কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
শিলিগুড়ি শহরে বসবাসকারী বহু মানুষের কাছেই জমির পাট্টা নেই। ওই বাসিন্দাদের কেউ রাজ্য সরকারের, আবার কেউ কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। এবার ওই বাসিন্দাদের একাংশ জমির পাট্টা সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আগস্ট মাসে শহরের সাতটি কলোনি বা বস্তি এলাকা থেকে জমির পাট্টার জন্য আবেদন পড়েছে ১০৯০টি। এমন আবেদনকারী বাসিন্দার সংখ্যা বাঘাযতীন কলোনিতে সবচেয়ে বেশি। সেখান থেকে আবেদন পড়েছে ৩০২টি। এছাড়া সমরনগর কলোনি থেকে ২৫০টি, রাজীবনগর থেকে ১৭৫টি, গুরুংবস্তি থেকে ১৭০টি, শিবনগর থেকে ১২০টি, চম্পাসারি থেকে ২৮টি, দাগাপুর পঞ্চনই থেকে ৪৫টি আবেদন জমা পড়েছে। বস্তিগুলির অধিকাংশই গড়ে উঠেছে রাজ্য সরকারের পতিত জমিতে। সেগুলি অবশ্য উদ্বাস্তু কলোনি নয়।
কয়েকদিন আগেই অসমে এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়িতে জমির পাট্টার জন্য এত আবেদন জমা পড়ায় বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, বিজেপি’র রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা-মন্ত্রীরা এই রাজ্যে এনআরসি লাগু করার ব্যাপারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এই রাজ্যে এনআরসি চালু হলে তখন নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জমির পাট্টা, দলিল ইত্যাদির প্রয়োজন হবে। সম্ভবত সেই আতঙ্কেই বস্তিবাসীরা আগেভাগে জমির পাট্টা জোগাড় করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার বলেন, এই রাজ্যে এনআরসি লাগু হতে দেব না। এনআরসি’র বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব। তবে, জমির পাট্টা মানুষের অধিকার। তা আদায়ের জন্য বাসিন্দারা আবেদন করেছেন।
এদিকে, শিলিগুড়ি শহরের বস্তিবাসীদের ওই আবেদনগুলি নিয়ে প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে মহকুমাশাসকের অফিস থেকে ওই আবেদনগুলি খতিয়ে দেখার জন্য মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসে পাঠানো হয়েছে। আবেদনকারীরা যে জমিতে বসবাস করছেন, সেই জমি খাস নাকি ব্যক্তি মালিকানাধীন তা খতিয়ে দেখবে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। তাছাড়া, আবেদনকারীর নামে অন্য কোনও জমি আছে কীনা, আগে কোনওদিন জমির পাট্টা পেয়েছেন কীনা, কতদিন ধরে তাঁরা সেখানে বসবাস করছেন প্রভৃতি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হবে। সোমবার মহকুমাশাসকের সঙ্গে এ ব্যাপারে পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা বৈঠকও করেন। অনেকেরই ধারণা, পুরভোটের আগে বস্তিবাসীদের মন পেতেই পাট্টা বিলির প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূল শাসিত সরকার। যদিও, পুরসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, জমির পাট্টার বিলির প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। মহকুমাশাসক বলেন, দপ্তরের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।