোঁসাই মাহাত বলেন, দু’বছর ধরে ক্ষতিপূরণ পাইনি। ডেসিমেল অনুযায়ী ৬০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। সেই টাকাও একবছর পর পাওয়া যায়। যার জেরে এলাকার চাষিরা নিজেদের প্রয়োজনটুকু ছাড়া অতিরিক্ত চাষ বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিদ্যুতের তার দিয়ে জমি ঘিরে চাষ করা হচ্ছিল। তাই গ্ৰামের দু’জনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। চাষিরা অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ওই গ্ৰামের বাসিন্দা সতীশ মাহাত বলেন, ফসলের ক্ষতির জন্য দু’বছর আগে যৎসামান্য ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলাম। ফসলের আবার ক্ষতি হয়েছে। তার ক্ষতিপূরণ এখনও মেলেনি। শ্যামসুন্দর মাহাত বলেন, লোধাশুলি রেঞ্জে আমার ফলের বাগানে, আম, কাজু সহ নানা ফলের গাছ লাগিয়েছিলাম। গতবছর হাতির পাল এসে ফলের বাগান নষ্ট করেছিল। এবারও করে গিয়েছে। বনদপ্তরে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছি। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাইনি। কবে পাব তাও জানি না।
ঝাড়গ্ৰামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ফসলের ক্ষতির জন্য যেসব চাষি আবেদন করছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। বাড়িঘর ভাঙচুর হলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। হাতির হানায় মৃত্যু হলে আগে আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়া হতো। এখন সেই পরিমাণ বেড়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য, হাতির হানায় প্রাণহানি বন্ধ করা। (দুলকি চালে। ঝাড়গ্রামের তোলা নিজস্ব চিত্র)