নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: করোনার দাপটে বর্তমানে মালদহের স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। জেলায় দৈনিক গড়ে প্রায় ৫০০ জন করে নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। পরীক্ষা করাচ্ছেন না, এমন অনেকের শরীরেও ওই ভাইরাস বাসা বেঁধেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জেলায় টিকাকরণ প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। করোনার প্রকোপের কারণে টিকাকরণের গতি যে কিছুটা শ্লথ হয়েছে তা আধিকারিকরাও মেনে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) বৈভব চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমরা ১৫-১৮ বছর বয়সিদের টিকাকরণের উপর জোর দিচ্ছি। এক্ষেত্রে দ্রুতহারে টিকাকরণ হচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের গতি কিছুটা কমেছে। মানুষ বর্তমানে কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় থাকছেন। ফলে টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার মতো সুযোগ তাঁরা পাচ্ছেন না। জেলায় টিকার প্রথম ডোজ শতকরা ৯৫ শতাংশ মানুষ পেয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪০ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ। ফলে এখনও ৪৫ শতাংশ জেলাবাসী করোনা দ্বিতীয় ডোজ পাননি। তবে আমরা দ্রুত ওইসব জেলাবাসীকে টিকা দেওয়ার চেষ্টা করছি। করোনা প্রকোপ কিছুটা কমলেই এই ছবিটা বদলে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।
উল্লেখ্য, মালদহে প্রায় ৩০ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ককে টিকাকরণের লক্ষ্য নিয়ে জেলা প্রশাসন ময়দানে নামে। প্রথম দিকে টিকার অনিয়মিত সরবরাহ সহ নানা সমস্যার জেরে বিষয়টি ধাক্কা খায়। পরবর্তীকালে সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়। মালদহ জেলা প্রশাসন একসময় টিকাকরণে অন্যান্য অনেক জেলাকে পিছনে ফেলে দেয়। মাঝে দৈনিক এক লক্ষ পর্যন্ত টিকাকরণ হয়। টিকার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়। বুথে বুথে চলে টিকাকরণ। এদিকে, টিকা নেওয়ার ব্যাপারে জেলার বাসিন্দাদের একাংশ অনীহা প্রকাশ করেছেন বলে স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন। তাঁদের রাজি করানোর চেষ্টা চলছে। ভ্রান্ত ধারণা এবং কুসংস্কার থেকেও অনেকে টিকার ব্যাপারে উদাসীন। তবে করোনা থেকে বাঁচতে টিকা নিতেই হবে বলে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।