কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯জুন রাতে মল্লারপুর বাজারের তিনতলা ক্লাবে বিস্ফোরণ ঘটে। গত ৫জুলাই ওই ক্লাবের সমর্থক সদস্য মিঠু শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে ১৪জুলাই ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব দত্তকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাঁরা জামিনে রয়েছেন। এদিকে সোমবার রাতে এই বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিস। অন্যদিকে, দেড় মাস আগে ময়ূরেশ্বরের ষাটপলশায় তৃণমূলের কার্যালয়ে হামলা, মারধর, ভাঙচুর ও বোমাবাজির ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে শনিবার রাতে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি ধ্রুব সাহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। সেই ঘটনাতেও অতনু চট্টোপাধ্যায় জড়িত বলে পুলিসের দাবি। পুলিস জানিয়েছে, মল্লারপুর বিস্ফোরণ কাণ্ড মামলায় সাক্ষ্যদের বয়ান থেকে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে। অন্যদিকে, পুলিসি হেফাজতে থাকা ধ্রুব সাহার বক্তব্য অনুযায়ী অতনু ষাটপলশার ঘটনার সঙ্গেও জড়িত। এছাড়া ধৃত ব্যক্তি অন্যতম প্রধান কিংপিন যিনি মহরমের দিন বোলপুর হাসপাতালের সামনে এবং অন্যান্য জায়গায় সড়ক অবরোধের আয়োজন করেছিলেন।
জেলার পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, বিভিন্ন থানায় ধৃত ব্যক্তির নামে অভিযোগ রয়েছে। তিনি ওয়ান্টেড ছিলেন। মল্লারপুর ক্লাবের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধৃত ব্যক্তি জড়িত। এছাড়া ময়ূরেশ্বর, শান্তিনিকেতন সহ জেলাজুড়ে অশান্তির পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সেই সমস্ত কেসেও ধৃত ব্যক্তি ওয়ান্টেড ছিলেন।
এদিন ধৃতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা ৩০৭(খুনের চেষ্টা), ৩২৬(ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত), ৩২৫(ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে আঘাত), ৪৩৫(আগুন ধরিয়ে দেওয়া), ১২০বি(একত্রিত করে হামলা চালানো), ৪৩৬(বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগুন ধরে যাওয়া), ২৫ ও ২৭ আর্মস অ্যাক্ট ও বিস্ফোরক আইন ৩ ও ৪ ধারা ছাড়াও একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত করে আদালতে তোলা হয়। যদিও ধৃত বিজেপি নেতার দাবি, পুলিস তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। তিনি বলেন, ২০২১সালে পুলিস তাঁর ক্রিয়াকর্মের সাজা পাবে।
এদিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলা সাধারণ সম্পাদকের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রামপুরহাটে প্রতিবাদ মিছিল করে এসডিপিও সৌম্যজিৎ বরুয়াকে ডেপুটেশন দেয় বিজেপি। এদিকে মল্লারপুর থানা ঘেরাও করে গেরুয়া শিবির। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মল্লারপুর ব্লকের সম্পাদক মানস বলেন, সিউড়ির ধর্নামঞ্চ থেকে এসপিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া আমাদের দুই কার্যকর্তাকে গ্রেপ্তার করে পুরনো মামলার সঙ্গে ট্যাগ করে দেওয়া হল। তিনি বলেন, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল তারাপীঠ শ্মশান নিয়ে যাব। আর এই এসপি যেখানে থাকুক, তাঁকে তুলে নিয়ে এসে সেই কুশপুতুলে মুখাগ্নি করাব। পরে এসিপর মাথা ন্যাড়া করিয়ে এখানে ভোজ করাব। তিনি বলেন, বোমা বিস্ফোরণের মূল পাণ্ডা কেষ্ট মোড়ল।
অন্যদিকে, সিউড়িতে প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তিনি বলেন, তৃণমূল যেটা মাঠে নেমে পারছে না, সেই কাজটা পুলিসকে দিয়ে করাচ্ছে। এখানকার পুলিস-প্রশাসন প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে উঠেছে। অতনু চট্টোপাধ্যায়কে কুখ্যাত আসামির মতো গ্রেপ্তার করা হল। তিনি বলেন, স্বরূপ গড়াই খুনে অভিযুক্তদের এখনও ধরতে পারল না পুলিস। অথচ কয়েকমাস আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কার্যকর্তাদের ট্যাগ করে জেলে পুড়ে দিচ্ছে। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করছি, করব। তাতে যদি সমস্ত কার্যকর্তাদের জেলে ঢুকতে হয়, আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
এব্যাপারে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, কারও নামে কেস থাকলে পুলিস গ্রেপ্তার করবে না? আমার দলের লোককেও তো পুলিস গ্রেপ্তার করছে। পুলিস পুলিসের কাজ করছে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। ওরা এখন বাজে বকছে।
এদিন আদালত চত্বরে বিজেপির নেতা-কর্মীরা হাজির হয়েছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকেই পুলিসবাহিনী নিয়ে আদালতে ছিলেন এসডিপিও।