কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
রবিবার দুপুরে ওল্ড দীঘার জগন্নাথ ঘাটে মহম্মদ আশিক রাজার(২২) দেহ উদ্ধার হয়েছিল। বিকেলে জগন্নাথ ঘাটের কাছেই মহম্মদ সাজিদের(২৭) দেহ উদ্ধার হয়। যদিও, প্রথমে সাজিদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাজা ও সাজিদের বাড়ির লোকজন দীঘায় এসে পৌঁছনোয় সাজিদের দেহটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়। মৃত সাজিদ আশিকের মামা বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের বাড়ি কলকাতার নারকেলডাঙা এলাকায়। এঁরা একই পর্যটক দলের সঙ্গে দীঘায় বেড়াতে এসেছিলেন। সোমবার কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের পর দু’টি দেহ তাঁদের বাড়ির লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁরা রবিবার সকালে ওল্ড দীঘার সমুদ্রে স্নানে নেমে তলিয়ে গিয়েছিলেন বলে পুলিসের দাবি। এর আগে শনিবারও দীঘার সমুদ্রে স্নানে নেমে তলিয়ে যাওয়া কামারহাটির মহম্মদ কোয়েশ(১৮) নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। এদিকে, পুলিসি বাধা না মেনে সমুদ্রের গভীরের দিকে স্নান করার জন্য সোমবারও কয়েকজন বেপরোয়া পর্যটককে আটক করে পুলিস।
প্রসঙ্গত, দীঘাজুড়ে মোতায়েন রয়েছে প্রচুর নুলিয়া, সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিস, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। একের পর এক পর্যটকদের মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে রোধ করা যাবে, সেটাই পুলিস-প্রশাসনের কাছে এখন মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুলিসের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে জলে নেমে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পর্যটকরা। মদ্যপ অবস্থায় জলে নামছেন অনেকেই। আবার বিপজ্জনক জায়গায় নামার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না অনেকেই। সৈকতে হলুদ দড়ি দিয়ে সীমারেখা করে দেওয়া হলেও তাতে লাভ হচ্ছে না। যার জেরেই বিপত্তিগুলি ঘটে যাচ্ছে। তবে উদ্ধারকারী দলের তৎপরতায় গত কয়েকদিনে একাধিক পর্যটককে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। না হলে মৃত্যুর পরিমাণ অনেকগুণ বেড়ে যেত বলে মনে করছেন পুলিস আধিকারিকরা।
ঘটনা হল, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তাণ্ডবের পর থেকেই ওল্ড দীঘার সমুদ্রসৈকতে বহু জায়গায় চোরাবালির ‘পকেট’ তৈরি হয়েছে। যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। হাঁটু সমান জলে এগতে এগতে আচমকাই গভীর গর্তে পড়ে সেখানে গত কয়েকদিনে একাধিক পর্যটকের প্রাণ সংশয় হয়েছে। পুলিস-প্রশাসনের এবিষয়ে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে পর্যটকদের দাবি।
তবে, এই ঘটনাগুলির পর বেশকিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিস-প্রশাসন। জানা গিয়েছে, বর্তমানে দীঘার সৈকতে ৪০জন নুলিয়া রয়েছেন। আরও ১০জনের বেশি নুলিয়া নিয়োগ করা হচ্ছে। স্নানের ঘাটগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। সৈকতের নিরাপত্তার বহর বাড়াতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলির বেশ কয়েকজন পুলিস অফিসারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা নজরদারি ও নিরাপত্তার বিষয়টি পরিচালনা করবেন। পর্যটকরা বিপজ্জনক জায়গায় স্নানে নামলে তৎক্ষণাৎ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকরা মদ্যপ অবস্থায় বা সমুদ্রের গভীরে গিয়ে স্নান করলে তাঁদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফণীর জন্য সৈকতে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হওয়া চোরাবালির গর্তগুলি মেরামত করার জন্য দীঘা¬-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে পুলিস-প্রশাসন। এবার মাইকিং করার উপরও আরও বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে।
কাঁথির এসডিপিও সৈয়দ এমএম হাসান বলেন, সৈকতে পুলিস, নুলিয়া, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সবসময় তৎপর থাকে। আসলে পর্যটকরা কোনও বাধা না মানার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তাই আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে, পর্যটকদের কাছে আমাদের একটাই আবেদন, তাঁরা যেন নিজেরা আরও সতর্ক হন। হয়তো এই ধরনের ঘটনাগুলি ঠেকানো মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। পর্যটকরা দায়িত্ববান না হলে পুলিস বেপরোয়া পর্যটকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে।