বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সুরেশবাবু মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে মালদহে এসেছিলেন। শুক্রবার রাত দুটো নাগাদ ওই ব্যক্তি মারা যান বলে পরিবার সূত্রে খবর। কি কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তা স্পষ্ট হয়নি। প্রশাসন বা পরিবার কেউই এব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি। কিন্তু সুরেশবাবুর মৃত্যুর পর থেকেই এলাকায় করোনা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে স্থানীয় কাঠিকান্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে প্রায় ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক পালিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আশ্রয় নেন। পরে আরও কয়েকজন শ্রমিক সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে চাকনগর হাই স্কুলেও আশ্রয় নেন। সব মিলিয়ে এলাকায় থমথমে পরিবেশ রয়েছে। মৃতের পরিবার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে মৃতদেহ গাজোল থানার পুলিস উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মৃতের ভাইপো নরেন সাহা বলেন, কাকার কোনও অসুখ ছিল না। পুনেতে শ্রমিকের কাজ করছিল। কয়েকদিন হল আরও কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে দল বেঁধে বাড়ি ফিরে আসে। গ্রামবাসীদের আপত্তিতে তারা বাড়ি ঢুকতে পারেনি। সকলে ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিল। শুক্রবার রাতে খবর পাই যে কাকা মারা গিয়েছে।
এবিষয়ে গাজোল বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের দীপালি বিশ্বাস বলেন, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে সকালে খবর পেয়েছি। কিভাবে মৃত্যু হল, সেটা এখনও জানতে পারেনি। পুলিস বিষটি তদন্ত করে দেখছে। বাকি শ্রমিকদের দেখাশোনা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে রসদ ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির সাধুচরণ সরকার বলেন, কি করে শ্রমিক মারা গেল, আমরা বুঝতে পারছি না। স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিস প্রশাসনকে বিষয়টা জানানো হয়েছে। ওই ব্যক্তির আগে কোনও অসুস্থতার লক্ষণ ছিল না। পোস্ট মর্টেম করলে পুলিস বিষয়টি বুঝতে পারবে। ১০ জন শ্রমিক ভয়ে পঞ্চায়েত অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের লালা পরীক্ষা করা হবে। পঞ্চায়েতে আশ্রয় নেওয়া শ্রমিকরা বলেন, সহকর্মীর মৃত্যুতে আমরা ধোঁয়াশায় রয়েছি। সে কারণে কোয়ারেন্টাইন ছেড়ে পঞ্চায়েতে আশ্রয় নিয়েছি। আমদের পরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়া হোক। আমরা এভাবে থাকতে চাইছি না। গাজোল থানার পুলিস জানিয়েছে, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মে পুনে থেকে ফিরেছিলেন ২২ জন শ্রমিক। তাঁরা চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজবহর গ্রামে ফিরতেই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তাঁদের পঞ্চায়েতের ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় কাঠিকান্দর প্রাথমিক স্কুলে রাখা হয়। তাঁদের কারওর সোয়াব টেস্ট করা হয়নি। শুক্রবার গভীর রাতে ওই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। রাতেই শ্রমিকরা ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ছেড়ে দেন। প্রসঙ্গত, লকডাউন কিঞ্চিৎ শিথিল হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনের সহযোগিতায় হোক বা নিজেদের উদ্যোগে, মালদহে দলে দলে শ্রমিক ফিরতে শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে কাউকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কাউকে আবার পঞ্চায়েতের উদ্যোগে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত মালদহে হাজার হাজার শ্রমিক বাইরে থেকে ফিরলেও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে মৃত্যুর খবর এই প্রথম।