বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর সময়ে প্রচুর সংখ্যক পুজোর উদ্বোধন করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কলকাতায় কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন সেরে তিনি কোচবিহারে চলে এসেছিলেন। এরপর চতুর্থীর দিন থেকে লাগাতার তিনি স্থানীয় বিভিন্ন ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেছেন। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে অনেক পুজোর মণ্ডপই সময়মতো শেষ হয়নি। কিন্তু কোচবিহার শহর সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তিনি পুজো উদ্বোধনে ও মণ্ডপ দর্শনে হাজির হয়েছেন। এখন চলছে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পালা।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, কলকাতায় তিনটি পুজোর উদ্বোধন সেরে আমি এখানে চলে এসেছিলাম। চতুর্থীর দিন থেকে পুজোর উদ্বোধন করেছি। এর পাশাপাশি পুজোর দিনগুলোতে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়েছি। দশমী থেকে আমার বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন অঞ্চলের পার্টি অফিসগুলিতে যাচ্ছি। সেখানে বসেই শুভেচ্ছা বিনিময় করছি। এবার আমি পঞ্চাশটির বেশি পুজোর উদ্বোধন করেছি।
পুজো মানেই বহু মানুষের সমাগম। একেকটি পুজোর সঙ্গে সেই এলাকার মানুষ যেমন জড়িত থাকেন, তেমনি সেই সমস্ত পুজো দেখতে আশপাশের বহু মানুষও হাজির হন। তাই পুজোর উদ্বোধন করার বিষয়ে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের একটা আলাদা আকর্ষণ থাকেই। কোন নেতা কত পুজোর উদ্বোধন করছেন, তার নিরিখে সেই নেতার জনপ্রিয়তাও যেন অনেকটা আন্দাজ করা যায়। বহু দিন থেকেই কোচবিহারের পুজোর উদ্বোধনে রবীন্দ্রনাথবাবুকে দেখা যায়। কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি থাকার পাশাপাশি ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তো রবিবাবুর পুজো উদ্বোধনের ক্ষেত্রে একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয়।
কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। কোচবিহার লোকসভা আসনে দলের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। লোকসভায় দলের পরাজয়ের পর রবিবাবুকে জেলা সভাপতির পদ খোয়াতে হয়েছে। তাঁর জায়গায় দলের জেলা সভাপতি হিসাবে বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে মনোনীত করা হয়েছে। দলের অন্দরে নানা বিষয় নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দলও বারবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। মাঝে বেশ কয়েকবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রবিবাবুকে বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই সবের কারণে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হলেও চাপের মধ্যে ছিলেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে এবারের দুর্গাপুজোর আগে বিভিন্ন মহলে একটা চর্চা ছিল যে রবিবাবু এবারে কত পুজোর উদ্বোধন করবেন! কিন্তু সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুজোর দিনগুলিতে রবিবাবুকে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক পুজোর উদ্বোধনও তিনি করেছেন। উদ্বোধনের মাধ্যমে একদিকে যেমন জনসংযোগ হয়েছে, তেমনি পুজো মিটতে না মিটতেই বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়কেও জনসংযোগের হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছেন দুঁদে এই রাজনীতিবিদ।
গত লোকসভা নির্বাচনের ফল হিসাব করলে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে ছিল। পরবর্তীতে দিদিকে বলো কর্মসূচী ও জনসংযোগ যাত্রার মাধ্যমে জেলার অনেক জায়গাতেই তৃণমূল কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এরই মাঝে পুজো এসে যাওয়ায় দাপটের সঙ্গে পুজোর উদ্বোধন ও পরে দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমেই দলের হারানো জমি ফিরে পেতে জনসংযোগ সারছেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।