সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
একশো বছরেরও বেশি পুরনো শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরি। এখানেই সংরক্ষিত রয়েছে বহু বছরের পুরনো কয়েক হাজার বই। তবে শুধুমাত্র বইপ্রেমীদের কাছেই নয়, শান্তিপুর লাইব্রেরির ময়দান সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বহু চর্চিত। লাইব্রেরির সীমান্তে প্রায় ২০০ ফুটের একটি পুরনো প্রাচীর রয়েছে। লাইব্রেরির তরফে সম্প্রতি সেটির সংস্কারও হয়েছে। এই প্রাচীরকেই এখন শান্তিপুরের দর্পণ করে তুলতে এগিয়ে এসেছেন নানা বয়স ও প্রজন্মের চিত্রশিল্পীরা। বিশ্ব শিল্পকলা দিবস উপলক্ষ্যে পাবলিক লাইব্রেরিকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে প্রাচীন এই শহরের ঐতিহ্যকে দেওয়ালবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। লাইব্রেরির সম্পাদক পলসন ঘোষ বলেন, প্রাচীরকে সাজাতে চিত্রশিল্পীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন। আইনজীবী হিসেবে আমার রোজগারের একটা অংশ রং কেনার কাজে ব্যয় করেছি। শান্তিপুর লাইব্রেরি নতুনভাবে পরিচিতি পাক সেটাই চাই। সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ পাবলিক লাইব্রেরির ময়দানে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৫২ জন চিত্রশিল্পী। তাঁদের কাছেই জানা গেল, লাইব্রেরির দেওয়ালে ফুটে উঠবে শান্তিপুরের বিখ্যাত ভাঙা রাস, তাঁতের শাড়ি, নিখুঁতি মিষ্টি, হারিয়ে যাওয়া খেলনা ট্রেন, বাবলা অদ্বৈতপাট, বড় গোস্বামী বাড়ি, শ্যামচাঁদ মন্দির, তোপখানা মসজিদ, তরজা গান, নগরকীর্তন। আবার এই প্রাচীরেই স্থান পাবেন লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র, যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, হরিদাস ঠাকুর, অদ্বৈতাচার্য্যদের মতো শান্তিপুরের অগ্রণী ব্যক্তিরা। চিত্রশিল্পীদের তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য সরকারের হ্যান্ডলুম ও টেক্সটাইল দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী অরুণ সরকার। এদিন নবীন শিল্পীদের কাজে তদারকি করার মাঝেই তিনি বলেন, আমাদের গোটা দলটাকে ন’ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কে কী আঁকবেন, সেই দায়িত্ব আলাদা করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপুরের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে এক দেওয়ালে দেখে মুগ্ধ হবেন সাধারণ মানুষ। এদিন বিকেলে শান্তিপুরের পাবলিক লাইব্রেরির মাঠ যেন হয়ে উঠেছিল চিত্রশিল্পীদের মিলনমেলা। প্রবীণ শিল্পী নিশীথ প্রামাণিক, রনেন্দ্রজিৎ শী, শিবশঙ্কর দাসরা যেমন তুলি হাতে নতুন উদ্যমে ময়দানে নেমেছিলেন। একইসঙ্গে ছিলেন নবীন চিত্রশিল্পী বিকাশ দে, গৌতম সাহারাও। চিত্রশিল্পীদের কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। তিনি বলেন, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য এবং বাংলার অবলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি, এই দুইয়ের সহাবস্থান শান্তিপুর। আগামীদিনে সুসজ্জিত এই প্রাচীর যাতে সকল স্তরের মানুষের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে, সেজন্য সেখানে বিশেষ আলোরও ব্যবস্থা করা হবে।