গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
তাঁর ভাইপো তৃণমূলের যুব নেতা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নাম জানলেও তাঁর পদবি জানেন না বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, অভিষেকের স্ত্রী পাঞ্জাবি, সেটুকুই জানি। ওর টাইটেল জানতে চাইনি। এমনকী তাঁর গাড়ির চালকের নাম জানলেও পদবি জানা নেই। প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও টাইটেল নিয়ে মাথা ঘামাইনি কোনওদিন। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। মমতার তৈরি করে দেওয়া ‘আমরা সবাই নাগরিক’ এই স্লোগানকে অস্ত্র করে তৃণমূলের এই ধর্না শুরু হয়েছে। সেই স্লোগানের পটভূমিতে এদিন মমতা বলেন, জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন নয়, এ দেশ সবার। তিনি বলেন, নবান্ন, তৃণমূল ভবন এবং তাঁর বাড়িতে মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম আছে। প্রতিদিন তিনি নিজের হাতে নবান্ন ও কালীঘাটের বাড়িতে মাছদের খেতে দেন। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে তাঁর প্রশ্ন, শতাধিক মাছ রয়েছে, তাদের কী টাইটেল তা কি কেউ জানে। সমাজটাও এমনই। সেখানেও সবাই একসঙ্গে থাকে। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। সবাইকে ভালোবাসতে হয়। তাই মানুষই প্রধান, তার পদবি নয়। সেই জায়গা থেকে সরে এলে আমার দুঃখ হয়।
উল্লেখ্য, মমতা সহ বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) সমাজকে ধর্মের নামে বিভাজিত করার লক্ষ্যে আনা হয়েছে। যা সঙ্ঘ পরিবারের এজেন্ডা। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ ধ্বংস করতেই এই আইন এনেছে বিজেপি। তাই এর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে কলকাতা সহ জেলায় জেলায় দীর্ঘ পদযাত্রায় নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এদিন ধর্মতলার মঞ্চ থেকে তাঁর জাতপাত, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সামাজিক ঐক্যের কথা বলেছেন মমতা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, তৃণমূল নেত্রী পরোক্ষে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের হিন্দুত্ববাদকেই নিশানা করেছেন। টিএমসিপি’র এই ধর্নামঞ্চে এই নিয়ে পাঁচদিন হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কোনও বক্তৃতা করবেন না। মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও রাজ্যসভার সদস্য দোলা সেনকে গান গাইতে বলেন। ধর্নায় অংশ নেওয়া পড়ুয়ারাও গান করেন। তাঁর কথা সুরারোপিত একাধিক গান গেয়ে শোনান ইন্দ্রনীল। ১৯৯৩ সালে যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী হিসেবে মানবাধিকারের দাবিতে ধর্মতলায় অবস্থান বিক্ষোভ করেছিলেন মমতা। সেই সময়ের অবস্থান মঞ্চে বসেই সেই আন্দোলনকে নিয়ে গান বেঁধেছিলেন তিনি। নিজেই সেখানে বসে সিন্থেসাইজারে সুর দিয়েছিলেন। এদিন মমতা সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে ইন্দ্রনীলকে গানটি গাইতে বলেন। মাঝপথে গায়ককে ভুল ধরিয়ে দিতে নিজেই গেয়ে ওঠেন মমতা।
সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, ঘটনাচক্রে তারই মধ্যে নির্বিঘ্নে গঙ্গাসাগর মেলা সমাপ্ত হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এবার রেকর্ড সংখ্যক ভিড় হয়েছিল মেলায়। ৫৫ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। অথচ একটাও অঘটনের খবর নেই। দেশের আর কোথাও এত সুষ্ঠুভাবে সরকারি খরচে কোথাও মেলা হয় না বলে জানিয়েছেন তিনি। এবারের মেলায় ৪০ জন ভূমিষ্ঠ হয়েছে। নিরাপদে সেইসব মা তাদের সন্তান নিয়ে ফিরে গিয়েছে, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে? প্রশাসক হিসেবে তৃপ্ত মমতার প্রশ্ন জনতার উদ্দেশে।