গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
এই চাপানউতোরের মাঝে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের মদতে রেলের জায়গায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর তৈরি করে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। সেই ঘর ভেঙে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। বিরোধীদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা পদের অপব্যবহার করে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এই অবৈধ কাজের অনুমোদন করেছে। বিরোধীরা এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্যেই এলাকায় সুর চড়াতে শুরু করেছে। এবিষয়ে পুরাতন মালদহ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা বিজেপির নিতাই মণ্ডল বলেন, আইনত রেলের জায়গায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর হয় না। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রশাসনের একাধিক আমলারা মিলিঝুলি ভাবে কাটমানি নিয়ে জেনেশুনে ওই জায়গায় ঘর বানাবার অনুমতি দিয়েছে। পরে সেই ঘর রেল কর্তৃপক্ষ ভেঙে দিয়েছে। এটা সরাসরি গরিব মনুষের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা চাইছি এনিয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত হোক। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনব।
পুরাতন মালদহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মৃণালিনী মণ্ডল মাইতি বলেন, ওই আবাস যোজনার ঘর বিলিতে সভাপতির কোনও ভূমিকা নেই। ঘর বিলি নিয়ে সমস্ত কিছু স্থানীয় প্রধানই দেখভাল করেন। পঞ্চায়েত স্তরে এইসব কাজ হয়। এখানে আমি কোনও টাকা পয়সা নিইনি।
এদিকে তৃণমূল পরিচালিত মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুরাইয়া বিবি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিষয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত দেখে না। এবার যে টাকা দেওয়া হয়েছে সবই পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে হয়েছে। এখন যা ঘটেছে, সেজন্য কে দায়ী আর কে দায়ী নয়, তা আমি বলতে পারব না। এবিষয়ে পুরাতন মালদহ ব্লকের বিডিওকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। অফিসেও তিনি কথা বলতে চাননি।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুভানন চন্দ বলেন, রেলের জায়গায় কখনই কেউ পাকা বাড়ি করতে পারবে না। সেটা অবৈধ।
এবিষয়ে নলডুবি গ্রামের বাসিন্দা সরস্বতী কর্মকার বলেন, আমরা গরিব মানুষ। টিনের ঘরে থাকতাম। ব্লক থেকে ঘর দিয়েছিল। সেই ঘর রেল পুলিস গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এখন মাথা গোজার ঠাঁই নেয়। এই শীতে খোলা আকাশের নীচে দু’দিন ধরে আছি। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রিপন বর্মন বলেন, আমরা কাটমানি নিয়ে ঘর বিলি করেনি। তবে ওটা রেলের জায়গা কি না, তা আমাদের জানা নেই ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার পুরাতন মালদহ ব্লকের নলডুবিতে রেলের জমিতে রেল পুলিস উচ্ছেদ অভিযান চালায়। সেখানে অন্যান্য বাড়ি ভাঙার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার একাধিক ঘরও ভাঙা হয়। তারপরই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়।
অভিযোগ, রেলের জমিতে ঘর বানাবার জন্য ‘অনুমতি’ দেওয়া নিয়ে রীতিমতো কাটমানির খেলা চলেছে ওই এলাকায়। আশ্বাস পেয়ে সরকারি জমিতে ঘর বানান দরিদ্র বাসিন্দারা। পরে সেই ঘর আবার ভেঙে দেয় রেল।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর বিলি নিয়ে এর আগে স্বয়ং জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ব্লকে ব্লকে সভা করে কাটমানির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এনিয়ে ব্লক স্তরের আমলাদেরও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও অভিযোগ ওঠায় বিরোধীরা প্রশাসনেরই ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে।