কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
রবীন্দ্রনাথবাবু দীর্ঘদিনের বিধায়ক এবং চেয়ারম্যানও। কাটোয়া পুরসভা ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসে দখলেই ছিল। ২০১০-২০১৫ সালের বোর্ডে রবীন্দ্রনাথবাবু চেয়ারম্যান ছিলেন না। কারণ, আসন সংরক্ষণ হয়ে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের শুভ্রা রায়কে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। বাকি সময় রবীন্দ্রনাথবাবুই চেয়ারম্যান ছিলেন। গতবার অর্থাৎ ২০১৫ সালে কাটোয়া পুরসভা নির্বাচনের সময় রবীন্দ্রনাথবাবু কংগ্রেসেই ছিলেন। তাই গতবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মূল লড়াই ছিল কংগ্রেসের। সেই নির্বাচনকে ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছিল। কিন্তু, শেষমেশ ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১০টি এবং কংগ্রেস ১০টি আসন পায়। কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কাটোয়ার জনগণ ভেবেছিলেন, টস করেই বোর্ড গঠন করা হবে। কিন্তু, কংগ্রেস নেতৃত্ব নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বোর্ড গঠন থেকে সরে দাড়ায়। তৃণমূলই বোর্ড গঠন করে এবং অমর রাম চেয়ারম্যান হন।
এদিকে, তার একমাস পরই কাটোয়ায় উলটপূরাণ হয়ে যায়। ১০ কাউন্সিলার ও দলবল নিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। তারপরই অমর রামের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে রবীন্দ্রনাথবাবুকেই কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়। ২০টি ওয়ার্ডেই ঘাসফুলের পতাকা ওড়ে। তৃণমূলের দাবি, রবীন্দ্রনাথবাবু তৃণমূলে আসার পর কাটোয়ায় কংগ্রেস দুর্গেরও পতন হয়েছে। তাই ২০টি ওয়ার্ডেই ঘাসফুল ফোটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে উন্নয়নকে সামনে রেখে তারা মাঠে নামছে।
এদিকে, বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে ফলাফলের নিরিখে ২০টি ওয়ার্ডের ১৫টিতে তারা এগিয়ে রয়েছে। সেই ওয়ার্ডগুলিতে নিজেদের ভোট ধরে রাখতে বিজেপিও মরিয়া। কংগ্রেস নেতৃত্বও কাটোয়ায় কংগ্রেসের পুরনো আবেগ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে। অন্যদিকে, সিপিএম নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বজনপোষণ প্রভৃতি ইস্যু নিয়ে পুরভোটে লড়াইয়ে নামতে চলেছে।
চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, কাটোয়ার মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সঙ্গে রয়েছেন। এবার আমাদের লক্ষ্য ২০টি আসনই দখলে রাখা। আমরা সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। ওয়ার্ড ভিত্তিক দলীয় বৈঠক শুরু হয়েছে। পাঁচটি ওয়ার্ডে শেষও হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস-সিপিএমের কোনও অস্তিত্ব নেই। লোকসভায় কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি লিড পেলেও পুরসভা ভোটে তার কোনও প্রভাবই পড়বে না। অন্যদিকে, বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অনিল দত্ত বলেন, গত লোকসভায় আমরা ১৫টিতে লিড পেয়েছি। মানুষ বুথে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে কাটোয়ায় আমাদের জয় নিশ্চিত। কংগ্রেসের কাটোয়া মহকুমার সহ সভাপতি পার্থবরণ রক্ষিত বলেন, রবীন্দ্রনাথবাবু যতই তৃণমূলে যাক। কাটোয়ার মানুষ এখনও কংগ্রেসকেই সমর্থন করেন। তাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা ২০টিতে জিতব। কাটোয়ার সিপিএম নেতা তথা রাজ্য কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, গতবার ভোট হয়নি। পুরবোর্ড দখল হয়েছিল। তৃণমূলের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজন-পোষণ নিয়ে আমরা মানুষের কাছে যাব। ভোট হলে মানুষ আমাদের নির্বাচিত করবেন।