বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যে গঙ্গারামপুরের কালীপুজো বিখ্যাত। এই শহরে যে কয়েকটি বিগ বাজেটের কালীপুজো হয়, সেগুলির মধ্যে তরুণের আহ্বান ক্লাবের পুজো দর্শনার্থীদের কাছে বরাবরই জনপ্রিয়। এই ক্লাব স্থানীয় মহলে বিপ্লববাবুর ক্লাব নামেই বেশি পরিচিত। লোকসভা ভোটের সময়ে প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে বিপ্লববাবুর। তারপর ভোটে বালুরঘাট আসনে তৃণমূল হারে। বিপ্লববাবুর জেলা সভাপতির পদ যায়। তার মাস কয়েক পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। দলে ঢুকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ বিজেপির হাতে তুলে দেওয়ার ছক করেন বিপ্লববাবু। কিন্তু তাঁর সেই পরিকল্পনাও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তরুণের আহ্বান তথা বিপ্লববাবুর ক্লাবের পুজোয় কতটা জাঁকজমক হয়, শহরের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলেরও। ক্লাবের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে যে তাদের পুজো এবার আড়ম্বর করেই হচ্ছে। ক্লাব সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এবারে আরও বড় পুজোর আয়োজন করে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ময়দানে নেমে পড়েছেন বিপ্লব মিত্র। বিপ্লববাবু ইতিমধ্যে নিজের ক্লাবের খুঁটিপুজো করে কালী পুজোর মণ্ডপের কাজের উদ্বোধন করে দিয়েছেন।
বিপ্লববাবু বলেন, বরাবরই আমার ক্লাব জেলা তথা উত্তরবঙ্গের মধ্যে কালীপুজোর আয়োজনে একটা আলাদা জায়গা করে নেয়। এবারেও তার কোনও পরিবর্তন হবে না। আমি বিজেপিতে যোগদান করেছি। সঙ্গে আমাদের ক্লাবের অনেক সদস্যও বিজেপিতে যোগদান করেছেন। সম্প্রতি আমার ভাই গঙ্গারামপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্রও বিজেপিতে যোগদান করেছে। এবারে আরও বড় করে কালীপুজো করা হবে। আমরা বুঝিয়ে দেব যে, বিপ্লব মিত্র ও তাঁর সহযোগীদের বিন্দু মাত্র গুরুত্ব কমেনি জেলায়। সেইসঙ্গে দুঃস্থদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে। ভারতের প্রাচীন জনজাতি আন্দামানের জারোয়া সম্প্রদায়ের সমাজজীবন ফুটিয়ে তোলা হবে আমাদের পুজো মণ্ডপে।
পুজো উদ্যোক্তারা জানান, হোগলা পাতা, পাহাড়ের জংলি গাছ, পাটকাঠি, পাট, ঝাউ পাতা দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হবে। এছাড়া মণ্ডপে থাকবে জারোয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের মডেল। কালীপুজোর মণ্ডপে এসে সমুদ্রের মাঝে দ্বীপের ভেতর জারোয়া সম্প্রদায়ের সমাজজীবন দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপ তৈরি করছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁথির ডেকরেটর। পুজো মণ্ডপের ভিতরে মা কালী এবার জারোয়া সম্প্রদায়ের জনজাতির বেশে থাকবেন। গঙ্গারামপুরের মৃৎশিল্পী কালী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। চন্দননগরের চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা থাকবে। শহরজুড়ে ২০ টি আলোর তোরণ বানানো হবে। এবার পুজোর বাজেট ৪৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি দুঃস্থদের মধ্যে পুজোর সময় বস্ত্র বিতরণ করা হবে। পুজোর তিন দিন ধরে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের মতে এতদিন এই ক্লাব তৃণমূলের ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। তবে এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিপ্লববাবুর হাত ধরে তরুণের আহ্বান ক্লাবের একাধিক সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাই এবছর আরও বড় করে পুজোর আয়োজন করে জেলায় নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে চাইছেন বিপ্লববাবু।