নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সোনার দাম বাড়ছিলই। তাতে ইন্ধন দিল করোনা ভাইরাস। সোমবার বুলিয়ান বাজার বন্ধ হওয়ার সময় কলকাতায় পাকা সোনার ১০ গ্রামের দাম পৌঁছল ৪১ হাজার ৩২০ টাকায়। পাশাপাশি করোনা’র কারণে পড়ল শেয়ার বাজারও। ভাইরাস আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝোঁকার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চীনের ইউয়ান প্রদেশ থেকে ছড়াতে শুরু করে ওই মানবঘাতী ভাইরাস। তা চীনের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আতঙ্কও। গত কয়েক মাস ধরে এমনিতেই সোনার দাম চড়তে শুরু করেছিল। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম সাড়ে ৪১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরে অবশ্য দামে একটু ঢিলেভাব ছিল। কিন্তু ফের মাসের শেষের দিকে এসে চড়তে থাকে দর। ২৫ জানুয়ারি শনিবার কলকাতায় পাকা সোনার দর গিয়েছিল প্রতি ১০ গ্রাম ৪০ হাজার ৯৮৫ টাকা। তা সোমবার ফের ৪১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এদিকে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স ১.১ শতাংশ কমে যায় সোমবার। তা ৪৫৮.০৭ পয়েন্ট কমে। দিন শেষে সূচক পৌঁছয় ৪১ হাজার ১৫৫ তে। অন্যদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি ১২৯.২৫ পয়েন্ট কমে থমকে যায় ১২ হাজার ১৯৯তে। সাধারণ বাজেটের আগে শেয়ার বাজারের এই পতনে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা।
শেয়ার বাজারের পতন এবং সোনার দাম বৃদ্ধির সঙ্গে করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বেজুড়ে ওই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তার জেরে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়বে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা হাতে ধরে রাখা শেয়ার ছেড়ে, কোনও বিকল্প ও নির্ভরযোগ্য জায়গায় লগ্নি করতে চাইছেন। শেয়ার বাজারে তাই বিক্রির বহর বাড়ছে। তারই প্রভাব পড়ছে সূচকের পতনে। বিশ্বের বড় শেয়ার বাজারগুলিতে কমবেশি বাজার খারাপ গিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। এদিকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিনিয়োগকারীরা চিরকালই সোনায় ভরসা রাখেন। যেহেতু বিশ্বের বাজারে সোনায় লগ্নি বাড়ছে, তাই তার প্রভাব এসে পড়ছে ভারতীয় বুলিয়ান মার্কেটেও। এর সঙ্গে মার্কিন ডলারের নিরিখে টাকার দামের পতনও সোনার দাম বৃদ্ধিতে ইন্ধন দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক জিইয়ে থাকলে বাজার আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।