বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এ ব্যাপারে মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) বৈভব চৌধুরী বলেন, সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকেই সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। বেশকিছু ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারমধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা দিতে অনীহা সংক্রান্ত অভিযোগ বেশি আসছে। জেলাশাসকের নির্দেশে আমরা বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির মালিক তথা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করব।
উল্লেখ্য, মালদহে ব্যাঙের ছাতার মতো নার্সিংহোম গজিয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তুলনায় অনেক বেশি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ইংলিশবাজার শহরে সবচেয়ে বেশি নার্সিংহোম চালু হয়েছে। তবে চিকিৎসকের অভাব সংশ্লিষ্ট বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে বেশি করে প্রকট হয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশ ওইসব নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে ওয়াকিবহাল মহলে অভিমত। ফলে নার্সিংহোমে ভর্তি রোগীদের অবস্থার অবনতি হলে শেষমেশ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। তবে তার আগে রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এদিকে আত্মীয় পরিজনরাও প্রথমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা অন্য কোনও সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রোগীদের নিয়ে যেতে চান না। তাঁরা নার্সিংহোমেই রোগীকে ভর্তি করেন। অনেক ক্ষেত্রে দালাল বা অ্যাম্বুলেন্স চালকদের একাংশ গ্রামাঞ্চল থেকে আসা রোগীদের সরাসরি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁরা রোগী পিছু কমিশন পেয়ে থাকেন। ব্লক স্তরের হাসপাতালগুলি থেকে রেফার হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রেই এই ঘটনা বেশি ঘটে বলে অভিযোগ। কিছু কিছু বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের নাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের নামের সঙ্গে অনেকটা মিল রেখে দেওয়া হয়। যাতে বাইরের রোগীর আত্মীয়দের সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়, তারজন্যই এই ছক বলে অনেকের মত। রোগীর আত্মীয়রা এসব বুঝে ওঠার আগেই পকেট ফাঁকা হয়ে যায়।
অন্যদিকে, সম্প্রতি মালদহ জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া গিয়েছে। দু’দিন আগেই সুজাপুরের একটি নার্সিংহোমকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ফেরানো, হাসপাতালের রেজিস্টার ঠিকভাবে পূরণ না করা, চিকিৎসক না থাকা সহ একাধিক অভিযোগ বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে জমা পড়ে। তার ভিত্তিতে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর এবং প্রশাসনের তরফে তদন্ত করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রশাসনের তরফে ইংলিশবাজার শহর সহ জেলার একাধিক ব্লকের নার্সিংহোমকে পরপর জরিমানা করা হয়। তবে তারপরও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। ফলে সকলকে ডেকে এ ব্যাপারে প্রশাসন আলোচনা করতে চাইছে। শুক্রবারের বৈঠকে এ ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তাও দেওয়া হবে। রোগীদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ বরদাস্ত করা হবে না বলে প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারও এ ব্যাপারে কড়া অবস্থা নিয়েছে। সেই নির্দেশ জেলা স্তরেও পৌঁছেছে। ফলে গুরুতর অভিযোগ শোনার পরও জেলা প্রশাসন যে হাতগুটিয়ে বসে থাকবে না তা নার্সিংহোম মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বৈঠকে কী কী বিষয় অধিক গুরুত্ব পায় সেটাই এখন দেখার।