সংবাদদাতা, সিউড়ি: ভোটের আগেই বীরভূমে লাগাতার উদ্ধার হচ্ছে দেশি মদ, নগদ টাকা, জাল নোট, আগ্নেয়াস্ত্র ও বেআইনি কয়লা। নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। জেলার ঝাড়খণ্ড সীমানায় নাকা চেকিংয়ের পাশাপাশি সীমানার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি করার কথা ঘোষণা করেছিল পুলিস প্রশাসন। 
জেলা পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন এখনও পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার ৭০০ লিটার দেশি মদ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি মদ উদ্ধার হয়েছে দুবরাজপুর থানা এলাকা থেকে। সেখানে প্রায় চার হাজার ৪৮৪ লিটার মদ উদ্ধার করেছে পুলিস। মুরারই থানা এলাকায় উদ্ধার হয়েছে ৪৩৮ লিটার এবং সিউড়ি বিধানসভা এলাকায় কয়েকটি থানা থেকে ২৫৪ লিটার। লাভপুরে উদ্ধার হয়েছে দুই হাজার ৪৭৯ লিটার মদ। দুবরাজপুর থানার উদ্যোগে তল্লাশি চালিয়ে ২০টি বোমা, ১ কেজি গান পাউডার এবং দশ টন বেআইনি চোরাই কয়লা উদ্ধার করেছে পুলিস। এছাড়াও মুরারই থানার উদ্যোগে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি, একটি মোটর বাইক উদ্ধার করা হয়েছে। 
এদিকে সীমানায় নাকা চেকিং জোরদার করায় ভিন রাজ্য থেকে আগত বেহিসাবি নগদ টাকাও উদ্ধার করেছে পুলিস। পুলিসের অনুমান, এই বেহিসাবি নগদ টাকা ভোটের বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য দুষ্কৃতীরা জেলায় নিয়ে আসছিল। পাশাপাশি ভিন জেলা ও অন্য রাজ্য থেকে ভোটের মুখে জাল নোটও ঢুকছে বীরভূমে। জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে রাজনগর থানার পুলিস  ভোটের মুখে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ প্রায় চার লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় পুলিস গোপীনাথ গোপ ও তাপস গোপ নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে। কী কারণে তারা নগদ এতগুলি টাকা নিয়ে আসছিল এবং টাকার উৎস কী, তাই নিয়ে তদন্ত শুরু করছে পুলিস। পাশাপাশি কিছুদিন আগে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে মুরারই থানার পুলিস। জেলা পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী ভোটের জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হচ্ছে বীরভূমের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের মনোনয়ন পর্ব। তার জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতিও তুঙ্গে। সিউড়িতে মনোনয়নের জন্য কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে সিউড়ি প্রশাসনিক ভবন চত্বর। অতীতে প্রশাসনিক যেকোনও ভোটের সময় জেলা প্রশাসনিক ভবনকে কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলা হতো। এবার টিনের বেড়ার ওপর কাপড় দিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভোটকর্মী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের ভোটের প্রশিক্ষণও প্রায় শেষ। ভোটের জন্য ব্যবহৃত প্রশাসনিক প্রতিটি গাড়িতে জিপিএস ব্যবস্থা লাগানো হচ্ছে।  ভোটের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হবে। এর জন্য সব রকমের প্রশাসনিক প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি বুথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।