গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
তিনি আরও বলেন, কৃষক দরদি এই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সাল থেকে মুণ্ডেশ্বরী নদী সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। নদী সংস্কারের ফলে হাওড়া ও হুগলির গ্রামীণ এলাকার বহু কৃষিজীবী মানুষ উপকৃত হবেন। তবে নদী সংস্কারের কাজ শুরু হলে সাময়িকভাবে বোরো চাষের ক্ষেত্রে কিছুটা সেচের জলের সমস্যা হতে পারে। তাই স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক আধিকারিক, জেলা পরিষদের প্রতিনিধি ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ওই সমস্যা যাতে মেটানো যায়, সেই জন্যই এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৭ফেব্রুয়ারি থেকে মুণ্ডেশ্বরী নদীর সংস্কারের কাজ শুরু হবে। মূলত মুণ্ডেশ্বরী নদীর উৎপত্তি থেকে পাঁচ কিলোমিটার বাদ দিয়ে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১৪কিলোমিটার নদীর পলি উত্তোলন ও পাড় সংস্কারের কাজ করা হবে। আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলবে এই সংস্কারের কাজ। এর ফলে হাওড়া জেলার আমতা, উদয়নারায়ণপুর এলাকার পাশাপাশি আরামবাগ মহকুমার চারটি ব্লকের কয়েক হাজার চাষি মুণ্ডেশ্বরী নদী থেকে আগামী দিনে স্থায়ীভাবে চাষের জলের সুবিধা পাবেন।
এদিন খানাকুল-১ ব্লক অফিসের মিটিং হলে প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত থেকে শুভেন্দুবাবু বলেন, মূলত চাষিদের স্বার্থেই রাজ্য সরকারের তরফে এই বৃহত্তর নদী সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এনিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যস্তরে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। এরপর জেলা পর্যায়ের আধিকারিকরা বুধবার হুগলি জেলা পরিষদ ভবনে একটি বৈঠক করেন। তারপর সরাসরি গ্রাউন্ড লেভেলে এসে প্রশাসনিক বৈঠক করা হচ্ছে। কৃষকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় এবং প্রকল্পের কাজে কোনও রকম সমস্যা সৃষ্টি না হয়, তার জন্য ব্লক প্রশাসনকে প্রয়োজনে লিফলেট বিলি করার কথা বলেন মন্ত্রী।
পাশাপাশি তিনি এও বলেন, কৃষিকাজে সাময়িক সমস্যা হলেও এই নদীর সংস্কার হলে আগামী কয়েক দশক বন্যাকবলিত খানাকুল এলাকার মানুষ বন্যার হাত থেকে রেহাই পাবেন। পাশাপাশি চাষের কাজেও নদী থেকে জলের সুবিধা মিলবে। অন্যদিকে, নদী সংস্কারের কাজ চলাকালীন চাষিদের যাতে চাষের কাজে জলের সমস্যায় পড়তে না হয়। তার জন্য জেলা পরিষদ, সেচ ও জল পরিবহণ দপ্তর এবং ক্ষুদ্র সেচ দপ্তরকে একযোগে কাজ করবার কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি নদী পার্শ্ববর্তী কৃষিজমিতে অচল পাম্প স্টেশনগুলিকে দ্রুত চালু করার নির্দেশ দেন। প্রয়োজনে অতিরিক্ত পাম্প বসানোর কথাও এদিনের প্রশাসনিক সভায় উঠে আসে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর বোরো চাষের আগে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে জেলা পরিষদের তরফে বোরো বাঁধ নির্মাণ করে চাষের কাজে সেচের ব্যবস্থা করা হতো। তার জন্য প্রতি বছরই হুগলি জেলা পরিষদকে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করতে হয়। কিন্তু, মুণ্ডেশ্বরী নদীর সংস্কার হলে স্থায়ীভাবে সেচের জলের সমস্যা মিটবে। যে কারণে ১৯ কিলোমিটার মুণ্ডেশ্বরী নদী সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে মুণ্ডেশ্বরীর ১৪ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য নদীর বালি, মাটি ও পলি তোলা হবে। পরবর্তী সময়ে ওই বালি, পলি এবং মাটি কী কাজে ব্যবহৃত হবে, তার জন্য পৃথক একটি রূপরেখা তৈরি করা হবে।
এদিন হুগলি জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, প্রতিবছরই বন্যায় খানাকুল পুরশুড়া এলাকার বহু মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। এই নদীর সংস্কারের কাজ শেষ হলে বন্যার হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে। সরকারি নির্দেশ মতো দ্রুত কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।