সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল যে, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হতে পারে। এর বিনিময়ে বিএনপি সংসদে যোগ দেবে। কিন্তু এমন কিছু হওয়ার আগেই দলের সাংসদ জাহিদুর রহমান শপথ নিলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এই খবর চাউড় হওয়ার পর বিব্রত বিএনপি সাধারণ সম্পাদক (মহাসচিব) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বাড়ি থেকে বের হননি। রাতে তিনি বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত আছে সংসদে না যাওয়ার। আমরা সেই অবস্থানেই রয়েছি। যিনি সংসদে যোগ দিয়েছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এদিকে গতকাল শপথ নেওয়ার পর জাহিদুর রহমান সংসদের অধিবেশনে যোগ দেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মহাসচিব বাদে দলের বাকি সদস্যরাও শপথ নিতে পারেন। দেখি তাঁরা আসেন কি না। এলে একসঙ্গে সংসদে যোগ দেব।’
বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছ’জন সাংসদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন শীঘ্রই সংসদে যোগ দিতে পারেন। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তার ও বগুড়া-৪ আসনের মোশারফ হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। তাঁদের অনেকে সরকারের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে জানা গিয়েছে। সংসদে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’ আর উকিল আবদুস সাত্তার বলেন, তাঁর যোগদান ‘এখনও নিশ্চিত নয়’। তবে তিনি এও বলেন, যাঁরা বিপদের মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে সংসদে যাওয়ার চাপ রয়েছে। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা ‘স্থায়ী কমিটি’র সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তারা এই সংসদে যাবে না। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের রাতেই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি। এর আগে সংসদে না যাওয়ার ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেওয়ায় দলের দুই সাংসদ সুলতান মহম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খানকে তিরস্কার ও বহিষ্কার করে গণফোরাম। বিএনপিও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাংসদ জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে। শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সেই বৈঠক হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানে বলা রয়েছে, সংসদের প্রথম বৈঠকের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে সদস্যপদ বাতিল করে আসন শূন্য ঘোষণা করা হবে। একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক বসে গত ৩০ জানুয়ারি। এই হিসাবে ২৯ এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিতে হবে। তাই সম্প্রতি সমঝোতার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি এবং বিএনপির সংসদে যোগদানের বিষয়টি আলোচনায় আসে। সরকারি দলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রী বিএনপিকে সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন। যদিও বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার প্যারোল এবং এর বিনিময়ে সংসদে যোগদানের জল্পনা খারিজ করে দিয়েছেন।