কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের গেট শাসক দলের কোন গোষ্ঠীর দখলে থাকবে তা নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। এই কারখানায় বহু ঠিকা শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। গেট যাদের দখলে থাকে তারাই ঠিকাশ্রমিক নিয়োগ করে। ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকার বিনিময়ে শ্রমিক নিয়োগ করা হয় বলে অনেকেরই অভিযোগ। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া সহ বিভিন্ন জেলার লোকজনদের টাকার নিয়ে কাজ দেওয়া হয়। এখন সংস্থায় প্রায় আট হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের কাছে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে নেতারা একটি ফান্ডের নাম করে জমা নেন।
দলের একাংশের কর্মীদের দাবি, ডিএসপিতে ঠিকাশ্রমিক দু’ভাবে নিয়োগ হয়। কিছু শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমে নিয়োগ হয়। আবার কিছু শ্রমিক কোম্পানির ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়োগ হয়। সেই ঠিকাদারদেরও নেতারাই শ্রমিক সরবরাহ করে। একজন ঠিকাশ্রমিকের বেতন মাসে প্রায় ১৪ হাজার টাকা। যাঁরা সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কাছের লোক, তাঁরা ওই টাকাই পান। কিন্তু যাঁরা কোম্পানির ঠিকাকর্মী হিসেবে নিয়োগ হয়, তাঁদের হাতে মাসের শেষে আট থেকে ১০ হাজার টাকা আসে বলে অভিযোগ। বাকি টাকা কোথায় যায় তা নিয়ে রহস্য রয়েছে।
তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, ডিএসপির ঠিকাশ্রমিকদের টাকায় বাম আমলের মতো তৃণমূলের যুগেও বহু নেতা ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। বিদ্যাপতির এক নেতা ক্ষমতায় আসার আগে মুদির দোকান করে সংসার চালাতেন। এখন তিনি দামি গাড়ি ছাড়া চলাফেরা করেন না। তাঁর লাইফ স্টাইলও অন্যরকম। আবার আমরাই গ্রামের এক নেতা আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তাঁরও জীবন যাপনও দেখে যেকারও চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আগে তিনি সাইকেল নিয়ে ঘুরতেন। এখন সর্বক্ষণ দামি গাড়িতে ঘোরেন। নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন, এই সমস্ত ফুলেফেঁপে ওঠা নেতাদের সরিয়ে দলে শুদ্ধিকরণ না করলে দুর্গাপুরে ঘুরে দাঁড়ানো তৃণমূলের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ক্ষমতা এবং অর্থের লোভে বারবারই তাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়ে যাওয়ায়, জনতার মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি করা হয়। কিন্তু কোনও কারখানাতেই কমিটি গঠন করা হয়নি। শহরে বিশ্বনাথবাবুর গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে, প্রাক্তন আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীও সক্রিয় রয়েছে। দুই নেতার মধ্যে কয়েক যোজন দূরত্ব রয়েছে। সেকারণে কয়েকদিন আগে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারি দুই নেতাকে একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন। কিন্তু, তারপরেও দু’পক্ষ অনড় রয়েছে।
বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীদের দাবি, যাঁদের জন্য দলের ভরাডুবি হয়েছে তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা সম্ভব নয়। প্রভাতবাবুর অনুগামীদের দাবি, শহরের সব নেতার ওয়ার্ডেই ভরাডুবি হয়েছে। তাই এককভাবে কাউকে দায়ী করা উচিত নয়। এছাড়া তাঁরাও বহু দিন ধরেই দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, রবিবার রাতে আমরাই গ্রামের মোড়ে বিশ্বনাথবাবু এবং প্রভাতবাবুর অনুগামীদের মধ্যেই সংঘর্ষ বাধে। প্রভাতবাবু বলেন, গ্রামের মোড়ে দলের বেশ কিছু কর্মী বসেছিল। সেই সময় হঠাৎ করেই তাদের উপর হামলা করা হয়। বিশ্বনাথবাবু বলেন, এই ঘটনার কথা জানি না। তবে, শুনেছি ওদের নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষ হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।