কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
এব্যাপারে পুরুলিয়ার পুলিস সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, বলরামপুরে তিনটি ঘটনা হয়েছিল। তারমধ্যে একটি ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অন্য দুটি ঘটনায় মোট তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। কেন্দা থানার ঘটনা জামিনযোগ্য ছিল। অন্যদিকে পুরুলিয়ার মফস্সল ও মানবাজারে অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটপর্বে পুরুলিয়ায় কোথাও বড় কোনও রাজনৈতিক সংঘর্ষ বা অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে জেলার একাধিক থানা এলাকায় বিজেপির বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ায়। কোথাও বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও কোনও ঘটনাতেই একজনও গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জুন পুরুলিয়ার মফস্সল থানার ভাগাবাঁধ গ্রামে বিজয় মিছিল করে বিজেপি। সেই বিজয় মিছিল থেকে ছোঁড়া বাজিতে এক তৃণমূল কর্মীর খড়ের পালুই পুড়ে যায়। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে মহিলা সহ তৃণমূল কর্মীদের উপর বিজেপি চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় ছ’জন তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন। ঘটনার পর এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক বলে দাবি পুলিসের।
কেন্দা থানার পারবাইদ গ্রামে ৩ জুন তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থক দু’টি পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় দু’পক্ষের মোট ছ’জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি সমর্থকের ছেড়ে দেওয়া ছাগল তৃণমূল কর্মীর জমিতে সব্জি নষ্ট করে দেওয়ায় দুই পরিবারের সংঘর্ষ হয়। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, ওই গ্রামের এক বিজেপি কর্মী গেরুয়া শিবিরের বিজয় মিছিলে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্যই তৃণমূলের কর্মীরা তাঁর উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। বিজেপির বিজয় মিছিলের দিনেই এই ঘটনা ঘটে। পরে দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস।
অন্যদিকে, বলরামপুর থানার ফতেপুর গ্রামে ৩ জুন বিজেপির বিজয় মিছিল থেকে পুলিসকে আবির মাখানোর অভিযোগ ওঠে। এমনকী, পুলিসকে লক্ষ্য করে বাজিও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিসের পাল্টা লাঠিচার্জে ১০জন বিজেপি কর্মী জখম হন। তাদের মধ্যে দু’জনকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরের দিন খোদ পুলিস সুপার জানান, নির্দিষ্ট ধারায় মামলা শুরু করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। যদিও থানায় মামলা রুজু হলেও অভিযুক্তদের একজনকেও ধরতে পারেনি পুলিস।
মানবাজার থানার বামনি গ্রামে সোমবার দলের বিজয় মিছিল থেকে ফেরার পরে বিজেপি কর্মী এক দম্পতিকে দোকানে এসে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাঁদের মারধরের পাশাপাশি বাড়ির লোকজনকেও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। জখম অবস্থায় ওই দম্পতি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনায় তিনজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও পলাতক অভিযুক্তরা। এত অশান্তির ঘটনায় একজনকেও গ্রেপ্তার করতে না পারায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। প্রতিটি ঘটনাতেই নির্দিষ্ট অভিযোগের পরেও কাউকে গ্রেপ্তার না করা নিয়ে চারটি থানার পুলিসেরই সাফাই, অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।
সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একাধিক মন্ত্রী পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে পুরুলিয়ার বিভিন্ন মহল থেকে জেলায় অশান্তির ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।