সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
অন্দরমহলজুড়ে একাধিক করিডর। এক করিডরের সঙ্গে মিশেছে অন্য করিডর। কোথাও শেষ কেউ জানে না... অন্তহীন! ঢুকলে বেরোনোর পথ মেলা দায়। একেবারে ভুলভুলাইয়া! করিডরে বিছানো অ্যাপেল গ্রিন মোটা কার্পেট। স্থানে স্থানে পেতে রাখা সোফা। ধপাস করে বসলেই যেন হারিয়ে যায় গোটা শরীরের ওজন! জিম সেরে এই সোফাতেই জিরোতেন প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল রসিদ দোস্তুম। একদা আফগান যুদ্ধের ধুরন্ধর সেনাপতি। তালিবানের চরম শত্রু!
দোস্তম এখন পলাতক। শত্রুর বিলাস-যাপনের সোফায় জিরোচ্ছে এক তালিব কমান্ডার। নাম কোয়ারি সালাউদ্দিন আয়ুবি। তার পাশে ‘শান্ত’ কালাশনিকভ। গত ১৫ আগস্ট কাবুল কব্জা করেই তালিবানের মূল লক্ষ্য ছিল দোস্তুমের ‘কাবুল ম্যানসন’ দখল করা। বাধাহীন অনায়াস দখল। বেগতিক বুঝে অনেক আগেই ভিলা ছেড়ে পালিয়েছিলেন দোস্তুম। তালিবানের ১৫০ জনের একটি দল ম্যানসন রক্ষার দায়িত্বে। নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কমান্ডার। তাদেরই একজন আয়ুবি। তালিবানের কাছে ‘ভোগ’ মানে বিলাসিতা নয়। সাফ কথা আয়ুবির। তিনি বলছিলেন, ‘ইসলামে বৈভব-বিলাস বলে কোনও শব্দ নেই। আমাদের বিলাসিতা স্বর্গে। যেটা আসলে মৃত্যুর পরের জীবন।’
আফগানিস্তানে তালিবান বিরোধী লড়াইয়ে অন্যতম মুখ ছিলেন দোস্তুম। চার দশকেরও বেশি সময় তিনি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০০১ সালে প্রায় ২০০০ তালিব জঙ্গিকে হত্যা করেছিলেন। তাঁর সেই হত্যার পন্থা দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। জঙ্গিদের পৃথক পৃথক দলে ভাগ করে বিভিন্ন কন্টেনারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তার কন্টেনারগুলি তালাবন্দি করে মধ্য মরুভূমিতে ফেলে আসার নির্দেশ দেন তিনি। সেখানে খাবার-দাবার না পেয়ে কড়া রোদে শুকিয়ে মারা পড়ে তালিব জঙ্গিরা। সেই থেকে দোস্তুম ছিল তালিবানের চোখে ‘নির্মম ঘাতক’। তাঁকে মেরে ফেলতে বেশ কয়েকবার ছক কষেছিল তালিবরা।
ক্ষমতায় আসার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট হন দোস্তুম। তার পর থেকেই দোস্তুমের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তাঁর বাহিনীও বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। সন্দেহ করা হয়, দুর্নীতির টাকাতেই কাবুল সংলগ্ন শেরপুরে ওই বিশাল অট্টালিকা বানিয়েছিলেন দোস্তুম। তাঁর সঙ্গে ঘানি সরকারের অনেক রথী-মহারথী চোখ ধাঁধানো বাড়ি বানিয়েছেন। স্থানীয় মানুষরা বলতেন—এসবই চোরেদের কোয়ার্টার।
তালিবানও ক্ষমতায় এসে বলছে, দোস্তুমের ভিলাটিও দুর্নীতির টাকায় গড়ে ওঠা। তাই তাঁর বাসস্থান ভোগ করা নিয়ে তাদের কোনও মোহ নেই। এমনটাই দাবি আয়ুবির। আর চরম শত্রুর শাস্তি? আয়ুবির কথায়, ‘প্রতিশোধ নিতে চাইলে মুহূর্তে আমাদের যোদ্ধারা ধুলোয় মিশিয়ে দিত দোস্তুমের এই বৈভবকে।’