বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
গঙ্গারামপুর মহকুমার গঙ্গারামপুর, কুশমণ্ডি, বুনিয়াদপুর শহরের কুমোরটুলিতে বুধবার দুপুরেও গিয়ে দেখা গেল, হরেক আকারের প্রতিমা পড়ে রয়েছে। বানানোর পরেও সেসব প্রতিমা বিক্রি না হওয়ায় স্বভাবতই মন ভালো নেই শিল্পীদের। তবে পুজোর আগের দিন সকাল অবধি অপেক্ষা করতে চাইছেন তাঁরা। তারপরেও যেসব প্রতিমা বিক্রি হবে না, সেগুলি চলে যাবে শিল্পীদের কারখানায়, ভোল বদলাতে।
গঙ্গারামপুর শহর এলাকার মৃৎশিল্পী জিতেন পাল বলেন, মহকুমায় মৃৎশিল্পীদের করুণ দশা। করোনার আবহে প্রথম দিকে তো দীর্ঘদিন কোনও কাজই জোটেনি। এখন বিশ্বকর্মা প্রতিমারও সেরকম বিক্রি নেই। এভাবে চলতে থাকায় আর্থিক মন্দার মুখে পড়তে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার অনেক কম সংখ্যক বিশ্বকর্মার প্রতিমা তৈরি করলেও চাহিদা নেই। পুজোর আগের দিন পর্যন্ত মাঝারি ও ছোট প্রতিমার বিক্রি নেই। খড়, পাটের দড়ি, রং-সব মিলিয়ে অনেক খরচ হয়েছে প্রতিমা তৈরির জন্য। বিশ্বকর্মার প্রতিমাকেই দুর্গাপুজোর আগে কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা বানিয়ে দেব। পরে, কার্তিক মাসে আলাদা করেও কার্তিকপুজো হয়। তখনও এই প্রতিমাগুলি কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।
কুশমণ্ডির পালপাড়ার গদাধর পাল বলেন, করোনার মধ্যেই আশা করে বিশ্বকর্মার প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু তেমন বিক্রি হয়নি। অন্যান্যবছর তো বিশ্বকর্মা পুজো থেকে টানা আমাদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। এবার সব কিছুই বদলে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর প্রতিমা যখন গড়া হবে, তখন এই প্রতিমাগুলিকেই আবার আমরা ব্যবহার করব। বিশ্বকর্মার সঙ্গে কার্তিকের প্রতিমার গঠনগত অনেক মিল রয়েছে। সেটা সহজে করা যায়। অনেক সময় এই প্রতিমা থেকেই লক্ষ্মী প্রতিমা বানানো যায়। তবে সেক্ষেত্রে খাটনি বেশি হয়। এখন যা অবস্থা, সামাল দিতে সবকিছু করতেই তৈরি আমরা।
জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে একে তো ছোট শিল্পগুলি ধুঁকছে। তার উপর আবার সংক্রমণের ভয়ে কেউই জাঁকজমক করে পুজোর আয়োজন করে ভিড় করার পক্ষপাতী নয়। তাই এলাকার ছোট ছোট কারখানাগুলি, গাড়ির মালিকদের অধিকাংশই এবারে ছাঁচের প্রতিমা ও ঘট পুজোর উপর জোর দিচ্ছে। নিয়মরক্ষা করার জন্যই এবারের পুজো, বলছেন তাঁরা। আর সেজন্যই মৃৎশিল্পীদের বাজার মন্দা।
গঙ্গারামপুরের একটি চালকলের মালিক রথীন হালদার বলেন, এবারে ব্যবসা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আড়ম্বর করে পুজো করার মতো আর্থিক অবস্থা ও মানসিকতা, কোনওটাই নেই। ছাঁচের প্রতিমা দিয়েই নিয়মরক্ষার পুজো করব। শহরের সব ছোট মিলগুলিরই একই অবস্থা।