মুক্তির প্রথম দিনেই প্রায় ১১ কোটি টাকার ব্যবসা করল বরুণ ধাওয়ান ও শ্রদ্ধা কাপুরের ছবি ‘স্ট্রিট ডান্সার থ্রিডি’। আর এই অঙ্ক নতুন করে বলিউডের অনেক পরিচালক ও প্রযোজকের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মূলত সেই তালিকায় রয়েছেন অন্য ধারার ছবি করিয়েরা। ইদানীং বলিউডে বক্স অফিসে নতুন সমীকরণ দেখা যাচ্ছে। যাবতীয় অনুমানকে ভুল প্রমাণিত করছে একাধিক ছবি। কীরকম? বরুণ ধাওয়ানের একটা ফ্যান ফলোইং রয়েছে ঠিকই। তবে, ডান্স ফিল্ম-এর ভক্তদের সংখ্যাটাও নির্দিষ্ট। তাই ‘স্ট্রিট ডান্সার’ থেকে ট্রেড অ্যানালিস্টদের খুব একটা প্রত্যাশা ছিল না। কিন্তু প্রথম দিনের ব্যবসা এবং সাধারণতন্ত্র দিবসের ফলাফল মাথায় রেখে অনেকেই এখন মনে করছেন যে, এই ছবি লম্বা রেসের ঘোড়া হতে চলেছে। অথচ একই দিনে মুক্তি পেয়েছে কঙ্গনা রানাওয়াতের ছবি ‘পাঙ্গা’। টানটান চিত্রনাট্য এবং কঙ্গনার ভালো অভিনয় সত্ত্বেও প্রথম দিন এই ছবির ঝুলিতে জুটেছে মাত্র ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। অবশ্য বরুণের ছবি যেখানে দেশজুড়ে ৩ হাজার ৭০০ স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে, সেখানে কিন্তু পাঙ্গা মাত্র ১ হাজার ৪৫০টি স্ক্রিন পেয়েছে। রবিবার পর্যন্ত ‘স্ট্রিট ডান্সার’ এর ব্যবসা যেখানে ৪১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। সেখানে ‘পাঙ্গা’ দাঁড়িয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৯১ লক্ষতে। তাহলে সেই পরিচিত প্রশ্নটাই আবার নতুন করে জেগে উঠেছে। নিছক বিনোদনের ছবিই দর্শকদের পছন্দ নাকি বিষয়ভিত্তিক ছবি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ?
কয়েকটা সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়া যাক। একই ছবি লক্ষ করা যাচ্ছিল। মুখোমুখি টক্করে নেমেছিল অজয় দেবগণের ‘তানাজি’ এবং দীপিকা পাড়ুকোনের ‘ছপাক’। ফিল্ম বোদ্ধাদের মধ্যে একটা বড় অংশ মনে করেছিলেন যে, ছপাকের মোকাবিলায় তানাজি অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে। কারণ নামটা দীপিকা পাড়ুকোন। দু’বছর পর দীপের কামব্যাক যে রাজকীয় হবে সেটাই ছিল প্রত্যাশিত। আর সম্প্রতি ‘পানিপথ’ বক্স অফিসে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তানাজির উপর কেউই বাজি ধরতে চাননি। কিন্তু ছবি মুক্তির পর হিসেবটাই উল্টে গেল। মারাঠা আবেগকে সম্বল করে প্রথম দিনেই তানাজি ঘরে তোলে প্রায় ১৫ কোটি টাকা এবং অ্যাসিড আক্রমণের মতো প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তৈরি ছবি হয়েও ছপাক তোলে মাত্র ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা! ছবি মুক্তির পরেও দীপিকা লাগাতার প্রচার করেও ‘ছপাক’-এর ব্যবসা সর্বসাকুল্যে মাত্র ৩৪ কোটি টাকার। অন্যদিকে শনিবার ১৫ দিনের মাথায় ২০০ কোটি টাকার গণ্ডি পেরিয়ে রবিবার পর্যন্ত বক্সঅফিসে তানাজির আয় ২২৫ কাটি টাকা!
এখানেই শেষ নয়। গত ডিসেম্বরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুক্তি পাওয়া সলমন খানের ‘দাবাং ৩’ ও অক্ষয়কুমারের ‘গুড নিউজ’ এর কথাই ধরা যাক। স্বাভাবিকভাবেই দাবাং ফ্র্যাঞ্চাইজির ভিত ছিল শক্ত। সেই তুলনায় নতুন পরিচালকের ছবির উপরে শুরুতে অনেকেই ভরসা করতে পারেনেনি। কিন্তু প্রত্যাশিত ব্যবসা করতে না পেরে যেখানে ‘দাবাং’-এর দৌড় থেমেছে মাত্র ১৪৬ কোটি টাকায় সেখানে ‘গুড নিউজ’ এর ব্যবসা ছুঁয়েছে ২০৩ কোটি। বোঝাই যাচ্ছে বক্সঅফিস এখনও যে কোনও মুহূর্তে চমক হাজির করতে পারে। চমকে দিতে পারেন দর্শকও।