গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি মেলার উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। সেই অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেদিন আসেননি। এদিকে জলপাইগুড়ির এমপি বিজেপির জয়ন্ত রায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে সেখানে এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সেই সময়েই বিজেপি আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরা আন্দোলনরত পড়ুয়াদের উপরে চড়াও হয়ে আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। যদিও বিজেপি ওই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য আকাশদীপ সরকার বলেন, এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে আমাদের ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল। জলপাইগুড়ির এমপি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। সেই সময়ে বাইরে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ মুখে কাপড় বেঁধে কিছু লোক ক্যাম্পাসে দলে বেঁধে ঢুকে যায়। তারা যথেচ্ছভাবে ছাত্রদের মারধর করে। ওরা ইটও ছোঁড়ে। তাতে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সেই সময়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, জেলাশাসক সকলেই ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। বহিরাগত গুন্ডারা ঢুকে যেভাবে হামলা করেছে তা জেএনইউ’র থেকে কোনও অংশে কম নয়। সেই কারণেই এদিন স্নাতক স্তরের সমস্ত পরীক্ষা বয়কট করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমাদের অন্দোলন লাগাতার চলবে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার থেকে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট ডেকেছি।
বিজেপির কোচবিহারের জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, এমপি’কে নিমন্ত্রণ করে এনে সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এমপি সেখানে কিছুক্ষণ থেকে চলে যান। ক্যাম্পাসে কোনওরকম গণ্ডগোল, মারপিট হয়নি। মারপিট হলে তো অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতেন। তা হয়নি এটাই তার প্রমাণ। কৃষি মেলায় অনেকেই গিয়েছিলেন। মেলাতে বিজেপি কর্মীরাও ছিলেন। বিক্ষোভের সময়ে আমাদের কর্মীরা এমপি’কে নিরাপদে বাইরে বের করে আনেন। ওসব ওরা এখন বানিয়ে বলছে।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (পরীক্ষা) প্রদ্যুৎকুমার পাল বলেন, এদিন স্নাতক স্তরের পরীক্ষা বাতিল হয়নি। সিডিউলের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। তবে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আসেনি। স্নাতক স্তরের সেমেস্টারের পরীক্ষায় এদিন প্রায় ৩৪০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেয়নি। আমাদের এখানে কৃষি মেলা চলছে। পুলিস জানিয়েছে, গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইস্টার্ন রিজিওন কৃষি মেলাকে কেন্দ্র করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় ছাত্র বিক্ষোভ, নিরাপত্তার দাবি তুলে আন্দোলন চলছে। ওই কৃষি মেলায় কৃষিমন্ত্রীর আসার কথা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি অসুস্থ থাকায় কৃষি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসেননি। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ির এমপি জয়ন্ত রায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছলে সেখানে তাঁকে ঘিরে একদল পড়ুয়া বিক্ষোভ দেখান। সেই সময়েই বিজেপি বিক্ষোভকারীদের উপরে আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যায়। যার জেরে বুধবার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা বয়কটের মতো ঘটনা ঘটে। অপরদিকে সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষেতে কৃষি মেলারও মূল সুর কেটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।